লাইসেন্স ফিরে পেতে চায় সিটিসেল, বিটিআরসিকে চিঠি
ছবি: সংগৃহীত
ব্যবসায় ফিরতে চায় দেশের প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল। কোম্পানিটি তাদের বাতিল হওয়া লাইসেন্স ফেরত চেয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) চিঠি পাঠিয়ে অপারেটিং ও রেডিও ইকুইপমেন্ট লাইসেন্স দুটি ফেরত চেয়েছে সিটিসেলের মালিক প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম।
কোম্পানিটি দাবি করেছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে প্রথমে তাদের তরঙ্গ স্থগিত করা হয়। এজন্য সাবেক টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমকে দায়ী করেছেন তারা। তৎকালীন সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে বলেও অভিযোগ কোম্পানিটির।
পরবর্তীকালে আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় লাইসেন্স বাতিল করা হয়। যদিও তখন বিটিআরসি জানিয়েছিল, ২১৮ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ না করায় সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়।
চিঠিতে প্যাসিফিক টেলিকম জানায়, তরঙ্গ বন্ধ করায় গত আট বছরে ব্যাংক ঋণ, কর্মচারীদের বকেয়া, অবকাঠামোর ক্ষতি–সব মিলিয়ে তাদের প্রায় চার হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। আট বছর কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় সম্ভব হয়নি। এতে সরকার প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা কর ও ফি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
প্যাসিফিক টেলিকম এখন লাইসেন্স বাতিলের জন্য জারি করা পত্রের প্রত্যাহার চায়। পাশাপাশি প্রযুক্তি নিরপেক্ষ লাইসেন্স চায়, যাতে ৫জিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তারা এজন্য অর্থ পরিশোধ করবে, তবে তা রাজস্ব আদায়ের পর।
এ বিষয়ে প্যাসিফিক টেলিকমের হেড অব রেগুলেটরি ও করপোরেট অ্যাফেয়ার্স নিশাত আলি খান বলেন, তাদের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, তাই বিটিআরসি লাইসেন্স বাতিল করতে পারে না। তৎকালীন সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে দাবি করে তিনি এর প্রতিকার চান।
দেশে সিডিএমএ প্রযুক্তির একমাত্র মোবাইল অপারেটর ছিল সিটিসেল। ২০১৭ সালের ১১ জুন বিটিআরসি সিটিসেলের তরঙ্গ বন্ধ করে দেয়। তার আগে গ্রাহক কমতে থাকায় ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর থেকে সিটিসেলের সংযোগ সেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সিটিসেলের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া সব তরঙ্গ ও একই বছরের ৭ আগস্ট রেডিও কমিউনিকেশন ইকুইপমেন্ট লাইসেন্স বাতিল করা হয়।
গত বছরে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে (নির্ধারিত সময়) সরকারের বকেয়া পরিশোধ না করায় সিটিসেলের ২জি সেবার লাইসেন্স বাতিলের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেওয়া সিটিসেলের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বিটিআরসি সিটিসেলের ২জি সেলুলার লাইসেন্স বাতিলের জন্য সিদ্ধান্ত নেয় বিটিআরসি৷
১৯৮৯ সালে সরকারের নির্দেশে বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ড (বিটিটিবি) বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেডের অনুকূলে মোবাইল অপারেটরের লাইসেন্স ইস্যু করে। পরবর্তী সময়ে এর নাম রাখা হয় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড, যা সিটিসেল নামে পরিচিতি পায়।