ছাড়া পেলেন বেরোবির ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম
লেখা ও ছবি : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ইদুল ফিতর ও গ্রীষ্মকালের ছুটিতে বন্ধ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। আর ১০ দিন পর, ১৭ মে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের পূর্ণ্যস্মৃতিতে প্রতিষ্ঠিত রংপুরের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস, পরীক্ষা, গবেষণা চালু হবে।
ছুটিকালীন সময়ে বহিরাগতদের প্রবেশ পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় কড়াকড়ি আরোপ হলেও ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতা স্বজন ও বান্ধবীদের নিয়ে প্রবেশ করতে চেয়েছেন। তার নাম ফাহিম আযম ফয়সাল। তিনি এবারের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্রলীগের সভাপতি পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন ও সিভি জমা দিয়েছেন। তবে তার আর ছাত্রত্ব নেই।
ঢাকাপ্রকাশ ২৪.কমের বেরোবি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নন, এমন তিনজন বান্ধবী ও স্বজনদের ইদের ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়াতে নিয়ে যান ফাহিম। ক্ষমতার জোর দেখিয়ে তিনি প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতে যান ও গেট খুলে দিতে বলেন। কিন্তু পরিচিত এই নেতাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা আটকে দেন।’
‘তারা পেরে না উঠে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আশানুজ্জামান আশান স্যারকে ফোন করেন। তিনিও এসে এখন বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ রয়েছে বলে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করতে বলেন কিন্তু আত্মীয়-পরিজন এবং বান্ধবীদের সামনে হেঁট হতে না চেয়ে জোর করে প্রবেশ করতে চান তিনি। না পেরে তাদের গালাগাল করেন ফাহিম। তাদের দেখে নেবারও হুমকি দেন।’
‘ফলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই. (সাব-ইন্সপেক্টর) মো. ইজার আলীকে ঘটনাস্থলে আসার অনুরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির তিন অধ্যাপক। তিনি তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে এসে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফাহিমকে ঘটনাস্থল থেকে সবার সামনে গ্রেফতার করেন।’
‘ফাহিমকে গ্রেফতার করে বেরোবি পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রাখা হয়। ততক্ষণে জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতা ফাহিম আযম ফয়সালকে ছেড়ে দেবার জন্য জোর তদবির করেন কিন্তু তাতে পুলিশ বাহিনী রাজি না হওয়ায় ফাহিমকে অবশেষে মুচলেকা দিয়ে নি:শর্ত ক্ষমাপ্রার্থনার মাধ্যমে ছাড়ানো হয়’-জানিয়েছেন সাব-ইন্সপেক্টর মো. ইজার আলী।
মো. ইজার আলী বলেছেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা ফাহিমকে আটক করা হয়েছে। আমরা তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসেছি। সহকারী প্রক্টর স্যারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও মুচলেকা দিয়ে তিনি ছাড়া পেয়েছেন।’
বেরোবি প্রক্টর অফিসও এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে ও অন্যতম সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেরোবি প্রক্টর দফতরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা ফাহিমের আর ছাত্রত্ব নেই। এখন সে সাবেক।’
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী এই প্রতিবেদককে বলেছেন, ‘বেরোবির স্বার্থে ইদের ছুটিতে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপর সাবেক ছাত্র ফাহিম তিন জন বহিরাগত বান্ধবী ও স্বজনদের নিয়ে জোর করে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। আমার সহকারী প্রক্টর মহোদয়কে চরম অপমানিত করেছে। এই ঘটনার দায়ে ফাহিম আযম ফয়সালকে আমরা পুলিশে সোপর্দ করতে বাধ্য হয়েছি। নি:শর্ত ক্ষমাপ্রাথনার পর মুচলেকা দেয়ায় তাকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।’
ওএস।