বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

আমাদের স্বপ্ন বোনার শিল্পী

মানুষকে তো পরিমাপ করা যায় না, সম্ভবও নয়। মানুষ জন্মের পর থেকে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়, প্রসারিত হয়, প্রস্ফুটিত হয়। ক্রমান্বয়ে সে নিজেকে তুলে ধরতে পারে, মানবতার অংশ হয়ে ওঠে। তার জাদুকরী কর্মক্ষমতা আর মানুষের ভালোবাসা ও আস্থায় সে নামটা ধীরে ধীরে এক সময় বিশেষণ হয়ে দাঁড়ায়। শেখ হাসিনা হলেন এমন একজন মানুষ যিনি একটা জাতিকে তাঁর নিজস্ব স্বপ্নের সঙ্গে দারুণভাবে সংযুক্ত করতে পেরেছেন। এই যে এক অনন্যসাধারণ ক্ষমতা এই ক্ষমতাটিকে কোনো অবস্থাতেই, কার পক্ষেই পরিমাপ করা সম্ভব নয়। আজ এখানে আমি এক কিংবদন্তির উপাখ্যান বলছি, এক মানুষের কথা বলছি, বলছি একজন শেখ হাসিনার কথা।

শেখ হাসিনা সাধারণ জীবন-যাপন করা একজন মানুষের নাম। সেই টুঙ্গিপাড়ার মাটি-মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও বাংলার প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠা একজন সাধারণ মানুষ। আমাদের জীবনের মতোই যার জীবনকে অতি পরিচিত মনে হয় এবং সহজেই মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যাঁকে দেখলেই মনে হয় সে আমাদের অতিচেনা-পরিচিত একজন মানুষ। যাঁর সাথে সহজেই গল্প করা যেতে পারে; পরিবারের দুঃখ-বেদনার কথা বলা যেতে পারে। রাষ্ট্রভার কাঁধে তুলে নিয়ে যিনি অনেকের ‘আপা’ই রয়ে গেছেন। যাঁর মধ্যে রয়ে গেছে বাংলার চিরচেনা মায়ের মুখাবয়ব, বোনের মূর্তি। শেখ হাসিনা হলেন সেই মানুষ যিনি একজন দুঃখী মানুষের জন্য কাতর হন; মানুষকে পরিপূর্ণ ভালোবাসা দিয়ে তাকে আপন করে নেয়ার সমস্ত কিছুই যেন তাঁর মধ্যে প্রকৃতি উজাড় করে দিয়েছে।

আবার অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে এই দেশেই একটি বিপরীত চিত্রও আমরা দেখি। কিছু মানুষ শেখ হাসিনাকে নিয়ে সারাক্ষণ নিন্দা আর সমালোচনায় মুখর থাকেন। প্রতিমুহূর্তে তাঁর ত্রুটি অনুসন্ধানে ব্যস্ত থাকেন। শেখ হাসিনার দুর্ভাগ্য হচ্ছে যেই মানুষের কল্যাণে তাঁর সমস্ত স্বজনকে চিরতরে হারাতে হয়েছে; শত প্রতিকূলতার মধ্যেও যাদের জন্যে নিজের জীবনকে উজাড় করে দিচ্ছেন, তারাও তাঁকে ভুল বোঝেন এবং তাদের একটা সংকীর্ণ বিচারের বাটখারা দিয়ে পরিমাপ করার চেষ্টা করেন। মাঝে মাঝে মনে হয় এই বাঙালি জাতির জন্যে তাঁকে আর কত হারাতে হবে; আর কত বেদনার আগুন বুকের মধ্যে ছাইচাপা দিয়ে তাদেরকেই বুকে জড়িয়ে আপন করে নেয়ার সাধনা চালিয়ে যেতে হবে; আর কত হারানোর সাগর পাড়ি দিতে হবে; আর কত! জসীম উদ্দিনের কবিতার বৃদ্ধের স্বজন হারানোর ব্যথা মনে পড়ে-‘এই শুন্য জীবনে যত কাটিয়াছি পাড়ি,
যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।’

আমার একটা বিরল সৌভাগ্য-আমি বিশাল এই মহীরুহকে ধীরে ধীরে পরিণত হতে দেখেছি। কথাটা রূপকভাবেই বলি-এক ছাদের কোনা থেকে গজিয়ে ওঠা অশ্বত্থের চারাকে ধীরে ধীরে পরিপূর্ণ এক বিশাল বৃক্ষে পরিণত হতে দেখেছি যেন। দেখেছি এক বিশেষণ হয়ে ওঠা এক মানুষকে- যেন এ এক ফিনিক্স পাখির মতো ভস্ম থেকে জেগে ওঠা।

প্রিয়জন হারানোর ব্যথা-বেদনা-শূন্যতাবোধ সকল মানুষের মতো শেখ হাসিনারও আছে। তিনি তো মানুষই। তবে এক ভিন্ন মানুষ। সাধারণ মানুষের মধ্যে থেকেও তিনি অসাধারণ মানুষ। আর সেই কারণেই তাঁর সমস্ত পরিবারকে হারিয়েও এদেশের মাটি ও মানুষকেই আপন করেছেন আর তিনিই বাংলাদেশকে এখনো পর্যন্ত পথ দেখাচ্ছেন। তিনি আছেন বলেই এখনো বাংলাদেশকে মনে হয়-এ দেশটি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। এখনো মনে করি- এই বাংলাদেশে প্রাণ খুলে কথা বলা যায়, লেখা যায়, ভাবা যায়। শেখ হাসিনাই আমার মধ্যে সেই স্বপ্ন এখনো বাঁচিয়ে রেখেছেন-যেই স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুকে ঘুমোতে দেয়নি, যেই স্বপ্ন দেশরত্ন শেখ হাসিনাকেও ঘুমোতে দেয় না। মনে পড়ে উপ-মহাদেশের মহান দার্শনিক এ. পি. জে. আব্দুল কালামের অবিস্মরণীও সেই বাণীর কথা-‘স্বপ্ন সেটা নয় যেটা তুমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখো। স্বপ্ন হলো সেটা যা পূরণের অদম্য ইচ্ছা তোমাকে ঘুমাতে দেবে না।’ এই বাণীর মর্মার্থই যেন মনে-প্রাণে উপলব্ধি করেছেন বাংলার আপামর মানুষের চোখের মণি জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমরা তাঁর ভেতরে এমন এক অদম্য শক্তি প্রত্যক্ষ করি যা আমাদেরকে স্বপ্ন দেখায়, স্বপ্ন দেখার জন্যে অঙ্গীকারাবদ্ধ করে। রাষ্ট্র পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আজ ছিয়াত্তরে পা রাখলেন। সংগ্রাম-সংক্ষুব্ধ জীবনের অগণিত চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দৃপ্ত পদক্ষেপে তিনি এগিয়ে চলেছেন, হাতে তাঁর বিজয় কেতন এবং তাঁকে অনুসরণ করছে এক বিশাল জাতিগোষ্ঠী, অন্তরে তাঁর মুক্তিযুদ্ধের অনির্বাণ অগ্নিশিখা, কণ্ঠে আছে বিজয়ের অমোঘ সংগীত লহর আর হৃদয়ে বহন করে চলেছেন মহান পিতার অকৃপণ আশীর্বাদ।

অথচ ৭৫-এ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে ভেবেছিল বাংলাদেশের হৃদয় থেকে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেবে; ৭১-এ পরাজিত শক্তির করতলে আবার দেশটাকে নিপতিত করবে। সেসময় বঙ্গবন্ধু কন্যাদ্বয়কে দেশে ফিরতে দেয়া হয়নি। পরদেশে ভেসে ভেসে নিজেদেরকে রক্ষা করতে হয়েছে। সেখানেও তাঁদেরকে হত্যার নানা পরিকল্পনা করা হয়েছে। আমরা দেখেছি দীর্ঘ সামরিক স্বৈর-শাসন। পাকিস্তানের চর রাজনীতিকে যিনি জটিল করে দেওয়ার ব্রত নিয়েছিলেন; দেশটাকে আবার পাকিস্তানের আদলে তৈরি করে পাকিস্তানের হাতে তুলে দেবার মিশন নিয়েছিলেন; শত শত মুক্তিযোদ্ধা আর্মি অফিসারকে বিচারের নামে প্রহসন করে হত্যা করেছিলেন, তাকেও আমরা দেখেছি। আমরা এ-ও দেখি এই স্বাধীন বাংলাদেশে ৭১-এ পরাজিত শক্তিকে নানাভাবে পুনরুজ্জীবিত করা, তাদেরকে বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত করা, সরকারের অংশীদার করা। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও জামাত হেফাজতের তাণ্ডব দেখেছি দেশব্যাপী। অর্থাৎ দেশটাকে যারা মেনে নেননি, সেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির হাতেই দেশটি পরিচালিত হয়েছে সুদীর্ঘকাল। এতদসত্ত্বেও, আজ আমরা যে দেশটিকে নিয়ে গর্ব করছি, কিছু পূর্বে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি, যে অভাবিত উন্নতির জন্যে পুরো বিশ্ব উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে, তাকে সেই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পথটি কি বঙ্গবন্ধু কন্যা ও তার দল আওয়ামী লীগের জন্যে এতো সহজ ছিল?

