রাবিতে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হল থেকে শিক্ষার্থী বের করে দেওয়ার অভিযোগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আবাসিক হল থেকে এক শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (০৮ ডিসেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলে এ ঘটনা ঘটে। অবশ্য ঘটনার পর রাতেই প্রাধ্যক্ষ, আবাসিক শিক্ষক ও একজন সহকারী প্রক্টর গিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে তার কক্ষে তুলে দেন।
শহীদ শামসুজ্জোহা হলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহাদত ফাহিম দুই মাস আগে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৪২ নম্বর কক্ষে ওঠেন। প্রাধ্যক্ষ তাকে ওই কক্ষ বরাদ্দ দেন। তার আবাসিক কার্ড থাকা সত্বেও কয়েক দিন ধরে তার কক্ষ দখলের চেষ্টা করছিলেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। দু-তিন দিন আগে ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে তারা ওই কক্ষ ছাড়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু ফাহিম কক্ষ ছাড়েননি।
এ অবস্থায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী বুধবার (০৮ অক্টোবর) রাত নয়টার দিকে এসে ফাহিমের জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেন। তারপর ওই কক্ষে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে তুলে দেন। এ খবর পেয়ে রাতেই প্রাধ্যক্ষ একজন আবাসিক শিক্ষক ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যকে নিয়ে হলে যান এবং ওই শিক্ষার্থীকে তার কক্ষে তুলে দিয়ে ফিরে আসেন। শিক্ষকেরা ফিরে যাওয়ার পর রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগের কর্মীরা আবার ফাহিমের কক্ষে যায় এবং তাকে বলে, তাদের কর্মীর সঙ্গে যেন ওই কক্ষ ভাগাভাগি করে থাকেন ফাহিম।
শাহাদত ফাহিম অভিযোগ করে বলেনন, তিনি এ নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছেন।
এ বিষয়ে শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ একরামুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে তার কক্ষে তুলে দিয়ে এসেছেন। এ সময় তিনি কক্ষ দখলকারী কাউকে পাননি। পরে রাতে আবার কাউকে সেখানে তুলে দেওয়া হয়েছে কি-না, তা তার জানা নেই। তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক সিটগুলো প্রকাশ্যে নিয়ন্ত্রণ করে ছাত্রলীগের দুটি দল। তাদের একটি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী, যার প্রধান চিরন্তন চন্দ্র। অপর পক্ষে আছেন মোমিন ইসলাম। তিনি সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদের অনুসারী।
এ বিষয়ে চিরন্তন চন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘হলে ঝামেলা হয়েছে খবর পেয়ে গিয়েছিলাম। পরে প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করেছি। এখন কোনো সমস্যা নেই।’
মোমিন ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীকে হল থেকে নামার নির্দেশ দিইনি। এমনকি তার জিনিসপত্রও বাইরে বের করার কোনো নির্দেশ দিইনি। প্রথম বর্ষের ওই শিক্ষার্থীর থাকার জায়গা নেই বলে, এক রাতের জন্য বেড শেয়ার করতে বলা হয়েছিল। সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি হবে। এ কারণে হলে একাধিক নেতা প্রাধান্য বিস্তার করছে। এটি তাদের কারও কাজ হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়াকে ফোনে পাওয়া যায়নি।সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ জানিয়েছেন, বিষয়টি রাতেই সমাধান হয়ে যাওয়ার কথা। কারণ, তিনি প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন নেতা-কর্মীদের।
/এএন