মায়ের স্মার্টফোন আসক্তি থাকলে সন্তান কথা কম বলে- গবেষণা
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
তথ্য-প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান বিকাশের যুগে স্মার্টফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী। ছোট্ট এই প্রযুক্তিপণ্যটি ছাড়া নিজেকে যেন বড্ড একা আর বেমানান মনে হয়। মোবাইল ফোন গোটা বিশ্বকে এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়, জীবনযাত্রা করেছে সহজ।
তবে এই স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার যে ক্ষতি ডেকে আনে সেটিও বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। তবে এবার নতুন এক গবেষণায় এমন এক তথ্য উঠে এসেছে, যা দেখে মায়ের একটু সতর্ক হতেই হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মা স্মার্টফোনে আসক্ত, তাঁদের শিশুসন্তানের ভাষা ঠিকমতো বিকশিত হয় না। ফলে তারা কথা কম বলে। আর তাই নতুন মা হওয়া নারীদের ফোন ব্যবহারে লাগাম টানার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা। নতুন এ গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ছোট শিশুসন্তান থাকা অনেক নারী প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ফোন ব্যবহার করেন। কিছুক্ষণ পরপর ফোন ব্যবহারের কারণে সন্তানদের সঙ্গে ২৬ শতাংশ কথা কম বলেন তাঁরা। এর ফলে সন্তানের ভাষার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। স্মার্টফোন আসক্ত মা এবং তাদের শিশুসন্তানদের আচরণ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
গবেষণায় অংশ নেওয়া শিশুদের বয়স ছিল গড়ে চার মাস। গবেষণার জন্য ১৬ জন মা এবং তাদের শিশুসন্তানের এক সপ্তাহের আচরণের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেসব তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, স্মার্টফোন আসক্ত মা সন্তানের সঙ্গে ১৬ শতাংশ কম কথা বলেন। আর যেসব মা কয়েক মিনিট পরপর ফোন ব্যবহার করেন, তাঁরা ২৬ শতাংশ কম কথা বলেন সন্তানের সঙ্গে।
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী কেয়া দে বারবারো বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, ফোন ব্যবহারের কারণে মায়ের কথাবার্তায় প্রভাব তৈরি হয়। যাঁরা দীর্ঘসময় ফোন ব্যবহার করেন, তাঁদের মধ্যে এ প্রভাব সবচেয়ে বেশি। মায়েরা যখন ১ থেকে ৩ মিনিটের জন্য ফোন ব্যবহার করেন, তখন তাঁরা সন্তানের সঙ্গে কম কথা বলেন। সকাল ৯ থেকে ১০টা, দুপুর ১২ থেকে বেলা ১টা এবং বিকেল ৩ থেকে ৪টার সময় ফোন ব্যবহার সন্তানদের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে।
শিশুর ভাষা ও যোগাযোগের দক্ষতা উন্নয়নে মায়ের ভূমিকা তুলে ধরে বিজ্ঞানী কেয়া দে বারবারো জানান, মা-বাবার ফোনের আসক্তি শিশুর ওপর দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব ফেলছে। আর তাই নতুন অভিভাবকদের প্রতি আমাদের পরামর্শ হলো যতটা সম্ভব শিশুর সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে। ফোনের প্রভাব ও সন্তানের ভাষাশিক্ষার প্রভাব সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে। সূত্র: ডেইলি মেইল