শিক্ষককে লাঞ্চনার প্রতিবাদে ছাত্ররা
সাবেক হলেও ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বহাল তবিয়তে রাজনীতি করে যাওয়া এবং প্রভাবশালী হিসেবে জায়গা করে নেওয়া জাহাঙ্গীর আলম নেতৃত্ব দিয়ে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মেরেছেন। শহীদ শেখ রাসেল হলের সিট দখল করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন দলবল নিয়ে। সেখানে তাদের ঠেকাতে সাধারণ ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানো হলের প্রভোষ্ট ও সহকারী অধ্যাপক মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়াকে লাঞ্চিত করেছেন সবাই মিলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির অত্যন্ত ভালো বিভাগ অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (আইইএস) বিভাগের শিক্ষক।
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে এবং জড়িত জাহাঙ্গীরসহ তার দলবলের অপরাধীদের গ্রেফতার এবং সব্বোর্চ শাস্তির দাবীতে গোপালগঞ্জের ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদের আয়োজন করেছেন শহীদ শেখ রাসেল হলের আবাসিক ছাত্ররা। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইইএসের ছাত্ররা। আরো সব বিভাগের ছাত্ররা এসেছেন। আরো ছিলেন মানবতাবাদী ও প্রতিবাদী অধ্যাপকরা।
আজ ৭ মার্চ দুপুর ১২টায় টানা ক্লাসের বিরতিতে ছাত্ররা ‘শেখ রাসেল হলের সম্মানিত প্রভোস্ট জনাব মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়া স্যারকে লাঞ্চিত করার ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন’ শিরোনামের এই ব্যানার বহন করেছেন ও ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন ‘হল চত্বর’-এ। এই দীর্ঘ সারি অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়েছে। শত, শত ছাত্র মানববন্ধন ও প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। তারা বিপদে পাশে দাঁড়ানো এই অধ্যাপকের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের অশোভন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ, নিন্দা ও জড়িতদের সব্বোর্চ শাস্তি দাবী করেছেন সবার কাছে।
মানববন্ধনের অন্যতম ইতিহাসের ছাত্র কারিমুল হক বলেছেন, “আমি ছাত্রজীবনে দীর্ঘদিন ধরে শহীদ শেখ রাসেল হলে আছি। আপনারা জানেন না, যেকোনো জাতীয় দিবসসহ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো হলানুষ্ঠান এবং ছাত্রলীগের যেকোনো প্রগ্রামও আমাদের হলই সবচেয়ে ভালোভাবে আয়োজনের সুনামের অধিকারী। সুন্দর সবগুলো আয়োজনে সবচেয়ে সহযোগিতাপরায়ণ অধ্যাপক মো. ফায়েকুজ্জামান। আমাদের স্যারকে হামলার প্রতিবাদ করছি। আমরা বলতে চাই, একটি খারাপ মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে স্যারকে ‘শিবির’ ট্যাগটি দিয়ে দিতে চাচ্ছে। আমরা এরও বিচার চাই।”
রসায়নের ছাত্র এবং হলের আবাসিক সেলিম রেজাও তাদের প্রভোস্ট স্যারের সব কাজে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। তিনি অধ্যাপক মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়াকে শহীদ শেখ রাসেল হলের ‘সব কাজের প্রাণ’ বলে জানিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমাদের এই স্যারকে আমরা ছাত্রজীবনের শুরু থেকে একজন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক হিসেবে দেখছি। তবে এখন একটি গুজব ছড়ানো হয়েছে, তিনি তার আইইএসের ৪০ থেকে ৪৫ জন ছাত্রকে নাকি শেখ রাসেল হলে সিট বরাদ্দ করেছেন। তবে সত্যটি হলো-আমাদের হলের সবচেয়ে বেশি আবাসিক ছাত্র হলো কৃষির। মোটে ১৮ জন স্যারের বিভাগের। আমরা সব খবরই রাখি।’
ওএস।