সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

অদম্য বিনম্র সংস্কৃতিবান শেখ কামাল

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ৭৪তম শুভ জন্মদিন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে শেখ কামাল দ্বিতীয় ছিলেন। তিনি শাহীন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (এসএসসি), ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট (এইচএসসি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী ও সংগঠক হিসেবে ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শেখ কামাল সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। আমার স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে ’৬৯-এর অগ্নিঝরা গণআন্দোলনের স্মৃতি। যে আন্দোলনে শেখ কামালের প্রতিদিনের উপস্থিতি ছিল সবার জন্য তুমুল উৎসাহব্যঞ্জক। এই আন্দোলনে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংগঠিত করে মিছিলসহ বটতলায় সমবেত হতেন। আমার পরম স্নেহভাজন ছিলেন শেখ কামাল। মনে পড়ে, ’৬৯-এ পাকিস্তান সামরিক জান্তা সরকার ধর্মীয় উগ্রতার পরিচয় দিয়ে রবীন্দ্রসংগীত নিষিদ্ধ করে। শেখ কামাল তখন রবীন্দ্র সংগীতশিল্পীদের সংগঠিত করেন এবং রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি খ্যাতিমান শিল্পী জাহিদুর রহিমকে দিয়ে বিভিন্ন সভা ও অনুষ্ঠানে গাওয়ানোর উদ্যোগ নেন। বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতার সন্তান তিনি, জন্ম থেকেই তার ধমনীতে নেতৃত্বগুণ আর বাঙালি জাতীয়তাবোধের চেতনা। সংস্কৃতিবান শেখ কামালের প্রতিবাদের ভাষা ছিল রবীন্দ্রসংগীত। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই বিশ্বকবির গান গেয়ে অহিংস প্রতিবাদের অসাধারণ উদাহরণ রেখেছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করে হাতিয়ার তুলে নিয়ে দেশমাতৃকার মুক্তির যুদ্ধে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর এডিসি ছিলেন শেখ কামাল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে সংগঠিত করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার আশাবাদ ছিল, দেশ স্বাধীন হলে বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্রের ছবিটাই পাল্টে দেবেন এবং দেশকে অনন্য উচ্চতায় আসীন করবেন। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া দেশ পুনর্গঠনে নিজের অসামান্য মেধা ও অক্লান্ত কর্মক্ষমতা নিয়ে জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে ঝাঁপিয়ে পড়েন শেখ কামাল। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান। সেখান থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে শেখ কামালের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি ছায়ানট থেকে সেতার শিক্ষার তালিম নেন। পড়াশোনা, সংগীতচর্চা, অভিনয়, বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতা থেকে শুরু করে বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরার চেষ্টায় সদা-সর্বদা নিয়োজিত ছিলেন শেখ কামাল। অধ্যয়নের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তার পদচারণায় ছিল মুখর। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল তার বন্ধুদের সহযোগে প্রতিষ্ঠা করেন নাট্যদল ‘ঢাকা থিয়েটার’ এবং আধুনিক সংগীত সংগঠন ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে তিনি ছিলেন সুপরিচিত সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠক এবং অভিনেতা। আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি দেশের ক্রীড়াজগতে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ‘স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী’র প্রতিষ্ঠাও তাকে অমরত্ব দান করেছে। প্রকৃতপক্ষে শেখ কামাল ছিলেন একজন ক্রীড়া ও সংস্কৃতিমনা সুকুমার মনোবৃত্তির মানুষ। তিনি কখনো ব্যবসায়িক কার্যকলাপে জড়িত হননি, অনর্থক ছুটেননি অর্থের পেছনে।

শাহীন স্কুলের ছাত্র থাকাকালে স্কুলের প্রতিটি খেলায় তিনি ছিলেন অপরিহার্য। এর মধ্যে ক্রিকেট ছিল তার প্রিয়। তৎকালীন অন্যতম উদীয়মান পেসার ছিলেন তিনি। ‘আজাদ বয়েজ ক্লাব’ তখন কামালদের মতো উঠতি প্রতিভাদের আশ্রয়স্থল। এখানেই শেখ কামাল প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলেছেন দীর্ঘদিন। দেশ স্বাধীনের পর ’৭২-এ ‘আবাহনী সমাজকল্যাণ সংস্থা’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংস্থার নামে সংগঠিত করেন ফুটবল দল ‘ইকবাল স্পোর্টিং’, আর ক্রিকেট, হকির দল ‘ইস্পাহানী স্পোর্টিং’। পরে এসব দলের সমবায়ে নবোদ্যমে যাত্রা শুরু করে ‘আবাহনী ক্রীড়া চক্র’। ফুটবল, ক্রিকেট, হকি এই খেলাগুলোতে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন ছিল কামালের। তার স্বপ্ন ছিল একদিন আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশ হবে অপরাজেয় অপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রীড়াশক্তি। সত্যিই সে বেঁচে থাকলে সেটা সম্ভব ছিল। স্বপ্ন তার দৃষ্টিসীমা ছাড়িয়ে বিস্তৃত হয়েছিল বহুদূর অবধি। ফুটবলের উন্নতির জন্য ’৭৩-এ আবাহনীতে বিদেশি কোচ বিল হার্ট-কে নিযুক্ত করেন। যোগ্যতা, দক্ষতা আর দেশপ্রেমের অসামান্য স্ফূরণে শেখ কামাল অল্প দিনেই বদলে দিয়েছিলেন সদ্য স্বাধীন একটা দেশের ক্রীড়া ক্ষেত্র। শুধু ক্রীড়াই নয়, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির সব শাখাতেই ছিল তার মুন্সিয়ানা ও অসামান্য সংগঠকের ভূমিকা।

শেখ কামালের নবপরিণীতা বধূ সুলতানা খুকু ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। দেশজোড়া খ্যাতি ছিল তার। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার পরিচিতি ছিল এক প্রতিভাবান অ্যাথলেট হিসেবে। নিজে পছন্দ করে বিয়ে করেছিলেন। ’৭৫-এর ১৪ জুলাই যেদিন গণভবনে শেখ কামাল ও শেখ জামাল দুই ভাইয়ের বিয়ে হয় সেদিন আমি সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারিনি। কেননা ওই বছরের ১১ জুলাই আমার বড়ো ভাই পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) মৃত্যুবরণ করেন। আমি তখন ভোলায়। বিয়ের দিন ভোলার পুলিশ স্টেশনে ফোন করে বঙ্গবন্ধু আমার খবর নিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘জামাল-কামালের বিয়ের আসরে সবাই আছে। শুধু তুই নেই।’ কতো বড়ো মহান নেতা যে আমার মতো ক্ষুদ্র কর্মীর কথাও সেদিন তিনি ভোলেননি। বিয়ের অল্প কিছুদিন পর ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫-এ সেনাবাহিনীর কতিপয় বিশ্বাসঘাতক উচ্ছৃঙ্খল সেনাসদস্যের হাতে পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও নববিবাহিতা দুই বধূ, দুই ভাই শেখ জামাল, শেখ রাসেলসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নির্মম মৃত্যুকে বরণ করতে হয় তাকে।

জাতির পিতা জীবনের যৌবনের ১২ বছর কারান্তরালে কাটিয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে শত-দুঃখ-কষ্টের মধ্যে থেকেও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা কখনোই কোনো ক্ষেদোক্তি প্রকাশ করেননি। বরং পরিবারের সদস্যরা সেসব সগৌরবে মেনে নিয়ে বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের অংশে পরিণত হয়েছেন। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, দেশ স্বাধীনের পর কুচক্রী মহল শেখ কামালের বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট অপপ্রচার চালাবার চেষ্টা করেছিল। যা ছিল সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বাস্তবে টেকেনি।
শেখ কামালের আচার-আচরণ কেমন ছিল সে সম্পর্কে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবুল ফজল রচিত ‘শেখ মুজিব: তাঁকে যেমন দেখেছি’ গ্রন্হ থেকে কিছু অংশ তুলে ধরছি। নাতিদীর্ঘ এ গ্রন্হটির ৪৭-৪৮ এ দুই পৃষ্ঠা জুড়ে আছে একটি স্মৃতিচারণমূলক লেখা। লেখাটির শিরোনাম ‘শেখ কামাল: স্মৃতিচারণ’।

তিনি লিখেছেন, “১৭ই মার্চ শেখ সাহেবের জন্মদিন। স্বাধীনতার পর ছাত্রলীগ প্রতি বছর এ দিনটি পালন করে থাকে। ১৯৭৪-এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হওয়ার জন্য ঢাকার ছাত্রলীগ আমাকে অনুরোধ জানায়। আমি রাজি হলাম, তবে দিনে দিনে ফিরে আসতে চাই এ শর্তে। তারা সেভাবে বিমানের টিকেট পাঠিয়ে দিয়েছিল।

১৭ তারিখ ঢাকা বিমানবন্দরে নেমে আমি চিন্তা করতে লাগলাম, ওরা আমাকে নিতে আসবে কি না, এলেও আমি চিনতে পারব কি না। ওদের কারো সঙ্গে তো আমার দেখা নেই। ...একধারে দেখলাম একটা ছিপছিপে গোঁফওয়ালা ছেলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বেশ লম্বা বলে সহজে চোখে পড়ে। ছেলেটাকে আমি চিনতে পারলাম না। লাউঞ্জের প্রবেশপথে ছেলেটি এগিয়ে এসে বলে, ‘আপনাকে নিতে এসেছি।’ বলেই আমার হাত থেকে ব্যাগটি আমার আপত্তি অগ্রাহ্য করে নিজের হাতে নিয়ে নিল। নিশ্চিন্ত হওয়ার জন্য জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এসেছ? ‘জ্বী হ্যাঁ।’ নম্র কণ্ঠে জবাব দিল ছেলেটি।

ওর পেছনে পেছনে হেঁটে এসে একটা গাড়িতে উঠে বসলাম। ড্রাইভারের সিটে গিয়ে বসল ও নিজে এবং শুরু করল ড্রাইভ করতে। তার আগে ও জেনে নিয়েছে আমি কোথায় উঠব। গাড়িতে তৃতীয় ব্যক্তি নেই। কিছুদূর যাওয়ার পর আমার মনে হঠাৎ কৌতূহল হলো, জিজ্ঞাসা করলাম- তুমি কী কর? বললে, ‘অনার্স পরীক্ষা দিয়েছি সোশিয়োলজিতে।’ ঢাকা থেকে? ‘জ্বী হ্যাঁ।’ শেখ সাহেবের সঙ্গে ছেলেটির দৈহিক সাদৃশ্য আমার মনে ধীরে ধীরে স্পষ্টতর হয়ে উঠেছিল। জিজ্ঞাসা করলাম, তোমার নাম। ‘শেখ কামাল।’ ও তুমি আমাদের শেখ সাহেবের ছেলে।”

এই ছিলেন শেখ কামাল। জাতির পিতার সন্তান হওয়া সত্ত্বেও তার মধ্যে কোনো অহমিকাবোধ ছিল না। তিনি ছিলেন বিনয়ী ও মার্জিত। দাম্ভিকতা ছিল তার স্বভাববিরুদ্ধ। পরোপকারী, বন্ধুবৎসল ও মার্জিত শেখ কামালের বিনম্র আচরণে মুগ্ধ হতো সকলেই।

পরিশেষে, কামালের শৈশবের একটি স্মৃতি উদ্ধৃত করছি। যে স্মৃতিকথাটি পাঠ করলে দু’চোখ পানিতে ভরে আসে, অশ্রু সংবরণ দুঃসাধ্য হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ শিরোনামের লেখায় এই স্মৃতিকথা লিপিবদ্ধ করেছেন। “১৯৪৯ সালে আমার আব্বা গ্রেপ্তার হন। আমি তখন খুবই ছোট্ট আর আমার ভাই কামাল কেবল জন্মগ্রহণ করেছে। আব্বা ওকে দেখারও সুযোগ পাননি। একটানা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি বন্দি ছিলেন। সে সময় আমাদের দুই ভাইবোনকে নিয়ে আমার মা দাদা-দাদির কাছেই থাকতেন। একবার একটা মামলা উপলক্ষে আব্বাকে গোপালগঞ্জ নিয়ে যাওয়া হয়। কামাল তখন অল্প কথা বলা শিখেছে। কিন্তু আব্বাকে ও কখনও দেখেনি, চেনেও না। আমি যখন বার বার আব্বার কাছে ছুটে যাচ্ছি আব্বা-আব্বা বলে ডাকছি ও শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছে। গোপালগঞ্জ থানায় একটা বড় পুকুর আছে, যার পাশে বড় খোলা মাঠ। ওই মাঠে আমরা দুই ভাইবোন খেলা করতাম ও ফড়িং ধরার জন্য ছুটে বেড়াতাম। আর মাঝে মাঝেই আব্বার কাছে ছুটে আসতাম। অনেক ফুল, পাতা কুড়িয়ে এনে থানার বারান্দায় কামালকে নিয়ে খেলতে বসেছি। ও হঠাৎ আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, ‘হাসু আপা, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি।’ কামালের সেই কথা আজ যখন মনে পড়ে আমি তখন চোখের পানি রাখতে পারি না।”

ঘাতকের বুলেট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। ঘাতকেরা চেয়েছিল বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে। তারা জানত জাতির পিতার সন্তানেরা মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ধারক-বাহক। সেজন্য তারা শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেল কাউকেই রেহাই দেয়নি। সেদিন জাতির পিতার দুই কন্যা বিদেশে থাকায় ঘাতকের বুলেট তাদের স্পর্শ করতে পারেনি। ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের পর ’৮১তে আমরা দলীয় ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার হাতে শহীদের রক্তে ভেজা দলীয় পতাকা তুলে দেই। সেই পতাকা যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে হাতে তুলে নিয়ে জাতির পিতার আদর্শ সমুন্নত রেখে তিনি আজ দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে আসীন করার যে স্বপ্ন শেখ কামাল দেখতেন সেই অসমাপ্ত কাজটিও তারই পৃষ্ঠপোষকতায় সাফল্যের সঙ্গে বাস্তবায়িত করে চলেছেন।

লেখক: আওয়ামী লীগ নেতা; সংসদ সদস্য; সভাপতি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
tofailahmed69@gmail.com

এসএন 

Header Ad
Header Ad

বিয়ে না করেই পঞ্চাশে অন্তঃসত্ত্বা অভিনেত্রী, তোলপাড় নেটদুনিয়া

বলিউড অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল। ছবি: সংগৃহীত

বলিউড অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল আবারও উঠে এসেছেন আলোচনার কেন্দ্রে। তবে এবার কোনো সিনেমা বা গ্ল্যামার নিয়ে নয়, বরং ব্যক্তিগত জীবনের একটি রহস্যজনক ইঙ্গিত নিয়েই সরব নেটিজেনরা। ৪৯ বছর বয়সেও তার স্টাইল ও সৌন্দর্যে মোহিত ভক্তরা, কিন্তু সম্প্রতি দুবাইতে ছুটি কাটাতে গিয়ে পোস্ট করা একটি ছবিতে তাকে ঘিরে শুরু হয়েছে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার জল্পনা।

সবুজ মনোকিনিতে একটি ম্যাঙ্গো আইসক্রিম হাতে, খোলা চুল, চোখে সানগ্লাস আর মাথায় স্টাইলিশ টুপি পরে ক্যামেরার দিকে পোজ দিয়েছেন আমিশা। সাধারণত এমন ছবিতে ভক্তরা প্রশংসায় ভরিয়ে দেন কমেন্ট বক্স। তবে এবার নজর কাড়ে তার পেট। নেটিজেনদের একাংশ মনে করছেন, ছবিতে ‘বেবি বাম্প’ স্পষ্ট। আর সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠছে— “তিনি কি অন্তঃসত্ত্বা?” কেউ লিখেছেন, “বিয়ের আগেই বেবি?” আবার কেউ লিখেছেন, “হে ভগবান, এটা কি সত্যি?”

 

বলিউড অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল। ছবি: সংগৃহীত

এ নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি আমিশা। তবে এর আগে ১৯ বছরের ছোট নির্বাণ বিড়লার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয়। একটি ছবি ঘিরে তখনো নেটদুনিয়ায় বেশ আলোচনা হয়েছিল, যেখানে নির্বাণকে ‘ডার্লিং’ বলে সম্বোধন করেন আমিশা, আর নির্বাণও তেমনি প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন।

বর্তমানে আমিশার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। এটি নিছক গুজব, আলো ছড়ানো একটি ছবি, না কি সত্যিই জীবনের নতুন অধ্যায়—তা সময়ই বলে দেবে। তবে একথা নিশ্চিত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় থাকতে অভিনেত্রী ভালোই জানেন কীভাবে দর্শকদের কৌতূহলী করে তুলতে হয়।

Header Ad
Header Ad

পারভেজের মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে মাতম, পাগলপ্রায় মা-বাবা ও একমাত্র বোন

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বনানীতে ছুরিকাঘাতে নিহত প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ছাত্রদল কর্মী পারভেজের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ছেলে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা ও একমাত্র বোন। কাঁদছে স্বজন ও গ্রামের মানুষ।

তুচ্ছ ঘটনায় প্রকাশ্যে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডে হতবাক সবাই। ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি স্বজন ও এলাকাবাসির। রাত ৯টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে পারভেজের লাশ।

সন্তান হারানো শোকে আজোড়ে কাঁদছেন আর বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা পারভীন আক্তার। বাবা জসিম উদ্দিন যেন শোকে পাথর। এলাকার প্রিয়মুখ পারভেজের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে কাঁদছে গ্রামের মানুষ।

মৃত্যুর আগের রাতে মায়ের সাথে শেষ কথা হয় পারভেজের। শেষবারের মতো ভিডিও কলে দেখেন ছেলের মুখ।

ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে কুয়েত প্রবাসী বাবা জসিম উদ্দিন বাড়ি এসেছেন রোববার ভোরে। একমাত্র ছেলের এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। সন্তান হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা বাবা জসিম উদ্দিন।

মা পারভীন আক্তার বলেন, 'যারা আমার ছেলেরে মারছে তাদের আমার সামনে আনো। আমি জিগাইতাম কেরে আমার ছেলের মারছে।'

বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, 'আমার আর বাইচ্চা থাইক্যা কি অইবো। আমার ছেলেই তো নাই। হাত-পা ভাইঙ্গা রাখতো, সারাজীবন পালতাম, খালি বাবা ডাকটা শুনতাম। যারা আমার ছেলে মারছে তাদের প্রকাশ্যে ফাঁসি চাই।'

বাবা বিদেশে থাকায় নিজের গ্রামের বাড়িতে নতুন একতলা বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন পারভেজ। কিন্তু সে বাড়িতে আর থাকা হলো না তার। ফিরেছে লাশ হয়ে। রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ আসে গ্রামের বাড়ি ভালুকার বিরুনীয়া ইউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে। লাশ আসার পর সৃষ্টি হয় হৃদয় বিধারক পরিবেশ। পাগল প্রায় মা-বাবা-বোনের আহাজারিতে কান্নার রোল পড়ে।

পারভেজের মৃত্যুর খবরে ভালুকার বিরুনীয়া ইউনিয়নের কাইচান গ্রামে ভিড় করেছেন এলাকার মানুষ। এলাকায় স্বজন, ও ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত পারভেজ ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত বলে জানান স্বজন ও এলাকার মানুষেরা। তাদের পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। ভিডিও ফুটেজে চিহ্নিত পারভেজের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসি দাবি জানান স্থানীয়রা।

পারভেজের পিতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা যুবদলের সহ প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, পারভেজের বাবা বিরুনীয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক নেতা। তাদের পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। পারভেজ এলাকায় আসলে বিএনপি ও ছাত্রদলের কর্মসূচি ও মিছিলে সবসময় অগ্রভাগে থাকতো।

এদিকে ছাত্রদল কর্মী পারভেজ হত্যার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে রোববার বিকেলে ভালুকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রদল ও স্থানীয়রা। এসময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক আধা ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে বিক্ষোভকারীরা। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

উল্লেখ্য গত শনিবার বিকেলে রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিল পারভেজ। এ ঘটনায় আটজনের নামসহ অজ্ঞাত আসামি করে বনানি থানায় মামলা করেছে নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি কিউবা মিচেল

বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি কিউবা মিচেল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসী ফুটবলারদের জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তির ধারা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। ইংল্যান্ডের ক্লাব সান্ডারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে খেলা ১৯ বছর বয়সী মাঝমাঠের খেলোয়াড় কিউবা মিচেল বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি ইমরুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কিউবাকে গতকাল একটি ই-মেইল পাঠানো হয়েছিল। আজ বিকেলে সেই ই-মেইলের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে তিনি আগ্রহী এবং পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুত আছেন।

জন্মসূত্রে ইংল্যান্ডের হলেও কিউবার মা বাংলাদেশের এবং বাবা জ্যামাইকান। ইতোমধ্যে সান্ডারল্যান্ডের হয়ে ৮টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তার ফুটবল যাত্রা শুরু হয়েছিল বার্মিংহাম সিটির যুব দলে।

এর আগে কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব কাভালরির ফুটবলার সামিত সোমও বাংলাদেশের হয়ে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যে তার জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে এবং পাসপোর্টের আবেদন প্রক্রিয়াধীন।

ডেনমার্কপ্রবাসী মিডফিল্ডার জামাল ভূঁইয়ার পথ ধরে প্রবাসী ফুটবলারদের বাংলাদেশ দলে খেলার এই ধারা নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। হামজা চৌধুরীর অভিষেকের পর থেকেই বিষয়টি ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহও বেড়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিয়ে না করেই পঞ্চাশে অন্তঃসত্ত্বা অভিনেত্রী, তোলপাড় নেটদুনিয়া
পারভেজের মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে মাতম, পাগলপ্রায় মা-বাবা ও একমাত্র বোন
বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি কিউবা মিচেল
আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করলেন নুর
২০২৫ শেষ হওয়ার আগেই ৫০ সেঞ্চুরিতে দেশের প্রথম এনামুল হক
ভিসা বাতিল করায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভারতীয় ও চীনা শিক্ষার্থীদের মামলা
একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৬ প্রকল্প অনুমোদন
বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি
এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল
দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া নিয়ে বিএনপির অভিমত
ফাইয়াজের মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার নেই: আসিফ নজরুল
ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক ছাত্রীকে ৭ দিন ধরে আটকে ২৩ জন মিলে ধর্ষণ!
বিরামপুরে পিকআপের ধাক্কায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যুবলীগ কর্মী মিঠু গ্রেফতার
ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল মুসলিম সমাজ, হায়দ্রাবাদে গণবিক্ষোভ
ফকিরাপুলে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ
আল-আকসা ভেঙে মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনা ফাঁস, ফিলিস্তিনের সতর্কবার্তা
শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে: চিফ প্রসিকিউটর
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ১৩৮ মিলিয়ন ডলার দেবে চীন : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই তিন রেকর্ড গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী