শিক্ষার্থীকে মারধর: ঢাবির প্রলয় গ্যাংয়ের ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
শিক্ষার্থীকে মারধর: ঢাবির প্রলয় গ্যাংয়ের ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত প্রলয় গ্যাং-এর ৪ সদস্যকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তা ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা পরিষদের সভায় ওই ৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। সাময়িকভাবে বহিষ্কৃতরা হলে তবারক মিয়া, মুরসালিন ফাইয়াজ, ফয়সাল আহমেদ সাকিব এবং জুবায়ের ইবনে হুমায়ুন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং কথিত প্রলয় গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত। এর আগে ৯ নভেম্বর শাহবাগ থানায় করা এক মামলায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনসালট্যান্ট ডা. রেহেনা আক্তার অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে বহিষ্কৃতরাসহ আরও আট দশজন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুই ঘণ্টা যাবত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন।
মামলার বিবরণীতে ডা. রেহেনা উল্লেখ করেন, ৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম পাশে বসে মীর আলভী আরসলান বান্ধবীর সঙ্গে গল্প করছিলেন। এ সময় তবারক, মুরসালিন, সাকিব, জুবায়ের ও জোবায়ের ইবনে হুমায়ূন সহ বেশ কয়েকজনের একটি দল তাদের হেনস্তা করে ও ভয়ভীতি দেখায়। আলভী প্রতিবাদ করলে তাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নির্জন স্থানে নিয়ে নির্যাতন করে। রড, লাঠি ও কাঠ দিয়ে তাকে পেটানো হয়।
বিবরণী থেকে আরও জানা যায়, তবারক আলভীর পকেটে থাকা ২ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে সরে যান। মুরসালিন আলভীর কাছে থাকা ২৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি স্মার্টফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন। সবশেষে আলভীর ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলে অভিযুক্তরা। গুরুতর অবস্থায় আলভীকে ধানমণ্ডির পপুলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, বর্তমানে তিনি নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে প্রধান আসামি তবারক মিয়াকে পুলিশ রোববার দুপুরে গ্রেপ্তার করে সোমবার কোর্টে পাঠিয়েছেন।
এছাড়া, কথিত এই ‘প্রলয় গ্যাং’ নামের গ্রুপটির সদস্যদের চিহ্নিত করতে গত মার্চ মাসে একটি আন্তঃহল তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৪ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়েছে।
সভায়, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে আরও ৪৯জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়।