আগামীকাল ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’
লেখা ও ছবি : চৌধুরী মাসাবি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
কাল বাংলাদেশের অন্যতম সরকারী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন। লকডাউন, গ্রীষ্মকালের ছুটি, রোজা এই কারণগুলো গত কয়েকটি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে ও প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন সম্ভব হয়নি। কোনোমতে পালন করা হয়েছে।
তবে এবার ভালোভাবে পালনের উদ্যোগ না নিয়ে সাদামাটা আকারে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে তাদের ছাত্র, ছাত্রীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকাপ্রকাশ ২৪.কমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
চৌধুরী মাসাবি আরো লিখেছেন, ‘২৫ মে বুধবার আমাদের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান স্যারের স্বাক্ষর করা একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
‘তাতে প্রশাসনিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পতাকা উত্তোলন, পায়রা ওড়ানো, শোভাযাত্রা, কেক কাটা এবং সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে পালন করবে।’
এভাবে জন্মদিন পালনের সিদ্ধান্তে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র, ছাত্রী, অধ্যাপক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে হতাশার জন্ম হয়েছে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা প্রকাশ ২৪.কমের প্রতিনিধিকে এই বিষয়ে বাংলার ছাত্র রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে তার ছাত্র, ছাত্রীদের মধ্যে আগ্রহ ও গব থাকে। তবে আমাদের চাওয়া-পাওয়ার কোনো তোয়াক্কা না করে উপাচার্য স্যারসহ শিক্ষকরা বিশেষ দিনটিকে দায়সারাভাবে আয়োজন ও পালনের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। এ তাদের জন্যও লজ্জ্বার। আমাদের জন্য হতাশার।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রশিল্পীদের সংগঠন আছে ‘বৃত্ত’। তাদের উপদেষ্টা ও অন্যতম ছাত্র মুনিম হাসান এই প্রতিবেদককে বলেছেন, ‘আমাদের প্রশাসনের শিক্ষকরা আসলে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে ঠাট্টা করেছেন। তারাও জানেন, আগের কটি জন্মদিনে আমরা ক্যাম্পাস খোলাও পাইনি। ফলে এই বছরের দিনটিকে আমরা পালনের জন্য অপেক্ষায় আছি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি ছাত্র, ছাত্রী এবং প্রতিটি সাংস্কৃতিক কর্মী অনেক আশা নিয়ে আছেন। তারা মনে করছেন সবাই, ভালোভাবে জন্মদিন পালন করা হবে। তবে এবারও আমাদের অধ্যাপকরা নামমাত্র পালনের ঘোষণা দিয়ে বসে আছেন।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি ইলিয়াস হোসেন জানিয়েছেন, ‘আমাদের দাবী নিয়ে উপাচার্য স্যারের সঙ্গে দেখা করেছি ও ১১ দফা পেশ করেছি। তবে তিনি কর্ণপাত না করে স্বোচ্ছাচারী মনোভাব প্রকাশ করেছেন।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২২ পালনের সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ.এফ.এম. আবদুল মঈনকে এই প্রতিবেদক একাধিকবার মোবাইলে কল করেছেন। তবে তিনি ফোন ধরেননি ও তার কোনো মন্তব্য বা বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে তাদের উদযাপন কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী তার এই ছাত্রকে বলেছেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালনের জন্য একজন মন্ত্রীকে আনতে চেয়েছি। একটি বড় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রীয়ভাবে পালনের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় বাজেট না দেওয়ায় আমরা করতে পারিনি।’
ওএস।