শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

আমার পদ্মা আমার জয় বাংলা

আর দুদিন পরেই প্রমত্তা পদ্মার উপরে স্বপ্নের সেতু উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে নতুন ইতিহাসের যে সূত্রপাত হতে যাচ্ছে-যথারীতি এই স্বপ্নের সারথি হচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর থেকেই তিনি একের পর এক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও সার্থক করে তোলার জন্যে উদয়স্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। এমন একটা সময় পদ্মা সেতুর সূচনা হতে যাচ্ছে যখন একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন ও উদযাপন শুরু হয়েছে। এখন থেকে ৭৩ বছর আগে যখন আওয়ামী লীগের স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছিল, সে সময় ভেতরে ভেতরে একটা মৌলিক রাজনৈতিক শক্তির জন্ম দেওয়ার ভাবনাটি ছিল আমাদের দেশের প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে এবং মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে। আওয়ামী লীগ হলো সেই রাজনৈতিক দল যে দলটি সর্বদা বাংলাদেশের মানুষের কথাই বলে এসেছে। মধ্যবিত্ত মানুষের চিন্তা-ভাবনা, আপামর জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষা, এদেশের মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা ও অন্তরের কথাগুলো দলটির জন্মের পর থেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নানাভাবে তা প্রতিফলিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ অবিনশ্বর একটা স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে তার নিজের যে অস্তিত্বের ঘোষণা করেছিল; তা আজও স্বগৌরবে বহমান।

আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে যখন প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করল সেই সময় পর্যন্ত দেশের রাজনীতি ছিল ভূস্বামী-ধনবান এবং সামন্ত শ্রেণির হাতে কব্জাগত। আওয়ামী লীগ হলো সেই রাজনৈতিক দল যে প্রথম রাজনীতিতে মধ্যবিত্ত, বুদ্ধিজীবী শ্রেণি ও গণমানুষের প্রবেশ ঘটিয়েছে এবং মানুষের চিন্তা-ভাবনার জগতটাকে প্রসারিত করার জন্যে প্রতি মুহূর্তে তাঁর নিজের অবস্থানকে প্রমাণ করেছে এবং মানুষের কাছে সুদৃঢ় করেছে। এই সুদীর্ঘ পথপরিক্রমা দলটির জন্য কোনোভাবেই সহজ ছিল না; নানা ঝড়-ঝঞ্ঝা, বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও কণ্টকাকীর্ণ ছিল পুরো সময়টিই। পাকিস্তানের তৈরি কাঠামোর ভেতর দিয়েই পাকিস্তানকে অস্বীকার করার ঐতিহাসিক ও সাহসী কাজটিই করেছিল আওয়ামী লীগ। বাঙালির নিজস্ব জাতিসত্তাকে রক্ষা করার বিষয়টি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম থেকেই খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বুজতে পেরেছিলেন এবং সেই অনুযায়ী তার লড়াই-সংগ্রামের পথে সেটিকে মৌলিক পাথেয় হিসেবে সর্বদা সম্মুখে রেখেছিলেন। আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলে এই বিষয়টি পরিস্কার হয়ে ওঠে যে রাজনীতিতে পদার্পণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর কলকাতার জীবন এবং পরবর্তী সময়েও তার রাজনৈতিক দর্শনের এটিই ছিল একটি অন্যতম মন্ত্র।

১৯৫৭ সালে বামেরা সরে গেলে আওয়ামী লীগ বিভক্ত হলো; তখন অনেকেই ভেবেছিলেন আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়ে গেল; অনেকে আবার দলটির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার শেষও দেখে ফেলল। কিন্ত না, আমরা দেখলাম-আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব মহিয়ায়, নিজস্ব আদর্শ ও বিশ্বাসের ভেতর দিয়ে আরো দুর্বার গতিতে ধাবিত হতে লাগলো এবং নিজেকে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করল। প্রকৃতপক্ষে, সাতান্নতে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের পুনর্জন্মই হলো।

আমরা যদি একাত্তরপূর্ব ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য করি, এটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে বাঙালি জাতির রয়েছে দীর্ঘ শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস, রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস। ’৪৭-এর দেশ ভাগের পর ২৩ বছর বৈষম্যে জর্জরিত হয় পূর্ব পাকিস্তান নামের এই ভূখণ্ডটি। আমরা দেখতে পাই, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে বীজ প্রোথিত হয়েছিল, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একাত্তরের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে তা পূর্ণতা পায়। তারই নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় হিংস্র পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সুদীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে অর্জিত হয় বহু-কাঙ্ক্ষিত বিজয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পথ ধরে আসে একাত্তর। ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে দাঁড়িয়ে জাতির পিতার সেই উদ্দাত্ত কণ্ঠের উচ্চারণই ছিল বাঙালি জাতির স্বাধীনতা ও মুক্তির চূড়ান্ত উচ্চারণ, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

