‘বৃহত্তর স্বার্থে ভারতে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত, ইমোশনাল কথা বলে লাভ নেই’
বৃহত্তর স্বার্থে ভারতে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ
বৃহত্তর স্বার্থে ভারতে ইলিশ মাছ রফতানি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, যে পরিমাণ ইলিশ রফতানি হচ্ছে তা চাঁদপুর ঘাটের একদিনের ইলিশও না। ইমোশনাল কথা বলে লাভ নেই।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার গত ১১ অগাস্ট সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপর ইলিশ বিদেশে রফতানি করা হবে। দেশের মানুষ যাতে ইলিশ পায় এবং দাম কমে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। দেশের মানুষ ইলিশ পাবে না, আর রফতানি হবে সেটা হতে পারে না।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এমন বক্তব্যের পরও আজ শনিবার আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের রফতানিকারকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে তিন হাজার টন ইলিশ রফতানি অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ প্রসঙ্গে আজ সচিবালয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের বিশেষ অনুরোধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রফতানির অনুমতি দিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বাধীনভাবে এটা (রফতানির অনুমোদন) দিয়েছে। এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়, এতে আমি জোর করতে পারি না।
এমন প্রেক্ষাপটে ইলিশ রফতানির বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ৫ লাখ ৩০ হাজার টন ইলিশ উৎপদান হয়, এর মধ্যে ৩ হাজার টন রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা উৎপাদনের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশও নয়। এ পরিমাণ চাঁদপুর ঘাটের একদিনের থেকেও কম। ভারত পার্শ্ববর্তী দেশ, তাদের ফ্যামিলি কান্ট্রি হিসেবে আমরা বলি। এ বিষয়ে যারা ইমোশনালি কথা বার্তা বলে বলুক। তবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমি বিভিন্ন মহল থেকে বাহবা পাচ্ছি। অনেকেই এটাকে ভালো সিদ্ধান্ত বলে জানাচ্ছে।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ওদের (ভারতের) পেঁয়াজ আসছে না সস্তা দরে। তাহলে মানা করে দেন তাদের পেঁয়াজ খাবেন না। এগুলো ইমোশনাল কথাবার্তা, এগুলো বলে লাভ নেই। ওরা পেঁয়াজের শুল্ক কমিয়ে দিয়েছে। পেঁয়াজ তো আসতেছে।
তিনি আরও বলেন, ইলিশ রফতানি করে বাণিজ্য দিক দিয়েও সুবিধা রয়েছে। কিছু বৈদেশিক মুদ্রা আসবে। এমনিতেই চোরা–চালান হয়ে চলে যাচ্ছে। সব সিদ্ধান্ত সবার সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে এমনটি নয়। সরকারে একজন হয়তো এর বিরোধী করলেও আরও উচ্চ পর্যায় বলেছে রফতানি করা যেতে পারে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে অনেক বিবেচনা করেই ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। হ্যাঁ কিছু লোকের অসুবিধা হতে পারে। তবে বিরাট কোনো ক্ষতির কারণ হবে না। কারণ দীর্ঘ মেয়াদে এটি একটি পজিটিভ ইস্যু হবে। আমরা প্রতিবেশী হিসেবে থাকতে চাই।