সহজ তো ছিলই না বরং পুরো পরিস্থিতিই ছিল এক ভয়ানক ও অসম্ভব রকমের বিপরীত অবস্থানে। বঙ্গবন্ধু কন্যা হলেন সেই ফিনিক্স পাখি যিনি একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী ঐতিহ্যবাহী দলটিকে সে সময় জাগিয়ে তুলেছিলেন। একইসঙ্গে একটি জাতিকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শেখালেন। একদিকে বাবা-মাসহ পরিবারের সকল আপনজনকে হারানোর দুঃসহ ব্যথা তার বুকে বয়ে চলেছেন; একইসঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী দুর্বৃত্ত ও ঘাতকদের ষড়যন্ত্রের নাগপাশ থেকে একটি জাতির মুক্তির সংগ্রামে নিজেকে নিরন্তরভাবে নিয়োজিত করেছেন। একদিকে ভাই হারানোর শোকে বুকে পাথর বেঁধেছেন; একইসঙ্গে পিতার স্বপ্ন পূরণে সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে হয়েছেন বজ্রকঠিন।

পঁচাত্তরের আগস্টে মানবতার বহ্ন্যুৎসব ঘটিয়ে জিয়া-মোশতাক চক্র রাষ্ট্রযন্ত্রকে কুক্ষিগত করে সময়ের চাকাকে উল্টোদিকে ঘোরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। তাদের চক্রান্ত ও নীলনকশার লক্ষ্য ছিল সুস্পষ্ট-নির্মম ও হিংস্র।

এত ভয়াবহ নীল নকশা এবং নব্য পাকিস্তান সৃষ্টির যাবতীয় অপচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করেই একচল্লিশ বছর আগে এই দিনে জন্মভূমির মাটি যার পদচুম্বন করেছিল তিনি বঙ্গবন্ধুর সাহসী কন্যা শেখ হাসিনা। তখন গণশত্রু নির্দেশিত ঘোষণা ছিল; যেভাবেই হোক আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করে বিধ্বস্ত করতে হবে, রাজনীতিকদের জন্য রাজনীতি করাকে অসম্ভব করে তুলতে হবে, মুক্তিযুদ্ধকে বিপর্যস্ত করার জন্য অর্থ কোনও সমস্যা হবে না, ভাগ করতে হবে, সব ভাগ করে করে এক সময় ক্ষয় করে ফেলতে হবে মুক্তিযোদ্ধাদের। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, ভুয়া দেশপ্রেমিক, চতুর রাজনীতিক, ভুয়া ব্যবসায়ী, প্রতারক ধর্মব্যবসায়ী দিয়ে ছেয়ে ফেলতে হবে দেশ এবং পাশাপাশি অতি সন্তর্পণে চালাতে হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি নিধনপট। তাদের কৌশল, এভাবেই মুক্তিযুদ্ধকে করা যাবে বিতর্কিত, দুর্বল করে দেওয়া যাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে।

পঁচাত্তরের পরপরই কাজ সেভাবেই শুরু হয়েছিল। ভাগ করা হতে থাকল আওয়ামী লীগকে, আওয়ামী লীগের নামের পাশে লেগে গেল ব্র্যাকেট, বাড়তে থাকল সেই ব্র্যাকেটের সংখ্যা। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অন্য সংগঠনগুলোতেও গজিয়ে উঠতে থাকলো ব্র্যাকেটের রাজনীতি। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা তখন বিদেশের মাটিতে দ্বারে দ্বারে আশ্রয় প্রার্থনা করে চলেছেন গুপ্তঘাতক চক্রের দৃষ্টিকে ফাঁকি দিয়ে।

এরই মধ্যে ঘাতকের রোষণকষায়িত লোচন এবং নির্মম প্রহারের শ্যেনদৃষ্টিকে পদদলিত করে একচল্লিশ বছর আগের এই দিনে তিনি এসে দাঁড়ালেন তমসাবিনাশী আশার প্রদীপ নিয়ে হতাশা-সংক্ষুব্ধ জাতির সামনে। অন্তরের গভীরে বেদনার ফল্গুধারা আর হৃদয়ে শুভকর্মের প্রদীপ্ত চৈতন্য ধারণ করে শেখ হাসিনা যখন দেশে প্রত্যাবর্তন করলেন তখন এ দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির নির্ভরযোগ্য সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যেন জিয়নকাঠির ছোঁয়ায় জেগে উঠল। বারবার আক্রমণে জর্জরিত কর্মীরা দেখল এক সাহসী নারীর অবয়বে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির মুখচ্ছবিই যেন বিচ্ছুরিত হচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অন্তর্ঘাত সৃষ্টির পরিকল্পনাকারীরা এবার শঙ্কিত হলো, কারণ তারা এটা বুঝেছিল যে, বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার যদি কোনোভাবে বাংলাদেশের মাটিতে আসতে পারে তবে সে তার স্বপ্নের ডালা বহন করেই আনবে এবং মুমূর্ষু জাতির দেহে প্রাণসঞ্চার করবেই। তাই তারা তাঁর যাত্রাপথে কণ্টক বিছিয়ে যেতে থাকলো।

আমরা দেখছি শেখ হাসিনা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের জাল ছিন্ন করে অমিত বিক্রমে এগিয়েই চলেছেন। তাঁর রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব অসামান্য মেধা, সততা এবং নিষ্ঠা তাঁর কার্যক্রমের ক্ষেত্রকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানাকে অতিক্রম করে উপমহাদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে অধিকতর বিস্তৃত হচ্ছে। জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাঁর স্বপ্নসৌধ সোনার বাংলা সৃষ্টির প্রয়াস।

আমার কাছে শেখ হাসিনাকে জোয়ান অব আর্কের মতো মনে হয়। জোয়ান অব আর্ক যেমন ব্রিটিশরাজকে পরাস্ত করে শতবর্ষব্যাপী যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিলেন, শেখ হাসিনাও তেমনি অর্ধশতাব্দীব্যাপী তিল-তিল করে বেড়ে ওঠা স্বাধীনতা-বিরোধীদের পরাস্ত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ়সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। জোয়ান অব আকর্কে পুড়িয়ে মেরে ফরাসিরা অবশেষে তাকে দেবীর মর্যাদায় সন্ত সাজিয়েছিল। শেখ হাসিনা জয়ী হোন এবং মানুষই থাকুন, তার উপর দেবত্ব আরোপিত হোক-তা যেমন কামনা করি না; আবার মানুষ হিসেবেও তার সামর্থ্য ও সম্ভাবনাকে কূপমণ্ডকদের সংকীর্ণ বিচারকাঠিতে পরিমাপ করা হোক সেটাও প্রত্যাশা করি না।

আজ এটাই মনে হয়-জাতির পিতা যে রাষ্ট্র কাঠামো নির্মাণ করেছেন, তার কন্যা তাতে দিয়েছেন শক্তি, গতি, অগ্রগতি। তিনি আছেন বলেই আমরা বিনীত স্পর্ধা নিয়ে চলতে পারি। আমরা সাহসের সঙ্গে বলতে পারি-বিজয়ের শ্যামল তীর হাতছানি দিয়ে ডাকছে বাঙালি জাতিকে অমরাবতীর পথে পা রাখবার জন্য। পিতার অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নের গুরুভার তারই সুযোগ্য কন্যা কাঁধে তুলে নিয়েছেন এবং সমস্ত অন্ধকারকে বিদীর্ণ করে ‘মুক্তির দূত’ হয়ে জাতির মুক্তির সূর্যকে ঠিকই ছিনিয়ে আনবেন-এ বিশ্বাস এখন বাংলার মানুষের হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত। শতায়ু হোন হে সাহসিকা। বটবৃক্ষের পরমায়ু নিয়ে ছায়া বিস্তার করুন এই দেশ ও জাতির মাথায়।

লেখক: সম্পাদক, দৈনিক কালবেলা ও দৈনিক জাগরণ

 

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত