শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | ৩০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

তিনবারের সংসদ সদস্য সংগীতশিল্পী মমতাজের হারার কারণ

ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জে–২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীকে লড়েছিলেন ৩ বারের সংসদ সদস্য বাংলাদেশি লোকগানের তুমুল জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম। গানে গানে মানুষের মনে আনন্দের খোরাক জোগানো মমতাজ এবারের নির্বাচনে আর শেষ হাসি হাসতে পারলেন না।

যদিও ভোট গণনার আগে থেকেই বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন নিজের জয়ের ব্যাপারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরাশায়ী হন ট্রাক প্রতীকে লড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদের (টুলু) কাছে। মমতাজের হারের পর এলাকাবাসী তাঁকে নিয়ে মুখ খুলেছেন। হারার পেছনে বিভিন্ন যুক্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। মমতাজ বেগম নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করতেই ব্যস্ত ছিলেন। নিজের ইউনিয়ন ছাড়া অন্য কোথাও সেভাবে উন্নয়ন করেননি বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী।

সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুর রহমান বলেন, কালোটাকার ব্যাপক বেপরোয়া ব্যবহার নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এ ছাড়া কোনো কোনো ভোটকেন্দ্রে কারচুপিও এই ফলাফলকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ-২ আসনের নির্বাচনী এলাকার হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান এবং সিঙ্গাইর উপজেলা পরিষদের (সদ্য পদত্যাগ করা) চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খানের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন মমতাজ বেগম। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মুশফিকুর রহমানের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মমতাজ তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুর রহমানকে দাঁড় করান। নির্বাচনে মুশফিকুর রহমান উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মুশফিকুর রহমান এই নির্বাচনেও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। আর হরিরামপুরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদে সাইদুর রহমানের সঙ্গে মমতাজ বেগমও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেন। এরপর ওই নির্বাচন স্থগিত হলে উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের সঙ্গে মমতাজের তুমুল বিরোধ দেখা দেয়। সাইদুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচণ্ডভাবে প্রচার-প্রচারণায় নামেন। এটি ভোটের মাঠে মমতাজের কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হয়।

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বোঝা যাচ্ছিল, ভোটের হিসাব–নিকাশ একটু অন্য রকম হতে পারে। পাল্টে যেতেও পারে। মানিকগঞ্জ–২ আসনের মানুষদের মধ্যে এ নিয়ে কানাঘুষা চলছিল। তাঁরাও মমতাজের কাছ থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। মমতাজের সৎমা ও তিন বোনের মানিকগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টিও এলাকার মানুষের মনে প্রভাব ফেলে। অনেকে এমনও বলছেন, যিনি পরিবারে সমর্থন পান না, তিনি সবার সমর্থন কীভাবে পাবেন।

সিঙ্গাইর-হরিরামপুর ও মানিকগঞ্জ সদর নিয়েই মানিকগঞ্জ–২ নির্বাচনী আসন। সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন সাতেক আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মমতাজ বেগমের নিজ গ্রাম পূর্ব ভাকুম এলাকায় নির্বাচনী উঠান বৈঠকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহমেদের গলায় ফুলের মালা দিয়ে তাঁকে সমর্থন জানান মমতাজের তিন বোন। মমতাজের বোন শাহনাজ বেগম জয়মণ্টপ ইউপির সংরক্ষিত নারী সদস্য। তিনি বলেছিলেন, পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যায় মমতাজ বেগমকে তাঁরা পাশে পাননি। উল্টো জমিজমা ও সম্পত্তি বণ্টনে বৈষম্য করেছেন। এ কারণে তাঁরা ক্ষোভে বোনের প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের বাবা প্রয়াত মধু বয়াতির প্রথম স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের তিন সন্তান রেহেনা বেগম, জাহানারা বেগম ও শাহনাজ বেগম। সিঙ্গাইর উপজেলার জয়মণ্টপ ইউনিয়নের পূর্ব ভাকুম গ্রামের মধু বয়াতির দ্বিতীয় স্ত্রী উজালা বেগমের সন্তান মমতাজ বেগম। জমিসহ পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মমতাজের সঙ্গে তাঁর তিন সৎবোনের বিরোধ রয়েছে। এ কারণে নির্বাচনে মমতাজ বেগমের পাশে ছিলেন না তাঁরা।

গানের শিল্পী মমতাজ দেড় যুগ আগে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনোনীত হন। আর ২০১৪ সালে মানিকগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মমতাজ। এবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে নৌকা প্রতীকে লড়েছেন তিনি। মানিকগঞ্জ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে হেরে গেলেন তিনবারের সংসদ সদস্য মমতাজ। মমতাজ বেগমকে হারিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ। নির্বাচনে ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়েছেন জাহিদ আহমেদ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মমতাজ বেগম পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট। গতকাল রাত ১১টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক রেহানা আকতার এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

সারা দেশে উন্নয়নের জোয়ার এলেও সিঙ্গাইরে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া আসেনি বলে জানালেন স্থানীয় সিঙ্গাইরের বাইমাইল এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের কেউ কেউ বলেন, বাইমাইলে একটা সেতু এক বছরের বেশি সময় পড়ে আছে। লোকজনের হাঁটাচলা করতে কষ্ট হয়। ১৫ বছরে সিঙ্গাইরে কোনো উন্নয়ন করেননি। কেউ কেউ বললেন, তিনি পকেটি লোক নিয়ে সব ধরনের কাজকর্ম করেছেন।

এদিকে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের কেউ কেউ বলেছেন, উন্নয়নে কোনো কাজই করেননি মমতাজ। গরিব মানুষকে তিনি অবহেলা করেছেন। সিঙ্গাইরে যা কিছু হয়েছে, সবকিছু তিনি তাঁর আত্মীয়স্বজন দিয়েই করিয়েছেন। চলচ্চিত্রের খল চরিত্রের সমালোচিত অভিনেতা ডিপজলকেও মমতাজের নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা গেছে। হারার পর কেউ কেউ ডিপজলের প্রসঙ্গও এনেছেন। বলেছেন, ‘তিনি (মমতাজ) ডিপজলকে এনে নির্বাচনী বক্তব্য দিয়েছেন। ডিপজল বলেছে, সানডে–মানডে ক্লোজ কইরা দেবে। ক্লোজ কইরা দিতে গিয়ে তো নিজেই ক্লোজ হয়ে গেছেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রবীণ এক বাসিন্দা নিজেকে মমতাজের বাবা মধু বয়াতির বন্ধু পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘মমতাজ খুব ভালো গান গায়। বিখ্যাত মানুষ। কিন্তু এটা দিয়ে তো আমাদের ভাত জুটবে না। পাবলিকের জন্য বাস্তবমুখী কিছু একটা দরকার। ৫০ বেডের একটা হাসপাতাল হওয়ার কথা। তার কাছে ডিও লেটারের জন্য গিয়েছি, তিনি দেননি। তিনবার গিয়েছি। এটা তো আমাকে বঞ্চিত করা না, এলাকার মানুষকে বঞ্চিত করা। এ রকম অনেক প্রকল্প হাতছাড়া হয়েছে। কাজের জন্য গেলে জনগণকে ধুর ধুর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। তার বাবা মধু বয়াতি আমার বন্ধু ছিল। দোস্ত দোস্ত বলত। সেই দাবি নিয়েও গিয়েছি। কিন্তু সেই দাবির কোনো কিছুই মমতাজ রাখেনি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ–২ নির্বাচনী আসনে মোট ১১ জন চেয়ারম্যান; তাঁদের মধ্যে ৮ জন মমতাজের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। তাঁরা চেয়েছেন, মমতাজ ছাড়া অন্য কেউ আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য হোক।

চান্দহর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শওকত হোসেনের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘আমরা আটজন চেয়ারম্যান পাঁচ বছর ধরে তাঁর সঙ্গে নেই। তিনি আমাদের অবমূল্যায়ন করেন, অসম্মান করেন। উনি কিছু খারাপ লোক দ্বারা পরিবেষ্টিত আছেন। তাঁরাই সব উন্নয়নমূলক কাজ করেন। আমরা চেয়ারম্যান হয়েও জনগণের জন্য কোনো কাজ করতে পারি না। তিনি থানা কমিটি করেছেন, সেখান থেকে আমাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টাও করেছেন। পরে জেলা কমিটির মাধ্যমে নিজেদের জায়গা করেছি। আমি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি, এরপরও আমাকে বাদ দিয়ে দিয়েছে। দুর্নীতিবাজদের তিনি পুনর্বাসন করেছেন। আমাদের কথাবার্তাকে তোয়াক্কা করেননি। রাজনৈতিকভাবে আমাদের অনেককে দমিয়ে রাখতে চেয়েছেন। তাঁর ক্যাডার বাহিনী দিয়ে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করতে চেয়েছেন। পারিবারিকভাবে তিনিও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছেন। এসব তাঁর ব্যাপার। মোটকথা, তিনি গেল পাঁচ বছরে নিজের শেকড় ভুলে গেছেন।’

দলের প্রার্থীর পরাজয়ের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে না পারা এবং নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কারণে মমতাজ বেগমের হেরে যাওয়ার মূল কারণ। এ ছাড়া বিভিন্ন দুর্নামেও পড়েছিলেন তিনি।

তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পরাজয়ের বিষয়ে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহমেদ বলেন, ‘মমতাজ দীর্ঘদিন এই আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কণ্ঠশিল্পী। জনগণ হয়তো নতুন কিছু ভেবে আমাকে জয়ী করেছেন।’

সংবাদ সূত্র: প্রথম আলো

Header Ad

কৃতকর্মে নেই অনুশোচনা, ক্ষমতা হারানোকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ

শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা হারানোর তিন মাস পরও নিজেদের কৃতকর্মের কোনো অনুশোচনা করছে না আওয়ামী লীগ। বরং দলটি এখনো পুরো ঘটনাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। বিশেষ করে, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন দমনে বলপ্রয়োগ এবং হতাহতের ঘটনায় দলটি এখনো দুঃখ প্রকাশ করেনি।

দলটির শীর্ষ নেতারা বিশ্বাস করেন যে গণঅভ্যুত্থানের আড়ালে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। বর্তমানে সংগঠনকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। দলের কিছু নেতাকর্মী দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যদিও দলটির নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশই এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন।

গণঅভ্যুত্থানের তিন মাস পর নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা করতে প্রথম আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু, বিদেশে আত্মগোপনে থেকে দলীয় নেতাদের বাংলাদেশে কর্মসূচি ঘোষণা করার বিষয়টি নিয়ে দলের তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তারা অভিযোগ করছেন, এতে দেশে অবস্থানরত নেতাকর্মীরা আরও বিপদের মুখে পড়ছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে ক্ষমা না চাইলে মাঠে ফিরে আসা তাদের জন্য কঠিন হবে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংস পরিস্থিতির পর শেখ হাসিনা আন্দোলনটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। ক্ষমতা হারানোর পরও দলটির নেতারা একই কথা বলে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম দাবি করেন, “গণঅভ্যুত্থান ছিল পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এর পেছনে একটি বিদেশি শক্তির হাত ছিল।” তিনি আরও জানান, আওয়ামী লীগ মনে করে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করার পেছনে বিদেশি শক্তির ভূমিকা ছিল।

আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলি ও বলপ্রয়োগে প্রায় সাড়ে আটশ’রও বেশি মানুষ নিহত ও ২০ হাজারেরও বেশি আহত হন। এই বিষয়ে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি যে আন্দোলনে একটি তৃতীয় পক্ষের হাত ছিল।”

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানায়, প্রতি বছর ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। অনেকে ক্ষমতার অপব্যবহারে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে দলটির কার্যালয় ও নেতাকর্মীদের সম্পত্তিতে হামলার ঘটনা ঘটে। জীবন রক্ষার্থে আত্মগোপন করতে বাধ্য হয়েছেন অনেকেই। শেখ হাসিনা ও অন্যান্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়ের হয়েছে।

সাবেক নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “নেত্রীসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে।” সূত্র: বিবিসি বাংলা

Header Ad

হালাল অর্থনীতির বিকাশে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ইন্দোনেশিয়ার

ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়া পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মুসলিম জনসংখ্যার দেশ। ফলে হালাল অর্থনীতির উন্নয়নের মাধ্যমে দেশটির জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার সরকার এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ‘দ্য ২০২৩-২০২৯ হালাল ইন্ডাস্ট্রি রোডম্যাপ’ নামের এই পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে নানামুখী উদ্যোগও গ্রহণ করেছে দেশটি।

যেমন- হালাল পণ্যের সংজ্ঞা নির্ধারণ, হালাল সার্টিফিকেটের বাধ্যবাধকতা আরোপ এবং ‘দ্য ন্যাশনাল কমিটি ফর শরিয়া ফাইন্যান্স’ গঠন ইত্যাদি। হালাল পণ্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, তা এমন পণ্য, যার উৎপাদনে ইসলামী আইন অনুসরণ করা হয়। যার লক্ষ্য হবে দেশ ও বিদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠী।

ইন্দোনেশিয়ান সরকার হালাল শিল্পকে দুই ভাগে ভাগ করেছে : ক. মৌলিক হালাল শিল্প, খ. উন্নয়নশীল হালাল শিল্প।
মৌলিক হালাল শিল্পের অধীনে আছে খাদ্য ও ভোগ্য পণ্য, ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী, প্রসাধনী ও সেবা। আর উন্নয়নশীল শিল্পের অধীনে মুসলিম ফ্যাশন, মুসলিমবান্ধব পর্যটন ও সৃজনশীল ইসলামী অর্থনীতি। রোডম্যাপ বাস্তবায়নে ইন্দোনেশিয়া চারটি লক্ষ্য সামনে রেখেছে : ১. হালাল পণ্যের উৎপাদন ও প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করা, ২. নীতি ও প্রবিধান বাস্তবায়ন ও শক্তিশালী করা, ৩. অর্থায়ন বৃদ্ধি ও অবকাঠামোর উন্নয়ন, ৪. জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে হালাল ব্র্যান্ডিং সৃষ্টি করা।

ইন্দোনেশিয়ার অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুসারে ২০২৩ সালে হালাল শিল্পের টার্নওভার ৩৬ ট্রিলিয়ন আরপি। প্রতিবছর জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে (জিডিপি) হালাল শিল্পের অবদান ৫.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইন্দোনেশিয়ার সরকার একে ২.২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলালে উন্নীত করতে চায়। সূত্র : দ্য ইনভেস্টর ডটভিএন।

Header Ad

আজীবন ফ্রি চিকিৎসাসেবা পাবেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতদের আজীবন ফ্রি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ইউনিক আইডি কার্ড দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী দায়িত্ব পাওয়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান।

তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। এছাড়া আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে লিখিত রূপরেখা দেওয়া হবে। রূপরেখায় দেওয়া টাইমলাইন অনুযায়ী সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আহতদের সঙ্গে ছয় উপদেষ্টার বৈঠক শেষে এসব কথা জানান তিনি। অন্তত ৮০ জন আহতের সঙ্গে বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু হয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলা এ বৈঠক।

এ সময় ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম, মৎস ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম, আন্দোলনে শহীদ মুগ্ধ’র জমজ ভাই ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ অংশ নেন।

বৈঠক শেষে ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, আহত যোদ্ধাদের ইউনিক আইডি কার্ড থাকবে। সব সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তারা সারা জীবন বিনামূল্যে সেবা পাবেন। যেসব বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে সরকারি চুক্তি থাকবে সেখানেও বিনামূল্যে সেবা পাবেন তারা। ১৭ নভেম্বরের পর সাপোর্ট সেন্টার থাকবে। সেখান থেকে সব ধরনের সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আহতদের চিকিৎসায় সব সরকারি হাসপাতালে বেড ডেডিকেটেড থাকবে। ঢাকার সব হাসপাতালকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। এ বিষয়ে গাফিলতি কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কৃতকর্মে নেই অনুশোচনা, ক্ষমতা হারানোকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ
হালাল অর্থনীতির বিকাশে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ইন্দোনেশিয়ার
আজীবন ফ্রি চিকিৎসাসেবা পাবেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা
টাঙ্গাইলে যুবলীগ নেতাসহ ৩ জন গ্রেফতার
এক কর্মস্থলে ৩ বছর হলেই বদলি, পরিপত্র জারি
৩১ দফা নিয়ে নওগাঁয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের মতবিনিময়
বাংলাদেশের চারদিকে কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নেই: আসিফ নজরুল
দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের নামে ৩ স্টেডিয়ামের নামকরণ
শিল্পপতিকে হত্যার পর ৭ টুকরো করে লেকে ফেলে দেন পরকীয়া প্রেমিকা
ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর মৃত্যু
আগামীতে আওয়ামী লীগের মতো পরিবারতন্ত্র থাকবে না: তারেক রহমান
বঙ্গবন্ধু নাম পাল্টে নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয় লেখা সাইনবোর্ড টানালেন শিক্ষার্থীরা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা বাতিল
মাউশির ৮ আঞ্চলিক কার্যালয়ে নতুন উপ-পরিচালক
ঢাবিতে ছাত্রদলের ২৪২ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
ভারতে বসে শেখ হাসিনার মোবাইল ব্যবহার ও বিবৃতি নিয়ে ঢাকার অসন্তোষ
গাইবান্ধায় বড় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড
সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক
উদ্বোধন হলো বেনাপোলের কার্গো ইয়ার্ড টার্মিনাল: বাড়বে বাণিজ্য, কমবে যানজট