টাঙ্গাইলের মধুপুরে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে বনবিভাগের লোকজন সুমাইয়া নামে এক নওমুসলিম নারীর ঘর ভেঙে দেয়। এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৫ টায় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকায় বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ আদায় করেন স্থানীয়রা।
এর পর প্রশাসনের আশ্বাসে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অবরোধটি তুলে নেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এর আগে সকালে বন বিভাগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় ওই নওমুসলিম নারীর বাড়ি-ঘর ভেঙে দেয়।
জানা যায়, উপজেলার গাছাবাড়ী এলাকায় এক খৃষ্টধর্মীয় গারো নারী কয়েক বছর আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে সুমাইয়া শেখ নামের ওই নারী পঁচিশ মাইল এলাকায় ফারুক হোসেন নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে বিনা ভাড়ায় বসবাস করে আসছেন।
স্থানীয়রা ওই নারীর প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়ে অর্থ দিয়ে পঁচিশ মাইল বাসস্ট্যান্ডের কাছে বসতিপূর্ণ এলাকায় ৩ শতাংশ জমির দখলস্বত্ব কিনে দিয়ে ঘর নির্মাণ করে দেন। সেই ঘরটির নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি।
এর মধ্যেই বুধবার সকালে বন বিভাগ সুমাইয়ার ঘরটি ভেঙে দেয়। পর স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হরে আছরের নামাজের পর থেকেই জলছত্র থেকে পঁচিশ মাইল এলাকায় ঘর ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে মাগরিবের নামাজ আদায় করে। পরে পঁচিশ মাইল বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন- বিএডিসি মসজিদের ইমাম ইব্রাহীম তকী, মুফতি আরিফ আদনান, পঁচিশ মাইল জামে মসজিদের খতিব আব্দুল বাছেদ, মুফতি মাসুম বিল্লাহ, ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ, আব্দুস সামাদ খান, আবু হানিফ, হাফেজ সোহাইল আহমেদ প্রমুখ।
ভুক্তভোগী নওমুসলিম সুমাইয়া শেখ জানান, ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় আমি এখন অসহায়। বর্তমানে এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছি। স্থানীয়রা অনুদান ও যাকাতের টাকা দিয়ে সহযোগিতা করায় ঘর নির্মাণ করতেছি, এখনো কাজ শেষ হয়নি।
তিনি আরও বলেন- ঘরটি সরিয়ে নিতে আমাকে কোন প্রকার নোটিশ দেওয়া হয়নি। হঠাৎ করেই আমার ঘর ভেঙে দিয়েছে বনবিভাগ। অথচ চারদিকে শতশত বাড়ি ঘর, সেগুলো ভেঙে ফেলেনি। ঘরটি ভেঙে ফেলায় থাকার জায়গা আর রইল না।
উপজেলার গাছাবাড়ী বিটের বন কর্মকর্তা আব্দুল কদ্দুছ জানান, রেঞ্জ অফিস থেকে আমাকে বলেছে তাই আমি উচ্ছেদ অভিযানে গিয়েছি। আমি নতুন এসেছি, তাই বেশি কিছুই জানি না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে রয়েছি, বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নিয়েছেন এবং স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করছে।