যাকে ছাড়া অধরাই থেকে যেত বাঙালি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্ন, মুক্তির স্বপ্ন; তিনি হলেন বাঙালি জাতির কা-ারি হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি বিশ্বের চির বিস্ময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান; যার পুরোটা জীবন নিবেদন করেছিলেন এদেশের মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্যে; বিনিময়ে সমস্ত প্রকারের অত্যাচার-নির্যাতন-জেল-জুলুম সহ্য করে তিনি হয়েছিলেন নীলকণ্ঠ। লড়াই-সংগ্রামের এই সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে জাতির জনককে তার রাজনৈতিক জীবনে ৪ হাজার ৬৮২ দিনই কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে অতিবাহিত করতে হয়েছে! যার মধ্যে ব্রিটিশ আমলে সাত দিন ছাড়া বাকি ৪ হাজার ৬৭৫ দিনই পাকিস্তান সরকারের আমলে। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু তার জীবনের ১৪টি বছরই ছিলেন কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে!

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পরও বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে যেতে হয়; আইয়ুব খানের সামরিক আইন জারি করলে তাঁকে হতে গ্রেপ্তার হয়। ১৯৬২, ১৯৬৪ ও ১৯৬৫ সালে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। ছয় দফা উত্থাপনের পর জাতির পিতা যেখানে সমাবেশ করতে গেছেন, সেখানেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরপর ৬৬-তে আবার গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তি পান। শেষবার ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার পরপরই পাকিস্তান সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পাকিস্তানের কারাগারে তাঁকে হত্যা করার সকল পরিকল্পনাই শেষে ভেস্তে যায়। কিন্ত ৭৫-এ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে সফল হয়।
ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছিল বাংলাদেশের হৃদয় থেকে তার নাম চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেবে; ৭১-এ পরাজিত শক্তির করতলে আবার দেশটাকে নিপতিত করবে। কিন্তু বাস্তবতা তো এটাই যে, যতই সময় অতিক্রান্ত হচ্ছে ততই তিনি অধিকতর ঔজ্জল্য নিয়ে পরিব্যাপ্ত হচ্ছেন। তার দেশপ্রেম, তার দূরদর্শিতা, তার জাদুকরী সাংগঠনিক ক্ষমতা, তার মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, মানুষের স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্যে সারা জীবনের সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে একটি জাতিকে শোষণের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন, সেই ইতিহাস, সেই অমর কীর্তিকে ঘাতকেরা কি মুছে দিতে পেরেছে? বরং, সেই দেশটিই আজ পৃথিবীর বিস্ময়, বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ পুরো বিশ্বকে সম্মোহিত করে এগিয়ে চলেছে দোর্দ- প্রতাপে। যে দেশটির জন্যে বঙ্গবন্ধু তার সমগ্র জীবনকেই নিয়োগ করেছিলেন এবং যেই স্বপ্নগুলো তার অসম্পূর্ণ ছিল –সেই স্বপ্নগুলো আজ পর্যন্ত তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে পদদলিত করে একটি একটি করে দৃঢ়তার সঙ্গে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। ঘাতকেরা তাকেও বারংবার খুন করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। কিন্ত জাতীয় চার নেতাকে আমরা নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে দেখেছি। এ ছাড়াও, দলটির অসংখ্য নেতা-কর্মীর জীবন দিতে হয়েছে। সুতরাং, এই আওয়ামী লীগ যে আজ অবধি মানুষের প্রাণের সংগঠনে পরিণত হতে পেরেছে তার পেছনের কারগুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো মানুষের জন্যে দলটির বহু ত্যাগ স্বীকার।

 

