শেষ হলো ‘বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা বিজ্ঞান উৎসব’
মাছের আঁশ থেকে তৈরি হবে জৈবপ্লাস্টিক। পরিবেশবান্ধব এ প্লাস্টিক ভেঙে যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। হাতে-কলমে পুরো প্রজেক্টসহ তারা নিয়ে এসেছে নিজেদের বানানো প্লাস্টিকও। ক্ষুদে মাথায় এমন উদ্ভাবনী চিন্তা প্রদর্শন করে রাজধানীর হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী অঙ্কিতা হালদার ও সুমাইয়া আহমেদ হয়েছেন ‘বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা বিজ্ঞান উৎসব’ এর এবারের আসরের সেরাদের সেরা।
শুধু তারা নন, এরকম চমকপ্রদ নতুন নতুন বিজ্ঞান ও গবেষণাধর্মী বিজ্ঞান প্রকল্প উপস্থাপন করে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ও রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী ঔড়ব আজাদ ও ফারহান মুশফিক এবং রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিন শিক্ষার্থী নাফিস, সাজিদ ও ফাতিন।
৭ বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক পর্ব শেষে সম্প্রতি রাজধানীর শিশু একাডেমিতে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ এবং বিজ্ঞানভিত্তিক মাসিক পত্রিকা বিজ্ঞানচিন্তার যৌথ আয়োজনে দিনজুড়ে নানা অনুষ্ঠান এবং বিজয়ীদের পুরস্কৃত করার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিজ্ঞান উৎসবের দ্বিতীয় আসর।
বিজ্ঞান প্রকল্প প্রদর্শনী ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দলগুলোর হাতে পুরস্কার হিসেবে বই, ট্রফি, মেডেল, সনদ ও বিকাশের পক্ষ থেকে ল্যাপটপ তুলে দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিকাশের চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল শেখ মো. মনিরুল ইসলাম (অব.), বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক ও ছড়াকার আনজীর লিটন, বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, অনুজীব বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা, উন্মাদ ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবীবসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এমন উদ্যোগের জন্য বিকাশ ও বিজ্ঞানচিন্তাকে ধন্যবাদ দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আজকের এই তারুণ্যে ভরপুর কিশোররাই বড় হয়ে জ্ঞান বিজ্ঞানের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এবারের উৎসবের কুইজ প্রতিযোগিতায় নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ে সেরাদের সেরা হয়েছে খুলনা জিলা স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্র দেবনাথ। মাধ্যমিক পর্যায়ে সেরাদের সেরা হয়েছে একই স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. নাজিব মাহমুদ। আর বিশেষ কুইজে প্রথম হয়েছে রাজশাহীর কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইফতিখার আহমেদ সাজিদ।
সকালে শিশু একাডেমির মঞ্চে এসে উদ্বোধনের ঘোষণা দেয় রোবট ‘নাও’। উদ্বোধনীর পর শুরু হয় কুইজ প্রতিযোগিতা ও প্রজেক্ট প্রদর্শনী পর্ব।
বিজ্ঞান প্রজেক্ট প্রদর্শনীদের প্রায় অর্ধশত প্রজেক্ট নিয়ে হাজির হয় খুদে বিজ্ঞানীরা। ‘হিউম্যান হেল্পিং প্রজেক্ট’, ‘প্রজেক্ট ট্রেন দুর্ঘটনা প্রতিরোধ’, ‘স্মার্ট সিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’, ‘মিনি এয়ার কুলার’, ‘গ্যাস লিকেজ ও ফায়ার সেফটি’, ‘স্মার্ট কিচেন’ ইত্যাদি চমৎকার সব প্রজেক্ট এসেছে প্রতিযোগিতায়।
প্রজেক্ট প্রদর্শনীর পাশাপাশি বিজ্ঞান কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় আঞ্চলিক পর্বগুলো থেকে বাছাইকৃত ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া প্রায় সাড়ে তিনশ শিক্ষার্থী অংশ নেয় সবার জন্য উন্মুক্ত বিশেষ কুইজ, রুবিকস কিউব এবং সুডোকো প্রতিযোগিতায়।
গত ৩১ অক্টোবর ঢাকায় বিজ্ঞান উৎসবের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে সারা দেশের সব বিভাগীয় শহরে আঞ্চলিক পর্বের অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় পর্ব। বিজ্ঞান উৎসবের সবগুলো আয়োজন মিলিয়ে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের ২৫০টির বেশি প্রকল্প প্রদর্শিত হয়।
এবারের জমকালো সমাপনী পর্বে শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শন ও কুইজের পাশাপাশি ছিল রোবট শো, প্রশ্নোত্তর পর্ব, ম্যাজিক শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ মনোমুগ্ধকর আয়োজন।
এসজি