সব ক্যাম্পাসে কুয়েটে ছাত্রদলের হামলার ভিডিও দেখাবে বৈষম্যবিরোধীরা

ছবি: সংগৃহীত
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্রদলের হামলার ভিডিও বুধবার দেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে প্রদর্শন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এছাড়া একইদিন বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে জুলাই গণহত্যার ভিডিও প্রদর্শন করা হবে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এই ভিডিওচিত্র প্রদর্শনী করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টায় কুয়েটে ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিকে তাজা রাখতে চাই। আমরা চাই না আপামর ছাত্র-জনতা এই অভ্যুত্থানকে ভুলে যাক। তারা কোনো নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটাক। তাই আমরা আগামীকাল (বুধবার) সারাদেশে জুলাই অভ্যুত্থানের ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী করা হবে। একইসঙ্গে কুয়েটে হামলার যত ভিডিও আছে সবগুলো প্রদর্শন করা হবে।
এর আগে দুপুরে কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। এই ঘটনায় আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বর্তমানে পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব।
এর আগে, কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৩০ কয়েকজন আহত হন। এই পরিস্থিতির পর ক্যাম্পাসে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
ছাত্রদলের অভিযোগ, লিফলেট বিতরণকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রশিবির তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। তবে ছাত্রশিবিরের দাবি, কুয়েটের সংঘর্ষে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। অপরদিকে বৈষমীবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানান, ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালে তারা সেখানে উপস্থিত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত কয়েকদিন ধরে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সোশ্যালমিডিয়া গ্রুপে ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া চলছিল। সোমবার ছাত্রদল ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করে। মঙ্গলবার সকালে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে একদল শিক্ষার্থী মিছিল বের করে। পরে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করলে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়। দুপুর ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে। তারা ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটাই, রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করে। পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে পৌঁছালে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা তাদের ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেয়। এ সময় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে তা কুয়েট ক্যাম্পাসের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।
পরে দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে কুয়েট পকেট গেটের বাইরে বিএনপি সমর্থিত বহিরাগতরা একজন ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ক্যাম্পাসের ভেতর ফেলে দেয়। এরপর থেকে সাধারণ ছাত্রদের ভেতর চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। এতে প্রায় ৩০ জন আহত হন। সংঘর্ষে আহতদের কুয়েটের অ্যাম্বুলেন্সে করে একের পর এক হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। হামলার ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
