বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

বাংলা নববর্ষের অর্থনীতি

বাংলা নববর্ষকে ঘিরে সকল উদযাপনের মূল কথা বাঙালির আত্মপরিচয়ের অনুসন্ধান এবং অসাম্প্রদায়িকতার মর্মবাণী তুলে ধরা। করোনার আক্রমণের আগের বছরগুলোতে নগরে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ব্যপ্তি বেশ বাড়ছিল। পার্কে-উদ্যানে, পাড়ায় মহল্লায়, হাতিরঝিলে, রবীন্দ্র সরোবরে নানা অনুষ্ঠানে বিশেষ করে তরুণরা বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেবার যেন প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছিল।

সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসি বাঙালিরাও বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে গিয়ে বিভিন্ন দেশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাংলাদেশ তৈরি করার আনন্দে মেতেছিল। কিন্তু কভিড-১৯ হঠাৎ করে বাঙালির এই আনন্দযজ্ঞে বাধ সাধে। তাদেরকে ঘরবন্দি করে ফেলে। আর অসময়ে প্রাণ ঝরে যাবার আশঙ্কা তো ছিলোই। তবে বিজ্ঞানের কৃপায় দ্রুত টিকা আবিষ্কারের ফলে মানবজাতি এই যাত্রায় রক্ষা পায়। পর্যটন শিল্প আবার মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। বিদেশে থাকা ছেলে-মেয়েরা দেশে ফিরে আসছে। এমনি এক প্রেক্ষাপটে আসছে এবারের বাংলা নববর্ষ। নিঃসন্দেহে সময় অনেকটাই বদলে গেছে। তাই এবারের বাংলা নববর্ষ উদযাপনেও নতুন নতুন ফ্যাশন পণ্য ও সাংস্কৃতিক আয়োজন লক্ষ করা যাবে বলে আশা করা যায়।

আর উৎসবের এই রকমফের বাঙালির ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনীতিতেও নতুন নতুন প্রভাব নিশ্চয় ফেলবে। তবে সম্প্রতি বঙ্গবাজার পুড়ে যাবার কারণে অনেক ক্ষুদে ব্যবসায়ীর পুঁজি ও স্বপ্ন দুইই পুড়ে গেছে। প্রায় পঞ্চাশ হাজারের মতো কর্মীর আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ এরা ঈদের বাজারে খুবই সক্রিয় থাকার কথা ছিল। তাই এই ঈদে তাদের আনন্দ উঠে গেছে। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অন্যান্যদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

নিঃসন্দেহে আমাদের সাংস্কৃতিক লড়াই-এ পয়লা বৈশাখ বরণ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু সেই ইতিহাস আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। এর শুরুটা এমন এক সময়ে হয়েছিল যখন নিজেদের বাঙালি হিসেবে দাবি করাটাই সাহসের কাজ ছিল। ১৯৬১ সালে একদিকে পাকিস্তান আমলের দমবন্ধ পরিবেশ, আর অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির স্বাধিকারের আন্দোলনের মধ্যেই এসেছিল রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবর্ষ। স্বৈরাচারি ও গণবিরোধী পাকিস্তান সরকার অলিখিত নিষেধাজ্ঞা জারি করে এই উদযাপনের উপর। এর প্রতিবাদে গণমুখী আঙ্গিকে সুর ও সংগীতকে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে সন্জীদা খাতুন, ওয়াহিদুল হক, মোখলেসুর রহমান (সিধু ভাই), আহমেদুর রহমান (‘ভিমরুল’) সহ আরও অনেকেই সম্মিলিত উদ্যোগ নেন। এভাবেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ছায়ানট। মূলত ছায়ানট সংগঠকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং ঢাকা-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক, হাইকোর্টের বিচারপতি ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক গুণীজনেরা ঐক্যবদ্ধভাবে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে এগিয়ে আসেন। ‘আমরা রবীন্দ্র সংগীত গাইবই’ বলে সেদিন জোর সংকল্প প্রকাশ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। একই সঙ্গে তিনি নজরুলকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপনেরও বিরুদ্ধে ছিলেন। আর সে কারণেই রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্রবোধ মিলে মিশে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে পোক্ত করা সম্ভব হয়েছিল পাকিস্তানি সেই আঁধার যুগেও। তবে সাংস্কৃতিক আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠার ধারা-বিবরণীটি ঠিক সেভাবে আমাদের সন্তানদের বলে উঠতে পারিনি আমরা। তাই বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে সাংস্কৃতিক আন্দোলন নির্মাণের রাজনৈতিক যুদ্ধের ভিত গড়তে, সংস্কৃতি কর্মীরা, বিশেষ করে ‘ছায়ানট’ সংগঠক ও কর্মীদের অবিস্মরণীয় ভূমিকা আজকের তরুণ প্রজন্মকে জানানোর প্রয়োজন রয়েছে। সুর দিয়ে মানুষের মনের গভীরতর স্বপ্নকে প্রভাবিত করার এই প্রচেষ্টাকে আরও সক্রিয় করার অভিপ্রায়েই ১৯৬৭ সালে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নেন ছায়ানট সংগঠকরা। প্রয়াত ড. নওয়াজেশ আহমদ ছিলেন প্রকৃতি প্রেমিক একজন বিজ্ঞানী। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এক স্মারক বক্তৃতায় (২০০৭) তিনি বলেছিলেন কীভাবে রমনা বটমূলের পয়লা বৈশাখের সূত্রপাত হয়। সন্জীদা আপার মুখেও এ কথা বহুবার শুনেছি। ড. নওয়াজেশ সেদিন বলেন, ‘১৯৬৭ সনে ওয়াহিদুল এবং সন্জীদা আমাকে বলল, ‘এবার আমরা বাংলা নববর্ষ বাইরে করব। তুমি একটা গাছ দ্যাখো’। আমার উপর ভার দিল ওয়াহিদুল। আমি ওয়াহিদুলকে রমনা বটমূলের কথা বললাম।’

রমনা বটমূলে আজ যেখানে অনুষ্ঠান হয় সেটা আসলে বট নয়। অশ্বত্থ। আমরা বট বলেই চালিযে দিয়েছিলাম। জায়গাটা এখন যেমন তখন তেমনটা ছিল না। চারদিকে শুধু জঙ্গল আর ঘাসে ভর্তি। তবু আমি ওয়াহিদুলকে বললাম জায়গটা কিন্তু খুব শান্ত। কোলাহলমুক্ত। ছায়ানটের ছেলে-মেয়েদের ভালোই লাগবে। ও রাজি হয়ে গেল। সারারাত আলো জ্বেলে ছায়ানটের কর্মীরা সেই ঘাস কাটল, জঙ্গল পরিষ্কার করল। এভাবেই ছায়ানটের বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন শুরু হলো। আজ এই অনুষ্ঠান যে জাতীয় পর্যায়ে চলে গেছে তাতে আমার খুব ভালো লাগে।’ (দেখুন, আতিউর রহমান, রবীন্দ্রসাধক ওয়াহিদুল হক, দিপ্তী প্রকাশনী ২০১১, পৃ. ৩১১)। সুদীর্ঘ পঞ্চাশ বছরে আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতির অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। রমনা বটমূলের এই নববর্ষ উদ্যাপন এখন সারা দেশ এবং বাঙালি অধ্যুষিত বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। লক্ষ লক্ষ বাঙালি বাংলা নববর্ষে পথে নেমে পড়ে। নুতন জামা-কাপড় পড়ে এক উজ্জ্বল সকালে তাদের আনন্দঘন উপস্থিতি বাঙালির অস্তিত্বের জানান দেয়। পাশাপাশি চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশের এক অসাধরণ অগ্রযাত্রার প্রতীক বাঙালির এসব আয়োজন।

তাই করোনা-পরবর্তীকালে বাংলা নববর্ষের পুরোদমে উদযাপন নিশ্চয়ই আবারও আমাদের সাহস জোগাবে আগামীর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে এগুনোর জন্য। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে নববর্ষের এই উদযাপনের সাংস্কৃতিক গুরুত্বের পাশাপাশি রয়েছে অর্থনৈতিক গুরুত্বও। ভেবে দেখুন এই সর্বজনীন সাংস্কৃতিক উদযাপনকে কেন্দ্র করে করোনাজনিত অর্থনৈতিক অচলাবস্থায় ঝিমিয়ে পড়া খাতগুলোতে গতি সঞ্চার করে অর্থনীতির জন্য কতোটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে বাঙালির এই সর্বজনিন উৎসব। মধ্য ও উচ্চ বিত্তের কথা না হয় নাই বা বললাম, শহরের নিম্ন আয়ের মানুষ যারা, ধরা যাক গার্মেন্ট শ্রমিকদের কথা, তারা সকলেই কিন্তু পরিবারের জন্য নববর্ষ উপলক্ষে কিছু কেনাকাটা করেছেন। লক্ষ লক্ষ গার্মেন্টস কন্যারা নতুন শাড়ি কিনছেন। তরুণরাও নতুন রঙিন পোষাক কিনছেন। ফল কেনার হিড়িক পড়ে যায় নববর্ষের ভোরে। ফ্যাশনের এই জোয়ারের বিরাট প্রভাব পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতে। উৎসবের এই অর্থনীতি পাশ্চাত্যের বড় দিনের অর্থনীতির মতোই দিন দিন বাঙালির মনে ঠাঁই করে নিচ্ছে। এই উৎসবে কয়েক হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হওয়ার কথা। গ্রামেও তো এখন সেবাখাতের ব্যাপ্তি বিরাট। গ্রামীণ আয়ের ষাট শতাংশই আসছে অ-কৃষি খাত থেকে। কাজেই নববর্ষকে কেন্দ্র করে গ্রামের অ-কৃষি খাতের উদ্যোক্তারাও বাড়তি বেচাকেনার মুখ দেখবেন। দেশব্যাপী টাকার এই লেনদেনের ফলে সংশ্লিষ্ট কর্মীদেরও আয়-রোজগার বাড়বে। তাদের জন্য নিত্যপণ্যের দামবৃদ্ধির চাপ মোকাবিলা কিছুটা হলেও সহজতর তো হবেই। করোনার দুর্দশা কাটিয়ে দুই বছর বাদে পুরো মাত্রায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন অর্থনীতির জন্য সুখবরই বটে।

দশ-পনেরো বছর আগেও পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে পোশাক কেনা অত বেশি ছিল না। কিন্তু করোনা আসার আগে আগে ২০১৯ সালের পয়লা বৈশাখকে ঘিরে পনেরো হাজার কোটি টাকার পোশাক বিক্রি হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন অভ্যন্তরীণ পোশাক প্রস্তুতকারক মালিক সমিতি। এই পোশাক কিন্তু কেবল বিপণি বিতানে বিক্রি হয়েছে এমনটি নয়। বরং ফুটপাতের বিক্রেতাসহ অনানুষ্ঠানিক বিক্রয়কেন্দ্র থেকেও এর একটি বড় অংশ বিক্রি হয়েছে। ২০১৯ সালের আগের হিসাব বলছে এই বিক্রির পরিমাণ বছরে গড়ে ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। করোনাকালে এই প্রবৃদ্ধি নিশ্চয়ই ধাক্কা খেয়েছিল। তবে গত বছরের নববর্ষে আমরা পুরোপুরি আগের ধারায় ফিরে আসার পথ খুজে পেয়েছি। এর আবার দুই বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় পোশাক এবং ভোগ্যপণ্য বিক্রি বাড়তে দেখেছি গত বছর। এ বছর নিশ্চয় বিকিকিনির হার আরও বাড়বে। তবে মূল্যস্ফীতি বাড়ন্ত বলে সাধারণ মানুষের কেনাকাটার পরিমাণ যতোটা আশা করা গিয়েছিল ততটা হয়তো হবে না। তবে অর্থনীতি মোটেও ঝিমিয়ে পড়েনি। এখনো বেশ সচল। সবল। ফলে অর্থনীতির গা-ঝাড়া দিয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় বাংলা নববর্ষের এই সময়টা যে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

ড. আতিউর রহমান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর

Header Ad
Header Ad

বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’

উপস্থাপক হানিফ সংকেত। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র ঈদের বিশেষ পর্ব আজ (১ এপ্রিল) বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর প্রচারিত হবে। হানিফ সংকেতের রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় নির্মিত এই বিশেষ পর্বে থাকছে বর্ণাঢ্য আয়োজন। বরাবরের মতোই অনুষ্ঠানের শুরু হবে কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী গান ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।

এবারের ‘ইত্যাদি’তে থাকছে দেশাত্মবোধক গান, যেখানে কিংবদন্তি শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী ও সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া গানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন আরও ১০ জন তরুণ শিল্পী। সংগীত পরিবেশনায় থাকছেন হাবিব ওয়াহিদ ও প্রীতম হাসান। এ ছাড়া সিয়াম আহমেদ ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমিও গানে অংশ নিয়েছেন। বিশেষ নৃত্য পরিবেশন করবেন জনপ্রিয় চার অভিনেত্রী সাফা কবির, সাদিয়া আয়মান, সামিরা খান মাহি ও পারসা ইভানা।

এবারের ‘ইত্যাদি’তে তিন জনপ্রিয় তারকা দম্পতি—শহীদুজ্জামান সেলিম ও রোজী সিদ্দিকী, এফ এস নাঈম ও নাদিয়া আহমেদ, ইন্তেখাব দিনার ও বিজরী বরকতউল্লাহ গানে গানে অনলাইন কেনাকাটার মজার অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন। মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন নিয়ে নির্মিত মিউজিকাল ড্রামাতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, মোমেনা চৌধুরী, আনোয়ার শাহী ও র‍্যাপ শিল্পী মাহমুদুল হাসান।

বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে তৌসিফ মাহবুব ও শবনম বুবলির নৃত্য পরিবেশনা। পাশাপাশি, ‘গুজব’ নামের ছোট নাটিকায় বিদেশি অভিনয়শিল্পীদের অংশগ্রহণ দর্শকদের জন্য বাড়তি চমক হয়ে আসবে। এছাড়াও নিয়মিত চরিত্র নাতি ও কাশেম টিভির রিপোর্টার, সামাজিক অসঙ্গতি ও সমসাময়িক ঘটনাও উঠে আসবে ‘ইত্যাদি’র বিশেষ পর্বে।

অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেছে ফাগুন অডিও ভিশন এবং রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় রয়েছেন হানিফ সংকেত। ঈদের আমেজে ভরা ‘ইত্যাদি’র এই বিশেষ পর্ব দর্শকদের জন্য চমক ও বিনোদনে ভরপুর হতে যাচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

প্রতিদিন যানজটে নাকাল রাজধানীবাসীর জন্য ঈদের ছুটিতে ঢাকা যেন এক অন্য রকম শহর। কর্মব্যস্ত এই নগরী এখন শান্ত, ফাঁকা ও যানজটমুক্ত। যারা ঈদে ঢাকায় রয়ে গেছেন, তারা উপভোগ করছেন এক ভিন্ন পরিবেশ।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ ছিল কম। অলস দুপুরে ফাঁকা রাস্তায় হালকা বাতাসে খেলা করছিল রোদের ছায়া। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু এলাকায় মানুষের চলাচল বাড়তে দেখা গেছে।

ঈদে যারা ঢাকায় থেকে গেছেন, তারা অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। মিরপুর চিড়িয়াখানা, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, জিয়া উদ্যান, শ্যামলী ওয়ান্ডারল্যান্ডসহ বিভিন্ন পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাকিব হাসান জানান, "ঈদের ছুটিতে ঢাকার ফাঁকা রাস্তাগুলোতে ঘুরে বেড়ানোর দারুণ সুযোগ পাওয়া যায়। গতকাল বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে পুরো শহরটা ঘুরেছি, দারুণ লেগেছে।"

তবে, কর্মজীবীদের জন্য এই ফাঁকা ঢাকা যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস। ব্যাংক কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, "সারা বছর এই যানজট নিয়ে অফিস করতে হয়। কিন্তু ঈদের ছুটিতে ঢাকাকে অন্য রকম মনে হয়। যদি সারা বছর এমন থাকত, তাহলে জীবন আরও সহজ হতো।"

যাত্রী কম থাকায় আয় কমে গেছে রিকশাচালকদের। সায়েন্সল্যাবে অপেক্ষমাণ রিকশাচালক মোহাম্মদ আরিফ জানান, "যাত্রী নেই বললেই চলে। আয় কমেছে, তবে ভালো দিক হলো জ্যাম নেই, রিকশা চালানো সহজ লাগছে।"

অন্যদিকে, সদরঘাট থেকে গুলিস্তানে আসা চালক লোকমান বলেন, "গুলিস্তান ও বাবুবাজার এলাকায় কিছুটা যানজট পেয়েছি, তবে বাকি রাস্তা ফাঁকা ছিল।"

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, ঈদের ছুটিতে বাসাবাড়ি ও অফিস-আদালত ফাঁকা থাকায় অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, "সাইবার মনিটরিংসহ গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নাশকতার তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।"

সরকারি চাকরিজীবীরা এবারের ঈদে টানা ৯ দিনের ছুটি উপভোগ করছেন। আগামী ৬ এপ্রিল থেকে অফিস-আদালত খুলবে। তবে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর আগেই খুলবে, ফলে ধীরে ধীরে রাজধানী আবার কর্মচঞ্চল হয়ে উঠবে।

Header Ad
Header Ad

মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২

ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরে পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়ের সংলগ্ন সাহেববাজার সড়কে বিপরীতমুখী তিনটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে চার যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, নাওডোবা গোলচত্বর থেকে সাহেববাজার সড়কে তিনটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। গুরুতর আহত চারজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ জানান, দুর্ঘটনাটি জাজিরা থানার অন্তর্ভুক্ত হলেও এটি শিবচরের সীমানা সংলগ্ন। তিনি বলেন, "ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়েছেন। আহত চারজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুই যুবক।"

এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছে এবং নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা
শান্তিপূর্ণ ঈদ উদযাপনে সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল
রাজধানীতে মেট্রোরেল ও সারা দেশে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু
যমুনা সেতু দিয়ে একসপ্তাহে ২ লাখ ৪৭ হাজার যানবাহন পারাপার, ১৭ কোটি টাকার টোল আদায়
ঈদের দিনে সড়কে মৃত্যুর মিছিল: ১০ জেলায় নিহত ২১
টঙ্গিবাড়ীতে ঈদের দিনে ১০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি, উপকৃত ৪২০ পরিবার
ঈদের দিনেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত, এক বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
যশোরের শার্শা সীমান্তে যুবকের লাশ উদ্ধার, আটক ১