দুটি বই প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের ভিসি
লেখা ও ছবি : জুনায়েদ খান, প্রতিনিধি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী উপাচার্য ও বাংলার কৃতি অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে দুটি বই লিখেছেন। নাম ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ এবং ‘৭ই মার্চের ভাষণ: একটি জাতির কথামালা’।
২৬ মে, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বই দুটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
আয়োজন করা হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে। আর্ট গ্যালারিতে। আয়োজন করেছে চট্টগ্রামের ছোট কাগজ তৃতীয় চোখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ম্যাডামের বইগুলোর মোড়ক উন্মোচনের অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন বাংলা বিভাগের নামকরা অধ্যাপক এবং কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন, বিখ্যাত লেখক অধ্যাপক ড. মহীবুল আজিজ।
প্রধান আলোচক ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. মোহীত উল আলম। আমন্ত্রিত আরেক আলোচক অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক, বিখ্যাত কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আলোচক ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব এবং চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সাবেক সচিব ও প্রধান নির্বাহী অভীক ওসমান। অতিথি বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে। উপস্থাপনা করেছেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট আবৃত্তিকার ও চর্যাপদ সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পাওয়া গুণী ব্যক্তিত্ব ড. সুমন হায়াত। স্বাগত বক্তব্য দিয়েছেন ছোট কাগজ তৃতীয় চোখের সম্পাদক ও প্রকাশক আলী প্রয়াস।
বিশিষ্ট সাহিত্যিক, অধ্যাপক ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মোহীত উল আলম অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের বইয়ের বিষয় নিয়ে বলেছেন, “আমাদের এই নেতা প্রকৃত অর্থেই হিমালয়সম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। যখন এই অংশের রাজনীতির হাল ধরেছিলেন, তখন প্রতিযোগিতা করার মত অনেকেই ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাদের নিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠলেন। তাকে নিয়ে তাই সাড়ে ৪ হাজার নয়, সাড়ে ৪ লাখ বই লেখা উচিত। এই মানুষটিকে নিয়েই ‘মুজিব শতবর্ষে’ অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বই দুটি লিখেছেন। আমরা জানি, বঙ্গবন্ধুকে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে তার ওপর ওপর আরো অনেক বই প্রকাশের বিকল্প নেই।”
‘৭ই মার্চের ভাষণ: একটি জাতির কথামালা’ নিয়ে নুরুল হুদা বলেছেন, ‘আমাদের বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত ও উপস্থিত এক অনন্য বক্তৃতা। ঐতিহাসিক মযাদা লাভ করা এই ভাষণটি অলিখিত। তার মনের কথাই আগামী দিনের দেশের মানুষকে বলেছেন শেখ মুজিবুর রহমান। মোটে ১৮ মিনিটের। অথচ অনেক বছরের সংগ্রামের ফসল। স্বাধীন বাংলাদেশটি নির্মাণে অনন্য ভূমিকা রেখেছে তার রেসকোর্সের ময়দানে সেদিনের সেই উপস্থিতি। সবচেয়ে সাহসী, সর্বাপেক্ষা নিখুঁত বাঙালি রাজনীতিবিদের কথা যদি আমরা বলতে যাই, তাহলে বঙ্গবন্ধু আছেন। মানুষটি তাই মহাকালের সন্তান। তিনি হাজার বছরের নন, চিরকালের নেতা। পৃথিবীর বুকে অম্লান হয়ে হয়ে থাকবেন।’
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক আরো বলেছেন, ‘এই বই দুটি যাকে নিয়ে লেখা, তিনি আমাদের বাংলাদেশের ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালির আকাঙ্খিত জাতিপুত্র। নিজেই ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন নিরন্তর সংগ্রামে বাঙালিকে স্বাধীন দেশ উপহার দিয়ে।’
বিখ্যাত এই কবি আরো বলেছেন, ‘ইতিহাস মানে কিন্তু তথ্যের বিশ্লেষণ। স্মৃতি ও চোখে দেখা ঘটনাগুলো যদি বিশ্লেষণ করা যায়, তাহলেও ইতিহাস তৈরি হয়।’
নিজের বই দুটি নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেছেন, ‘আমি কিশোরী থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুকে দেখে অবাক হয়েছি এই কারণে-একজন মানুষ কীভাবে এত সুন্দরভাবে কথা বলেন? তাকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না। আমার মনে হয়েছে তার জন্মশতবার্ষিকীতে আমারও কিছু লেখা উচিত। তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা থেকেই এই বই দুটি লিখেছি। এভাবে বহুমুখী চর্চার মধ্যে বঙ্গবন্ধু চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন।’
ওএস।