টাঙ্গাইলে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৯
ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের অতর্কিত হামলায় সাধারন সম্পাদক গ্রুপের অন্তত ৯ জন ছাত্র আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মান্নান হলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দিনভর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জুড়ে চড়ম উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
হামলায় আহতরা হচ্ছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনবি বিভাগের সোহানুর রহমান সোহান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের রকি, আইসিটি বিভাগের জয় ধর, ক্যামিষ্ট্রি বিভাগের সজিব শেখ, অর্থনীতি বিভাগের সৌরভ, মিনার, নাঈম রাজ, আইসিটি বিভাগের সৌরভ, টেক্সটাইল বিভাগের তামীম। আহতদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশংকাজনক।
এরমধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শে তাদের মধ্যে সোহানকে জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল (পঙ্গু হাসপাতাল) ও রকিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতের খাবার শেষে আহতরা আব্দুল মান্নান হলের ছাদে বসে গল্প করছিলেন। রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীলের অনুসারী সাফি মোরসালিন, আবিদ, রকি, ছাত্রদল সমর্থিত ইদ্রিস, রবিউল, অপু, বিশ্বজিৎ ও রুবেলের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার এক পর্যায়ে তারা বিএনবি বিভাগের সোহানুর রহমান সোহানকে হলের তিন তলার ছাদ থেকে নিচে ফেলা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় পরে আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত সোহানকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিলিৎসকরা জানায়, তার কোমর ভেঙে যায় ও দুই পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। পরে তাকে ঢাকার জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, বুধবার দিনভর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। উভয় পক্ষই ছোট ছোট দলবেঁধে নিজ নিজ অবস্থানে অনর ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীর জানান, অতর্কিত হামলার ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুন্দর রাখতে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি।
অপরদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীল ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানান।
টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনার পর পরই আব্দুল মান্নান হলের বিভিন্ন কক্ষে অভিযান চালিয়ে ২০টি লোহার রড ও দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় কেউ কোন মামলা দায়ের করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের জননেতা আব্দুল মান্নান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ডক্টর আশরাফ হোসাইন তালুকদার জানান, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।