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়।’ মুক্তিযুদ্ধেরও লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তি। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে সদ্যস্বাধীন দেশে ফিরে জাতির পিতা সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। ডাক দিয়েছিলেন কৃষি বিপ্লবের। আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন দুর্নীতি, কালোবাজারি, মুনাফাখোরী, লুটেরাদের বিরুদ্ধে। তাকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের ফলে উন্নয়নের সেই গতি থমকে দাঁড়ায়। রুদ্ধ হয় গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রা। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজকে পরিপূর্ণতা দানের লক্ষ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন- ২০২১’, ‘ভিশন ২০৪১’ এবং শতবর্ষ মেয়াদি ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ গ্রহণ করেছেন। এসব পরিকল্পনার অন্যতম লক্ষ্য হলো জাতিসংঘ ‘টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ২০৩০’ অর্জনসহ ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। কিন্ত কুচক্রীরা কি আর থেমে আছে? তারা নানা কথা বলে চলেছেন, নানা রকমের ষড়যন্ত্র করে চলেছেন; কিন্ত আওয়ামী লীগ তার পথে অবিচল থেকেছে। আওয়ামী লীগ তার নীতিতে অবিচল, তার আদর্শে অবিচল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিচল, অসাম্প্রদায়িক চিন্তায় অবচল। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের পথে এবং একটি অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্য-বঞ্চনাহীন সমাজ গঠনে নিরন্তর ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলছে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে যে রাজনৈতিক দল সেই দলটিই হলো আওয়ামী লীগ। এই দলের নেতৃত্বেই আজ জাতির জনকের আশংকা দূরীভূত হয়েছে তারই কন্যার হাতে। আজ দেশে মানুষের খাওয়ার চিন্তা নেই, কাপড়ের অভাব নেই। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো এক বিস্ময়কর স্বপ্নের প্রকল্পের সফলতার মুখ দেখছে জাতি এবং সেই অর্জন বিশ্বের মানুষের কাছে এক বিস্ময়ের নাম। যদি সপ্তম আশ্চর্যের পর পৃথিবীতে অষ্টম আশ্চর্যের কোনো কিছুকে বিবেচনা করা হয় সেটা হলো -এই পদ্মা সেতু; যার আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ১২০ বছর। এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের অপেক্ষায় সারা দেশের মানুষ তো বটেই; পৃথিবীর বহু দেশের মানুষ ও বিশেষজ্ঞরা অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা অবাক বিস্ময়ে ভাবছেন- এই দলটির কাণ্ডারি যেই মানুষটি তিনি কিভাবে সমস্ত অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারলেন!

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যে নৌকা প্রতীক ছিল সেই প্রতীককে আওয়ামী লীগ নিজের করে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত সেই প্রতীক আওয়ামী লীগ বহন করে চলেছে; যেই প্রতীক নদীমাতৃক বাংলাদেশেরই এক চিরন্তন প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বস্তুত, এটি সম্ভব হয়েছে দলটির গণমানুষের কল্যাণে রাজনীতির চর্চা, গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ও নৈতিক আদর্শের প্রতি অটল অবস্থানের কারণেই। সুতরাং, বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করেন এবং ভালোবাসেন।

বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাচীন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনায় ঋদ্ধ একটা সংগঠন হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তার গৌরবময় ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন এবং বাংলাদেশের এযাবত কালের শ্রেষ্ঠ অর্জন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন যেন একই যাত্রার সহযাত্রী, একে অপরের পরিপূরক, একই বৃন্তে দুটি ফুল। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে এই প্রত্যাশা করি যেন বাংলাদেশকে স্বনির্ভর জাতি হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার গৌরবময় অভিযাত্রায় আওয়ামী লীগের আগামীর দিনগুলো মঙ্গলময় হয়; বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। জয় বাংলা।

লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক জাগরণ

Header Ad
Header Ad

বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল

বগুড়া বিমানবন্দর। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। ১১ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরের রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে, ডাম্বল এবং এপ্রোন সারফেসের উন্নয়ন কাজ চলছে পুরোদমে। সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে আগামী জুলাই মাসেই বগুড়া থেকে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল শুরু হবে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ—বেবিচক। শুধু বগুড়াই নয়, দেশের আরও সাতটি পরিত্যক্ত বিমানবন্দর সচল করতে কাজ করছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, কুমিল্লা, শমসেরনগর (মৌলভীবাজার) এবং রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর।

বেবিচক সূত্র বলছে, এসব পরিত্যক্ত বিমানবন্দর চালু হলে সড়ক ও রেলপথের ওপর চাপ কমবে এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সংযোগ আরও সহজ হবে। ফলে শিল্প, ব্যবসা ও পর্যটনে নতুন গতি সঞ্চার হবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে জানান, “বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিচালনার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। তবে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এসব বিমানবন্দর পুরোপুরি সচল করা যাবে।”

তবে এসব বিমানবন্দরে যাত্রী পরিবহনের মতো ফ্লাইট পরিচালনায় সবচেয়ে বড় বাধা রানওয়ের দৈর্ঘ্য ও অবকাঠামো। অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি যাত্রীবাহী বিমানের ওঠানামার জন্য ৬ থেকে ৮ হাজার ফুট রানওয়ে দরকার, অথচ পরিত্যক্ত এই বিমানবন্দরগুলোতে রানওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফুট।

বেবিচক জানিয়েছে, ইতোমধ্যে হুদাবাসি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্মের সহায়তায় বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে সংস্কার কাজ আগে শেষ হবে, সেখানে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হবে আগে।

উল্লেখ্য, দেশে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয়েছিল ২৮টি বিমানবন্দর। বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজারে। অভ্যন্তরীণ রুটে সচল রয়েছে রাজশাহী, যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশাল বিমানবন্দর।

নতুন করে চালু হতে যাওয়া সাতটি বিমানবন্দর যুক্ত হলে দেশের অভ্যন্তরীণ বিমান যোগাযোগে বড় বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Header Ad
Header Ad

বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে ঢাকা বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কারের কারণ প্রকাশ করেছেন ক্লাবের বর্তমান প্রেসিডেন্ট নাসির মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ক্লাবের রিভারভিউ লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বেনজীর আহমেদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্লাব দখল করে রেখেছিলেন এবং আর্থিক অনিয়মে জড়িত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নাসির মাহমুদ বলেন, “বেনজীর আহমেদ কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, জোর করে ক্লাবের সভাপতি পদে বসেছিলেন। সামাজিক সম্মান পেতেই তিনি এই পদে ছিলেন, তবে ক্লাবের নিয়ম-কানুন তিনি মানেননি। এমনকি আমি নিজে তিন বছর ক্লাবে আসার সাহস পাইনি, কারণ তিনি তাঁর প্রভাব খাটিয়ে আমাকে ক্লাবে প্রবেশ করতে দেননি।”

তিনি জানান, ক্লাবের প্রায় ৩২ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে পুনরায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্ম হুদাবাসিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অনিয়মের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।

নাসির মাহমুদ অভিযোগ করেন, বেনজীরের ভয়ে তিনি ক্লাবে যাওয়া বন্ধ করে দেন, তবে আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন। “তিনবার আমি তাঁকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। পরে তিনি বুঝতে পারেন আমি আইনগতভাবে সঠিক পথে আছি এবং তখনই আলোচনায় বসতে চান।”

তিনি আরও বলেন, “ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হয়ে বেনজীর কেউকেটা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো নিয়ম মানেননি, কোনো রিপোর্ট সাবমিট করেননি। ক্লাবের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিল।”

ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারি লে. কমান্ডার (অব.) তাহসিন আমিনকেও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ক্লাবের প্রথম নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই বহিষ্কার কার্যকর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথাও জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আলোচিত পরীমনি ঘটনার প্রসঙ্গও আসে। এ নিয়ে নাসির মাহমুদ বলেন, “পরীমনি এই ক্লাবের সদস্য ছিলেন না, তিনি অতিথি হয়ে এসেছিলেন। অনুমতি ছাড়াই ক্লাবে প্রবেশ করেছিলেন। আমি এর প্রতিবাদ করায় উল্টো আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

নাসির মাহমুদ দাবি করেন, বেনজীরের প্রভাব ও চাপের কারণে তাঁরা একসময় প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তবে নির্বাচনের দাবিতে বারবার নোটিশ দেওয়ার পর ২০২৩ সালের ২৪ জুন নির্বাচনের তারিখ দিতে বাধ্য হন বেনজীর।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নকিব সরকার অপু, মো. জেসমুল হুদা মেহেদী অপু, আসমা আজিজ, এ কে এম আইয়াজ আলী (খোকন), আলীম আল কাজী (তুহিন), খালেদা আক্তার জাহান, মির্জা অনিক ইসলাম প্রমুখ।

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় আবারও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, ড. ইউনূসের পদত্যাগ দাবি

আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকায় ফের ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ১৮ নম্বর আসন এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে এই মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

মিছিলটি ঢাকার উত্তরা এলাকায় সংগঠিত হয়, যেখানে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকেন এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবি জানান।

মিছিলে তারা ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’, ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’, ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এবং ‘শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার’—এই ধরনের স্লোগানে রাজপথ কাঁপান।

জানা গেছে, এই ঝটিকা মিছিলে নেতৃত্ব দেন উত্তরখান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মিলন।

আওয়ামী লীগের সাবেক ছাত্রনেতা নুর হোসেন তার ফেসবুকে মিছিলের একটি ভিডিও পোস্ট করে জানান, “আজ ১৮/০৪/২৫ ইং তারিখ সকালে উত্তরা ঢাকা-১৮ আসনের আওয়ামী লীগ ও এর সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।”

এর আগেও গত ১৫ এপ্রিল রাজধানীর বাড্ডা, ভাটারা ও রামপুরা প্রধান সড়কে আওয়ামী লীগ একটি হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করেছিল।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দলটির নেতাকর্মীরা রাজপথে সক্রিয় রয়েছে। বিভিন্ন সময় তারা হঠাৎ বিক্ষোভ ও মিছিল করে বর্তমান সরকারবিরোধী অবস্থান প্রকাশ করে চলেছেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল
বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ঢাকায় আবারও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, ড. ইউনূসের পদত্যাগ দাবি
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার