সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ | ৮ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

শেখ কামাল : প্রতিভাপ্রদীপ্ত সৃজনশীল সংগঠক

মাত্র ২৬ বছরের জীবনে বাঙালির সংস্কৃতি ও ক্রীড়াক্ষেত্রের এক বিরল প্রতিভাবান সংগঠক ও উদ্যোক্তা হিসেবে শেখ কামাল এক অসামান্য উচ্চতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। দেশ ও সমাজভাবনায় সচেতন বহুমাত্রিক প্রতিভার এই সংগঠক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি রাজনীতিতেও ছিলেন সমান তৎপর। আজ ৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের জন্মদিন। ১৯৪৯ সালের এইদিনে তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

খুব ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি ছিল তাঁর প্রচণ্ড ঝোঁক। ঢাকার শাহীন স্কুলে পড়াকালীন স্কুলের খেলাধুলার প্রত্যেকটি আয়োজনে তিনি ছিলেন অপরিহার্য ও অবিচ্ছেদ্য অংশ। এরমধ্যে ক্রিকেটের প্রতি টানটা ছিল সবচেয়ে বেশি। দীর্ঘদেহী কার্যকর ফাস্ট বোলার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু একইসাথে বাঙালি এবং মুজিবপুত্র হবার কারণে অবিভক্ত পাকিস্তানের জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেটে নিদারুণভাবে উপেক্ষিত থেকেছেন। তরুণ বয়সে আজাদ বয়েজ ক্লাবের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন এবং ওই ক্লাবের হয়েই দীর্ঘদিন প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলেছেন। ঢাকার আজাদ বয়েজ ক্লাব তখন প্রতিভাবান তরুণ ক্রিকেটারদের লালনক্ষেত্র।

খেলাধুলার পাশাপাশি সংস্কৃতিচর্চার প্রতি তাঁর আগ্রহ ও কর্মকাণ্ডের ব্যাপকতা তাঁর প্রতিভা ও মননের এক বিশাল দিককে উন্মোচিত করে। অভিনয়, সংগীত চর্চা, বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতাসহ সকল ক্ষেত্রে তিনি তার মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। শাহীন স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ হলের ছাত্র হিসেবে হলের বাস্কেটবল টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন শেখ কামাল। বাস্কেটবলে তাঁর অসামান্য দক্ষতার কারণে তাঁর সময়ে বাস্কেটবলে সলিমুল্লাহ হল শেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছিল।

৬৯ সালে পাকিস্তান সামরিক জান্তা সরকার রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ করলে তার প্রতিবাদের ভাষা তথা অস্ত্র হয়ে ওঠে রবীন্দ্র সংগীত। সেসময় বিভিন্ন আন্দোলন পরিস্থিতিতে রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে অহিংস পন্থায় প্রতিবাদের উদাহরণ সৃষ্টি করেন শেখ কামাল। সেসময় তিনি রবীন্দ্র সংগীত শিল্পীদের সংগঠিত করেন এবং রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি শিল্পী জাহিদুর রহিমকে দিয়ে বিভিন্ন সভা ও জমায়েতে গাওয়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর স্বাভাবিকভাবেই তার কর্মপরিধির বিস্তার ঘটে এবং অনেক ব্যাপকতা পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে একজন ভালো অভিনেতা হিসেবে তার সুখ্যাতি গড়ে ওঠে। নাট্য সংগঠন ঢাকা থিয়েটারের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তার অভিনীত নাটক নিয়ে ভারত সফরও করেছেন। কোলকাতার মঞ্চে মুনীর চৌধুরীর বিখ্যাত নাটক কবর মঞ্চায়ন করেন। অভিনয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন বাংলা একাডেমি মঞ্চেও। সেতার বাজাতে খুব পছন্দ করতেন তিনি। ছায়ানটের সেতার বাদন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন শেখ কামাল। ওস্তাদ ফুল মোহাম্মদের কাছে নিজ বাড়িতে শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিতেন। খেলাধুলার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ ও খেলাধুলার প্রসারের লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শক্তিশালী ও জনপ্রিয় ক্লাব আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তার বড় বোন বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ধানমণ্ডি এলাকায় কোনো ধরনের খেলাধুলার ব্যবস্থা ছিল না। সে (শেখ কামাল) উদ্যোগ নেয় এবং ওই অঞ্চলের সবাইকে নিয়ে আবাহনী গড়ে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের পরে ও এই আবাহনীকে শক্তিশালী করে।’

আবাহনী ক্রীড়াচক্র বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী বিপ্লবের জন্ম দেয়। প্রতিষ্ঠিত ও জনপ্রিয় ক্লাব মোহামেডানকে পেছনে ফেলে আবাহনীকে তিনি গৌরবের উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ক্রমান্বয়ে সারাদেশে আবাহনীর শাখা গঠনে তৎপর হন। তরুণ সমাজের চিত্তের প্রফুল্লতা নিশ্চিত করা ও বিপথে ধাবিত না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রয়োজনীয়তা তিনি উপলদ্ধি করেছেন সবসময়। এবং মাত্র ২৬ বছরের নাতিদীর্ঘ জীবনে তাকে সে অনুযায়ী নানমুখি উদ্যোগ নিতে দেখা যায়। বন্ধু শিল্পী ও সহকর্মীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী’। বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের সাথে মেশার ক্ষেত্রে তার মধ্যে কেউ কোনদিন কোনদিন অহমিকার প্রকাশ দেখেননি। বন্ধুবৎসল শেখ কামাল জীবনযাপনে ছিলেন খুবই সাধারণ। দেশের স্থপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পুত্র হওয়া সত্ত্বেও কোনরূপ ক্ষমতার অপব্যবহার তিনি করেননি।

ধানমণ্ডির বত্রিশ নম্বরের তিনতলায় শেখ কামালের বসবাসের ঘরটিতে থাকত নানারকম বাদ্যযন্ত্রের বাদ্যযন্ত্রের সমাহার। যে মানুষটির দিন শুরু হতো সংগীত, পিয়ানো ও সেতার বাদনের মধ্য দিয়ে, তারপর ফুটবল, ক্রিকেটের পর্ব শেষ করে সন্ধ্যায় ব্যস্ত হতেন নাটকের মঞ্চে অথবা মহড়ায় তিনি রুচি ও মানসিকতায় কেমন মানুষ ছিলেন তা অনুমান করতে কারো কষ্ট হবার কথা না। শেখ কামাল তারুণ্যের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর সময়ে সহকর্মী ও সতীর্থদের মাঝে যে উদ্দীপনা ছড়িয়েছেন, তরুণ ও যুবসমাজের মধ্যে তা একটি সাংস্কৃতিক চেতনার জাগরণ ঘটিয়েছিল। বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনার আলোকে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল, সেই চেতনাকে লালন করেই শেখ কামালের জীবনের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে দেখা যায়। আজকের বাংলাদেশে মূল্যবোধের যে চরম অবক্ষয় আমরা লক্ষ্য করি, তখন শেখ কামালের মতো সংগঠকের সৃজনশীল রুচি ও মননের অধিকারী সংগঠকের অভাব আমরা খুব করে অনুভব করি। সব ধরনের কুপমন্ডুকতা ও প্রতিক্রিয়াশীলতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে একটি ইতিবাচক সমাজ গঠনের তাগিদ তার মধ্যে সর্বদা জাগরুক ছিল। যুব ও তরুণ সমাজের মনন গঠনের উদ্দেশ্য থেকেই তিনি ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে একটি সৃজনশীল প্রজন্ম তৈরির লড়াইয়ে সর্বদা সচেষ্ট থেকেছেন।

পারিবারিক পরিবেশ থেকেই এ সবকিছুর পাশাপাশি রাজনীতির পাঠও গ্রহণ করেছিলেন শেখ কামাল। বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধারাবাহিক আপসহীন সংগ্রামের বিষয়টি প্রত্যক্ষ করার ফলে বাঙালি জাতীয়বাদের চেতনায় তিনি নিজেকে তৈরি করেছেন। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের জন্মের বছরেই শেখ কামালেরও জন্ম। আওয়ামী লীগের পথচলার যে ধারাবাহিকতা, বঙ্গবন্ধুর জীবন পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায়, তার প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই শেখ কামালের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত হয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ শিরোনামের স্মৃতিকথায় এক জায়গায় লিখেছেন- “কামাল তখন অল্প কথা বলতে শিখেছে। কিন্তু আব্বাকে ও কখনো দেখেনি, চেনেও না। আমি যখন বারবার আব্বার কাছে ছুটে যাচ্ছি, আব্বা আব্বা বলে ডাকছি, ও অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছে। গোপালগঞ্জ থানায় একটা বড় পুকুর আছে, যার পাশে বড় খোলা মাঠ। ওই মাঠে আমরা দুই ভাইবোন খেলা করতাম ও ফড়িং ধরার জন্য ছুটে বেড়াতাম। আর মাঝে মাঝেই আব্বার কাছে ছুটে আসতাম।

অনেক ফুল, পাতা কুড়িয়ে এনে থানার বারান্দায় কামালকে নিয়ে খেলতে বসেছি। ও হঠাৎ আমাকে জিজ্ঞেস করল, ‘হাসু আপা, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি?’ কামালের সেই কথা আজ যখন মনে পড়ে, আমি তখন চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না।” বঙ্গবন্ধুর পুত্র-কন্যাদেরকে এমনই সংগ্রামমুখর পথ পাড়ি দিয়ে বেড়ে উঠতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতার সুদীর্ঘ সংগ্রামের পথে বাঙালির উপর যত আঘাত এসেছে, প্রত্যক্ষভাবে ওই পরিবারটিতে তা স্পর্শ করে গেছে। পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জেল-জুলুমের যে সংগ্রামমুখর জীবন, তা প্রত্যক্ষ করেই বেড়ে ওঠা শেখ কামালের জীবনের দীক্ষাও ছিল সবসময় মানুষ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে নানাভাবে ভূমিকা রাখার।

ছাত্রলীগের কর্মী ও সংগঠক হিসেবে তিনি ৬ দফা, ১১ দফা আন্দোলন এবং ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে বীরোচিত অংশগ্রহণ ছিল তার। অসামান্য সাংগঠনিক দক্ষতার অধিকারী শেখ কামাল সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন্ড লাভ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ষড়যন্ত্রকারীদের পৈশাচিক হামলায় নিহত হবার সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের এমএ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন। এর মাত্র এক মাস আগে ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু খেতাবপ্রাপ্ত দেশসেরা অ্যাথলেট সুলতানা খুকুকে তিনি পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন।

১৫ আগস্ট ভোররাতে বাঙালির ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে বঙ্গবন্ধুসহ সপরিবারে নিহত না হলে, বঙ্গবন্ধুর সুমহান নেতৃত্বের পাশাপাশি বাংলাদেশ পেতে পারতো বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী এই সংগঠক ও নেতাকে। তার মেধা ও রুচির প্রয়োগ ঘটিয়ে তরুণ প্রজন্মকে যে সুন্দর ও সম্ভাবনার পথ তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন, সেই পথটি যেন আমরা খুঁজে নিতে পারি। ৭৪তম জন্মদিনে অনন্য সংগঠক শেখ কামালের প্রতি আমার হৃদয়ের গভীর থেকে প্রগাঢ় শ্রদ্ধা।

লেখক : সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

Header Ad
Header Ad

প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যায় আটক ৩ জন

প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিহত শিক্ষার্থী পারভেজ। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (২১ এপ্রিল) ভোরে তাদের আটক করা হয় বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার। তবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

এর আগে, শনিবার বিকেলে পারভেজের সহপাঠীদের সঙ্গে পাশের ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে ঘিরে হাসাহাসির জেরে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পরপরই পারভেজকে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি দল ঘিরে ধরে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পারভেজের মরদেহ নেওয়া হয় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে, যেখানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রাত ১০টার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকার কাইচান গ্রামে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

এই ঘটনায় পারভেজের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অভিযুক্তরা হলেন—মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জহর গিফফারি পিয়াস (২০), মো. মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজি (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ঘটনার সূত্রপাত যাকে ঘিরে, সেই ‘কথিত প্রেমিকা’ শনাক্ত হলেও মামলায় তার নাম নেই।

পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ চলছে।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ ১৪ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা: আবহাওয়া অফিস

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১৪টি অঞ্চলে আজ ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে আবহাওয়া অফিসের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এই পূর্বাভাস জানানো হয়।

ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বগুড়া, পাবনা, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং সিলেট।

এসব অঞ্চলের উপর দিয়ে পরবর্তী দুই থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে ৪৫-৬০ কিলোমিটার বা তারও বেশি গতিতে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সকাল থেকেই রাজধানীতে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। সকাল ৮টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত আকাশ কালো মেঘে ঢাকা ছিল। ঢাকায় আজ সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ছয় ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে সাময়িক মেঘলা থাকতে পারে। দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৮-১২ কিমি বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে ৩০-৪০ কিমি পর্যন্ত বাড়তে পারে। দিনের তাপমাত্রাও সামান্য বাড়তে পারে।

সকাল ৬টায় ঢাকায় রেকর্ড করা তাপমাত্রা:

- সর্বোচ্চ: ২৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস
- সর্বনিম্ন: ২৮.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস
- বাতাসে আর্দ্রতা: ৮৭ শতাংশ

চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

সূত্র: আবহাওয়া অধিদপ্তর

Header Ad
Header Ad

গ্রীষ্মে স্বাভাবিক থাকবে বিদ্যুৎ সরবরাহ: বিপিডিবি চেয়ারম্যান

ছবি: সংগৃহীত

চলতি গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রেজাউল করিম। তিনি জানান, বিদ্যমান সব বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল রাখতে কাজ করে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ, যাতে গ্রীষ্মকালে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করা যায়।

বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বর্তমানে গড়ে দৈনিক ১৪,০০০ থেকে ১৪,৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, যেখানে গড় চাহিদা প্রায় ১৫,০০০ মেগাওয়াট। গ্রীষ্মে এই চাহিদা সর্বোচ্চ ১৭,৮০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যেখানে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭,২৬০ মেগাওয়াট।

গত শনিবার দেশে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ছিল ১১,৯৭১ মেগাওয়াট, যার বিপরীতে চাহিদা ছিল ১৪,৪৫১ মেগাওয়াট। রবিবার কর্মদিবস হওয়ায় চাহিদা আরও বেড়ে যায়। যদিও গ্রীষ্মে প্রায় ৭৫০ মেগাওয়াট ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে, বিপিডিবি মনে করে এই ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।

চেয়ারম্যান জানান, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পেছনে কারিগরি ত্রুটি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ (যেমন ঝড় বা বৃষ্টিপাত) একটি বড় কারণ। এছাড়া গ্যাসের চাহিদা পূরণে সরকার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম প্রধান জ্বালানি। ইতোমধ্যে স্পট মার্কেট থেকে দুটি কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকার। এর আগে মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি থেকেও এলএনজি আনা হয়েছে।

বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, লোডশেডিং কমাতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকারি অফিস, ব্যাংক, বাসাবাড়ি ও মসজিদে এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে না নামানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এভাবে প্রতিদিন ২,০০০ থেকে ৩,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষায় সরকারের নানা উদ্যোগের কারণে চলতি গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র: বাসস

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যায় আটক ৩ জন
ঢাকাসহ ১৪ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা: আবহাওয়া অফিস
গ্রীষ্মে স্বাভাবিক থাকবে বিদ্যুৎ সরবরাহ: বিপিডিবি চেয়ারম্যান
পরমাণু কর্মসূচি থেকে না সরার ঘোষণা ইরানের
পর্যটকদের ভ্যাটের অর্থ ফেরত দেবে সৌদি সরকার
আজ কাতার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
ভুল বোঝাবুঝিতে গাজায় ১৪ জরুরি সেবাদাতা কর্মীকে হত্যা!
জেলা প্রশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দিল আওয়ামী লীগ
বিয়ের আশ্বাসে স্বামীর ১১ লাখ টাকা নিয়ে ঘর ছাড়লেন নারী, প্রেমিকের ফাঁদে পড়ে দলবেঁধে ধর্ষণের শিকার
বিয়ে না করেই পঞ্চাশে অন্তঃসত্ত্বা অভিনেত্রী, তোলপাড় নেটদুনিয়া
পারভেজের মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে মাতম, পাগলপ্রায় মা-বাবা ও একমাত্র বোন
বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি কিউবা মিচেল
আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করলেন নুর
২০২৫ শেষ হওয়ার আগেই ৫০ সেঞ্চুরিতে দেশের প্রথম এনামুল হক
ভিসা বাতিল করায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভারতীয় ও চীনা শিক্ষার্থীদের মামলা
একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৬ প্রকল্প অনুমোদন
বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি
এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল
দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া নিয়ে বিএনপির অভিমত
ফাইয়াজের মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার নেই: আসিফ নজরুল