রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

পর্ব-২

তিনি আমাদের এক অসামান্য লড়াকু মন দিয়ে গেছেন

১৯৫৬ সাল। ৬ ফেব্রুয়ারি। আবার গণপরিষদের এক অধিবেশনে বললেন, “পূর্ব বাংলায় জনসাধারণ কাফনের কাপড় পাচ্ছে না। লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। জনগণের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা, চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সংবিধানে এ নিশ্চয়তা দিতে হবে।’ ১৯৭০ সালের ২৮ অক্টোবর নির্বাচনী প্রস্ততিমূলক ভাষণেও তিনি জনগণের এসব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন।

মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বে অসহযোগের দিনগুলোতে কার্যত তিনিই বাংলাদেশের অঘোষিত সরকার প্রধান ছিলেন। সে সময়ও তিনি সাধারণ মানুষের জীবন চলায় যাতে সামান্য কষ্ট না হয় সে দিকটায় পুরোপুরি সচেতন ছিলেন। আর তারই ধারাবাহিকতায় তিনি মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অতি অল্প সময়ে যে সংবিধান রচনা করলেন তার রাষ্ট্রীয় মৌলনীতিতে রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কথা স্পষ্ট করে উল্লেখ করলেন। মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি তিনি সাম্যভিত্তিক আর্থ-সামাজিক কাঠামো গড়ার অঙ্গীকার করেন। নারীর ক্ষমতায়ন, নগর ও গ্রামের বিদ্যমান বৈষম্য দূরিকরণের মতো অঙ্গীকারগুলোও লিপিবদ্ধ করা হয় ওই সংবিধানে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জারক রসে সিক্ত ওই সংবিধানের আলোকেই তিনি বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও অর্থনৈতিক নীতিকৌশল নির্ধারণ করেন। আর তাই ১৯৭৪ সালে অকাল বন্যায় ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সহযোগিতা বন্ধের কারণে বাংলাদেশে যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তা মোকাবিলার জন্যে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। এ সময়টায় তিনি সর্বক্ষণ ছট্ফট করতেন। দুবেলা ঠিক মতো ভাতও খেতেন না। অনাহারে ক্লিষ্ট মানুষের কষ্ট ভাগ করে নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করতেন।

গাফ্ফার চৌধুরিকে তিনি বলেছেন (সমকাল ১৭/৩/১৮): “গাফ্ফার তুমি বিশ্বাস করবে, এই দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে না পারলে আমি আত্মহত্যা করব ভেবেছিলাম। করিনি কেন জান? আমি একজন মুসলমান। আত্মহত্যা করা ইসলাম ধর্মে মহাপাপ। দ্বিতীয়ত, বাংলার মানুষের আমার প্রতি বিশ্বাস আছে। আমি তাদের ফেলে রেখে বিশ্বাসহন্তার কাজ করতে পারি না।” সেই বিশ্বাস তিনি রেখেছিলেন। শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি পঁচাত্তরেই বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ফসল ফলানোর ডাক দিয়েছিলেন। ওই বছরই বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। পাশাপাশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।

প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তার প্রচুর অভিযোগ ছিল; যা তিনি সুযোগ পেলেই প্রকাশ করেছিলেন। ১৯৭৩ সালে গণভবনে গাফ্ফার চৌধুরিকে তার লেখা একটি কবিতার কথা জানিয়েছিলেন। গাফ্ফার ভাই জানিয়েছেন যে, রবীন্দ্রনাথের ‘বিচারের বাণী নীরবে কাঁদে’ কবিতার অনুরূপ এক কবিতা লেখেন বঙ্গবন্ধু।
‘আমার বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে/
বাংলার ভদ্রলোকেরা শুধু চুরি করে, পোটলা বাঁধে।’

১৯৭৫ এর ২৬ মার্চ সোহওরাওয়ার্দী উদ্যানে তাই তিনি বজ্রকণ্ঠে আওয়াজ তুলেছিলেন, “আমার কৃষক দুর্নীতিবাজ? আমার শ্রমিক দুর্নীতিবাজ? ... ওরাই মালিক, ওদের দ্বারাই আপনার সংসার চলে।... আমাদের লেখাপড়া শিখিয়েছে কে? ডাক্তারি পাস করায় কে? অফিসার করে কে? কার টাকায়? বাংলার দুঃখী জনগণের টাকায়?” তাই শিক্ষিত জনদের বলেছেন “ওদের ইজ্জত করুন।” আর প্রশ্ন করেছেন, “আপনি দিচ্ছেন কী? কী ফেরত দিচ্ছেন?” সাধারণ মানুষের জন্য তার অন্তর সর্বক্ষণ কাঁদত। এই আবেগমথিত ভাষণই তার বড় প্রমাণ।

১৯৫৩-৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে বঙ্গবন্ধু প্রার্থী ছাত্রনেতা খালেক নেওয়াজ খানের নির্বাচনী এলাকা ময়মনসিংহের নান্দাইল গিয়েছিলেন। কর্মীদের সঙ্গে ডাক বাংলোয় উঠেছিলেন। মশারি ছিল না। ছিল একটি কাঁথা। মাঝরাতে তিনি গাফ্ফার চৌধুরিকে সেই কাঁথাটি দিয়ে জড়িয়ে দিলেন। টের পেয়ে তা ফেরত দিতে গেলে গাফ্ফার চৌধুরিকে তিনি বলেন, ‘বাংলার মশা আমাকে কামড়াবে না।’ বাংলার মশা না কামড়ালেও, এদেশেরই কিছু ষড়যন্ত্রকারী কু-সন্তান অতর্কিতে হামলা করে ‘বাংলাদেশের আরেক নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’কে শারীরিকভাবে তার প্রিয় দেশবাসীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের কালরাতে।

এর পরের দিন অর্থাৎ ১৬ আগস্ট লন্ডনের ‘দ্যা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস’ লিখেছিল, ‘এই করুণ মৃত্যুই যদি মুজিবের ভাগ্যে অবধারিত ছিল তাহলে বাংলাদেশের জন্মের মোটেই প্রয়োজন ছিল না।’ এর কয়েকদিন পরে ২৮ আগস্ট বিবিসির সংবাদদাতা ব্রায়ান ব্যারন ‘দি লিসনার’ পত্রিকায় ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, “বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের হৃদয়ে উচ্চতর আসনেই অবস্থান করবেন। তার বুলেটবিদ্ধ বাসগৃহটি গুরুত্বপূর্ণ ‘স্মারকচিহ্ন’ ও কবরস্থানটি ‘পুণ্যতীর্থে’ পরিণত হবে।’ তার সেই ভবিষ্যদ্বাণী আজ অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হয়েছে।

তাকে আমাদের তরুণ প্রজন্মের মনে চিরদিনের জন্যে গেঁথে দিতে হলে তার মৌল চাওয়াগুলোর আলোকে আমাদের দেশকে সুশাসনের চাদর দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। দুর্নীতি, বঞ্চনা, অন্যায্যতা, অবিচার যেন সমাজের অলি-গলিতে অবাধে বিচরণ না করতে পারে সেজন্য মানবকল্যাণধর্মী গরিব-হিতৈষী বঙ্গবন্ধুর ভাবনাসমূহকে আমাদের চলার পথের পাথেয় করতে হবে। জাতির মনে তার সুদূরপ্রসারি কল্যাণ ভাবনা চিন্তার আলোকে কাঙ্ক্ষিত মুক্তির দিশা দিতে হবে।

চলমান বিশ্বঅর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি যে অনেক দেশ থেকে অনেকটাই ভালো করছে তার কারণ বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন কী করে সংকট উত্তরণ করতে হয়। কী অসামান্য নেতৃত্বের গুণে তিনি ধ্বংসস্তুপ থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাসঘাতকদের হামলায় সাময়িকভাবে লাইনচ্যুত হলেও বাংলাদেশ ফের খুঁজে পেয়েছে তার কাঙ্ক্ষিত পথরেখা বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে। তার সুদৃঢ় নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের বিস্ময়। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অর্থনীতির এক বিস্ময়কর রূপান্তর ঘটেছে সাম্প্রতিক সময়ে। ধ্বংসস্তুপ থেকে ডানা ঝাপ্টা দিয়ে ফিনিক্স পাখির মতো উঠে দাঁড়িয়েছে বঙ্গবন্ধুর আরাধ্য বাংলাদেশ।

তথাকথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে উপচে পড়ছে সমৃদ্ধির ফসল। তা সত্ত্বেও হতাশা ছড়ানোর মানুষের অভাব কিন্তু নেই। তারা সারাক্ষণ আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। তাই আমাদের নিরন্তর সজাগ থাকতে হবে যেন আমাদের অবহেলায়, অপরিণামদর্শিতার কারণে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের এই উন্নয়নের অভিযাত্রা কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন না হয়। আমাদের নিরন্তর শুভকর্মের মাধ্যমেই প্রকাশ করে যেতে হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। আর তা করতে পারলেই শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে তাকে আমরা অনুভব করতে পারব আমাদের নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে। আর উচ্চারণ করতে পারব মহাদেব সাহার ভাষায়, “এই নাম স্বতোৎসারিত।”
‘... তুমি কেউ নও, বলে ওরা, কিন্তু বাংলাদেশের আড়াইশত নদী বলে,
তুমি এই বাংলার নদী, বাংলার সবুজ প্রান্তর
তুমি এই চর্যাপদের গান, তুমি এই বাংলা অক্ষর,
বলে ওরা, তুমি কেউ নও, কিন্তু তোমার পায়ের শব্দে
নেচে ওঠে পদ্মার ইলিশ;
তুমি কেউ নও, বলে ওরা, কিন্তু রবীন্দ্রনাথের গান আর নজরুলের
বিদ্রোহী কবিতা বলে,
তুমি বাংলাদেশের হৃদয়।’

লেখক: সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সাবেক বঙ্গবন্ধু চেয়ার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

এসএন

Header Ad
Header Ad

আনিসুল হকের তিন ব্যাংকে ২১ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে দুদক

সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক। ছবিঃ সংগৃহীত

সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হকের ৩ ব্যাংকে মোট ১৬টি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব হিসাবগুলোতে প্রায় ২১ কোটি টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যা ইতোমধ্যে ফ্রিজ করা হয়েছে।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুদক সূত্রে জানা যায়।

আনিসুল হকের হিসাবগুলোর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক বনানী শাখার ৬টি হিসাবের মধ্যে ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে ৫ কোটি টাকা এবং অন্য এক হিসাবে এসসি গোল্ডেন বেনিফিটস নামে ৫০ লাখ ৮১ হাজার টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া, সিটিজেন ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের ৯টি হিসাব থেকে মোট ১৫ কোটি ১১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমানে নথিপত্র সংগ্রহ এবং যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। অনুসন্ধান টিম প্রতিবেদন দাখিল করলে কমিশন আইন অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে।

এ বিষয়ে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও পাচারের অভিযোগ থাকলেও দুদক দালিলিক প্রমাণ ছাড়া আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে না। আমাদের তথ্য ও সংগ্রহ এবং যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে। যা অংশ হিসাবে তিন ব্যাংকে প্রায় ২১ কোটি টাকা জমা থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং ফ্রিজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই টাকা তার আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলেই আপাতত মনে হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।

আনিসুল হক ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গত ৭ অক্টোবর থেকে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। যার মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া অপর এক সহযোগী ফারহানা ফেরদৌস নামে অপর এক নারীর বিরুদ্ধে আসা পৃথক আর একটি অভিযোগও আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করছে দুদকের অনুসন্ধান টিম।

Header Ad
Header Ad

নরসিংদীতে ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা

হুমায়ুনের মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক। ছবি: সংগৃহীত

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, আধিপত্য বিস্তার ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নরসিংদীর মেহেরপাড়ায় এক ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১২টার দিকে নরসিংদীর পাঁচদোনা মেহেরপাড়া বাড়ি আগিণার খেলার মাঠ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

নিহত হুমায়ুন কবির (২৬) মেহেরপাড়া ইউনিয়নের নাগরারহাট এলাকার একরামুল হকের ছেলে। তিনি মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য।

নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একই এলাকার বাদল মিয়া, শাহআলম ও আতাউর মেম্বারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল হুমায়ুন কবিরের। দ্বন্দ্বের জেরে ইতোমধ্যে দুই পক্ষ একাধিক মামলা করেছে। গতকাল শনিবার দিনগত রাতে নিহত হুমায়ুন বাড়ির পাশের আঙ্গিনায় ব্যাডমিন্টন খেলছিল। রাত ১২টার দিকে দুটি মোটরসাইকেল যোগে শাহ আলম ও টিপুসহ চারজন হুমায়ুনের বাড়ির সামনে আসে। ওই সময় তারা হুমায়ুনকে ব্যাডমিন্টন খেলা থেকে ডেকে পাঁচদোনা বাজার মাছের আড়ৎ মসজিদের দিকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে সন্ত্রাসীরা তার বুকে, পিঠে ও ঘারে পরপর তিনটি গুলি করে। এ সময় সে মাটিতে লুটিয়ে পরে। গুলির শব্দ শুনে খেলার মাঠ থেকে লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে তারা মটোরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় হুমায়ুনকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, হুমায়ুন হত্যার বিচার দাবিতে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এলাকাবাসী।

নিহত হুমায়ুনের বন্ধু ও মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সুজন ভূইয়া বলেন, ‘স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল নিহত হুমায়ুনের। তার নেতৃত্বেই পাঁচদোনা মেহেরপাড়া ও মাধবদী আন্দোলন হয়েছিল। এসব ঘটনা নিয়ে সে এলাকার অনেকের রোষানলে পড়ে। এসবের জেরে তার বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। প্রাণ বাঁচাতে সে পালিয়ে থাকে। ৫ তারিখের পর এলাকায় আসে। এর মধ্যেই গতকাল তাকে বাড়ির আঙ্গিনা থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হলো।’

নিহতের বড় ভাই আল মামুন বলেন, ‘আমাদের ১৭ শতাংশ একটি জমি দখল করে নেয় বাদল মিয়ারা। পরে মামলার রায় পাওয়ার পর আমরা জমিটি দখলে নিই। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়। এরই জের ধরে তারা আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ ছাড়া স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এসব নিয়ে অনেকে তাকে দমানোর চেষ্টা করছিল।’

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাডমিন্টন খেলা শেষে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব শত্রুতার জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটনসহ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।’

Header Ad
Header Ad

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের বিষয়ে নিশ্চিত নয় ট্রাইব্যুনাল

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির বিষয়ে নিশ্চিত নয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। নোটিশ জারি হলে তা পুলিশের এনসিবি শাখা জানাবে বলে জানান তাজুল ইসলাম। 

রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে এক সাংবাদিক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

এদিকে শেখ হাসিনাকে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে ভারত থেকে দেশে ফেরাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে রেখেছেন চিফ প্রসিকিউটর। সে বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে অগ্রগতি জানানো হয়নি।

শুধু শেখ হাসিনাই নয়, দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাসান মাহমুদসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে প্রসিকিউশন।

গত ১০ নভেম্বর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল গণমাধ্যমকে জানান, হাসিনাসহ জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় অভিযুক্ত পলাতক সকল আসামিকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করতে যাচ্ছে সরকার।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পুরাতন ভবনের সংস্কারকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্র পৃথিবীর যে দেশেই থাকুক, ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদের ধরে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করতে গত ১০ নভেম্বর ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

১২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা গণহত্যা, গুমসহ অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত এবং মামলার আসামি। তবে তিনি পালিয়ে গেছেন এবং বর্তমানে দেশের সীমানার বাইরে অবস্থান করছেন।

এরকম একজন অপরাধীকে গ্রেফতার করতে বা তার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করতে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়া হয়েছে।'

তিনি আরও জানিয়েছিলেন, চিঠিতে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানানোর পাশাপাশি ইন্টারপোলকে গ্রেপ্তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত করার বাধ্যবাধকতার কথা জানানো হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আনিসুল হকের তিন ব্যাংকে ২১ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে দুদক
নরসিংদীতে ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের বিষয়ে নিশ্চিত নয় ট্রাইব্যুনাল
ভারতের কাছে হেরে বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গ
এক দশক পর ফিরলো ‘আমার দেশ’ পত্রিকা
৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার: হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু দুদকের
ইয়েমেনে হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন বিমান হামলা
লোকসানের মিথ্যা গল্প শোনাচ্ছে ব্রিডার ফার্মগুলো
একজন ঢাকা অন্যজন কলকাতায় সংসার ভাঙছে মিথিলার
আইনজীবী আলিফ হত্যা: তদন্ত কমিটির সব সদস্যের পদত্যাগ
যে কোন সময় বাংলাদেশের পাশে নতুন দেশ
গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর মৃত্যু
বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা আসবে না: ড. ইউনূস
  সংকট কাটছে, মেট্রোর যাত্রীদের সুখবর দিল ডিএমটিসিএল
ভারতের বিপক্ষে ১১৮ রান করলেই এশিয়া কাপ ঘরে ‍তুলবে বাংলাদেশ
বিরামপুরে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম আটক
শেখ হাসিনা নিজ হাতে তার বাবাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করেছে: গয়েশ্বর
চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা
জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা