কিশোরগঞ্জ শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে এ পর্যন্ত জমা হয়েছে মোট ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা। শনিবার (১২ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয় মোট ১১ বার। এই ১১ বারে দানবাক্স থেকেই পাওয়া যায় ৫৬ কোটি ৩৮ লাখ ৫২ হাজার ৬৬০ টাকা। টাকার পাশাপাশি হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ।
২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া যায়। এর আগে একই বছরের ১৭ আগস্ট পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ৭ কোটি ২২লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। একই বছরের ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। ২০২৪ সালে মোট তিনবারে ২৩ কোটি ২২ লাখ ১৪ হাজার ৮৮৭ টাকা পাওয়া যায়। টাকার পাশাপাশি হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ।
এর আগে ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা। একই বছরের ১৯ আগস্ট মসজিদের দানবাক্স খুলে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা পাওয়া যায়। তার আগে ৬ মে পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা পাওয়া যায়। একই বছরের ৭ জানুয়ারি পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। ২০২৩ সালে চারবার খোলা হয়েছিল কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স। চারবারে মোট ২১ কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৮১ টাকা পাওয়া যায়। টাকার পাশাপাশি হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ।
এছাড়া ২০২২ সালে তিনবার খোলা হয়েছিল কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স। ২০২২ সালের ১২ মার্চ দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা। পরের বার ২ জুলাই পাগলা দানবাক্স খুলে ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৮ হাজার ৪১৫ টাকা পাওয়া যায়। একই বছর শেষবার ১ অক্টোবর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা। তিনবারে মোট ১১ কোটি ২৮ লাখ ৫২ হাজার ৫৯২ টাকা পাওয়া যায়। টাকার পাশাপাশি হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ।
মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়।
মসজিদটিকে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে ৬০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
এদিকে ৪ মাস ১২ দিন পর শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৭টায় পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। এখন চলছে টাকা গণনার কাজ। প্রায় চার শতাধিক মানুষের একটি দল এসব বস্তাভর্তি টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন।