বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৩ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

লবণাক্ত পানিতেও জমির আইলে সবজি চাষ

সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ বিল সবুজ-সোনালি ধানের মিষ্টি গন্ধ হারিয়েছে আগেই। সে জায়গা দখল করেছে সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ির ঘের। বড় বড় বিলগুলো এখন আইল ঘেরা লোনা ও মিঠা পানির জলাশয়। তবে লবণ পানি সবুজ গ্রাস করে, নষ্ট করে আশপাশের ফসল- বদ্ধমূল এ ধারণার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে জেলার মাছচাষিরা।

সাতক্ষীরার কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ঘামারবাড়ি) প্রচেষ্টায় বিগত কয়েক বছর ধরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাছের ঘেরের পাড়ে সবজি চাষ। ‘সাথী ফসল’ হিসেবে শুরু হলেও এখন মূল ফসলের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে সমানে সমান। মাচায় বা ঘেরের আইলে সবজি আর নিচে পানিতে মাছ চাষ হচ্ছে। আর এখানে উৎপাদিত সবজি পুরোটাই বিষমুক্ত। ফলে, এর চাহিদাও রয়েছে দেশজুড়ে। জেলায় বছরপ্রতি যে পরিমাণ সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে তার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ উৎপাদিত হয় ঘেরের আইলে ও মাচা পদ্ধতিতে।

ঘেরের আইলে সবজি চাষ লাভজনক হওয়ায় জেলার অধিকাংশ মৎস্য ঘেরে সবজির চাষাবাদ দিন দিন বাড়ছে। ফলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলায়ও রপ্তানি হচ্ছে সাতক্ষীরার সবজি।

সাতক্ষীরা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ঘামারবাড়ি) সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলার ৮৭৫ হেক্টর জমির আইলে (মৎস্য ঘেরের ভেঁড়ি) বিভিন্ন প্রকারের সবজি চাষ হয়েছে। এবার সবচেয়ে বেশি সবজির চাষ হয়েছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় আর সবচেয়ে কম চাষ হয়েছে দেবহাটা উপজেলার মৎস্য ঘেরের আইলে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মৎস্য ঘেরের ৩৪০ হেক্টর জমির আইলে (ভেঁড়ি) সবজি চাষ হয়েছে, তালায় ১৬৫ হেক্টর, কলারোয়ার ৫৫ হেক্টর, আশাশুনি ৮০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ১৩৫ হেক্টর, দেবহাটায় ২০ হেক্টর, ও শ্যামনগর উপজেলার মৎস্য ঘেরের ৮০ হেক্টর জমির আইলে সবজির চাষ হয়েছে। জেলার মোট চাষ করা মৎস্য ঘেরের জমির আইলে হেক্টর প্রতি গড় ১৯ টন হারে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৬২৫ টন।

জানা যায়, মৎস্য ঘেরের আইলে বিশেষ পদ্ধতিতে বাঁশ ও জাল দিয়ে ঝুলন্ত মাচা তৈরি করা হয়। তারপর বিষমুক্ত সবজির আবাদ করে বাড়ন্ত গাছ মাচার ওপর ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে জায়গা কম লাগে ও অল্প পরিচর্যায় ভালো ফসল পাওয়া যায়। মৌসুমি ধান ও মাছ চাষ করে একসময় যাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটত, লাভজনক সমন্বিত সবজি চাষে এখন তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। ‘অল্প পুঁজিতে অনেক লাভ’— ফলে উৎসাহিত হয়ে এখন সমন্বিত এ চাষের দিকে ঝুঁকছেন অনেকেই।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ মৎস্য ঘেরগুলোতে যতদূর চোখ যায় সবুজের হাতছানি। ঘেরের আইলে ও ঘেরের আইলের উপরে নির্মিত সারি সারি মাচায় ঝুলছে করলা, ঢেঁড়শ, পুঁইশাক, কুমড়া আর শসা। বর্ষাকালীন সবজির পাশাপাশি আগাম শীতকালীন সবজি চাষও শুরু করেছেন অনেকে।

সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নের মিঠাবাড়ি বিলে শতশত বিঘা জমির মৎস্য ঘেরে মাচা পদ্ধতিতে লাউ, কুমড়া ও করলার চাষাবাদ করা হয়েছে। মাচায় ঝুলছে হাজার হাজার করলা, শতশত লাউ ও কুমড়া। একই সাথে ঘেরের পাড়ে লাগানো হয়েছে পুঁইশাক ও ঢেঁড়স।

এসময় নগরঘাটা ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের জফর সরদারের ছেলে ইসরাইল হোসেন জানান, আমি ১৬ একর জমিতে মৎস্য ঘের করেছি। তার তিন পাশে সবজি চাষ করেছি যেখান থেকে সবজি পাওয়ার সময় চলে এসেছে কম-বেশি। যদিও সবজি চাষ আমার মূল লক্ষ্য ছিল না তবে ঘেরের ভেঁড়িতে সবজি চাষ করাটা অধিক লাভজনক। একারণে প্রতি বছরই আমি ঘেরের ভেঁড়িতে সবজি চাষ করি।

তিনি আরও বলেন, আমার ১৬ একর জমির তিন পাশের সবজি চাষে সবমিলে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনূকুলে থাকলে ও বাজারদর ভালো পেলে আশাকরি আমি দেড় থেকে দুই লাখ টাকার সবজি বিক্রি করতে পারব।

একই এলাকার অপর মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী মোহর আলী জানান, তার প্রায় ১ একর জমিতে মৎস্য ঘেরের পাশাপাশি সবজি চাষ করেছেন। ঘেরের ভেঁড়ির চারপাশ দিয়ে ডাবল সিস্টেমে সবজির বেড়া দিয়ে সবজির মাচা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমার লক্ষ্য ঘেরের সবজি থেকে ৫০ হাজার টাকার বেশি মুনাফা অর্জন করার।

এদিকে জেলার বিভিন্ন জায়গার সবজি চাষিরা জানান, বর্তমানে দেশে ও বিদেশে সবজির ব্যাপক চাহিদা হওয়ায় গতকয়েক বছরে জেলার মৎস্য ঘেরের আইলে সবজি চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে তাদের জীবনে। বিশেষ করে মাছের ঘেরে মাচা পদ্ধতিতে সবুজ সবজির চাষ কৃষিতে নবদিগন্তের দ্বার উন্মোচন করেছে। তারা বলেন, মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষে বদলে গেছে তাদের মতো জেলার বহু কৃষকের ভাগ্য। তবে সবজির বাজার দর নিয়ে চিন্তিত তারা। সবজির বাজার যেন কোনো সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে সেজন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বাজার মনিটরিং এর দাবি জানিয়েছেন তারা।

এপ্রসঙ্গে সাতক্ষীরা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঘামারবাড়ির উপপরিচালক নুরুল হুদা জানান, জেলার অধিকাংশ ঘেরের পাড়ে সবজি চাষ হচ্ছে। ঘের পাড়ে উৎপাদিত লাউ, উচ্ছে, শসা ও বরবটি ইতোমধ্যে জেলার বাজারগুলোতে আসতে শুরু করেছে। কৃষকেরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষের আয়ের একটা বিশাল অংশই এই ঘেরের পাড়ের সবজি চাষ থেকে আসে। একারণে আমরা কৃষকদের পাশে মাঠ পর্যায়ে সব সময় আছি। প্রান্তিক কৃষকদের সবজি বাগান পরিদর্শন করে তাদের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহতও রাখবেন বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ন কবির বলেন, বিগত কয়েক বছরে মৎস্য ঘেরের আইলে সবজি চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে সাতক্ষীরায়। আর পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় অতিতের তুলনায় ভবিষ্যতে আরও কৃষি বিপ্লব ঘটবে এ অঞ্চলে।

তার মতে, সাতক্ষীরার সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ির রাজধানী হিসেবে পরিচিত থাকলেও সবজি উৎপাদনে এ জেলার আলাদা একটি সুনাম রয়েছে। বছরের বিভিন্ন সময় এ জেলা থেকে উৎপাদিত সবজির প্রায় ৪০ শতাংশ উৎপাদিত হয় মৎস্য ঘেরের আইল থেকে। যেটা জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণ সবজি রাজধানীসহ পদ্মার ওপারের বিভিন্ন জেলায় যায়।

তিনি বলেন, একটা সময় ছিল যখন ফেরিঘাটে সময় বেশি লাগায় অনেক সবজি নষ্ট হতো, এতে কৃষকরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। তবে পদ্মাসেতু চালু হওয়ায় বর্তমানে সবজি নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি ভালো দামও পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, মৎস্য ঘেরের আইলে সবজি চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তনে যেন কোনো সিন্ডিকেট কাজ করতে না পারে সেজন্য কঠোর অবস্থানে থাকবে জেলা প্রশাসন। জেলার প্রান্তিক পর্যায়ের চাষিরা যেন তাদের উৎপাদিত সবজির ন্যায্য মূল্য পায় সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিত্যদিন বাজার মনিটরিং করা হবে। কোথাও কোনো সিন্ডিকেট কাজ করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের শাস্তির আওতাই আনা হবে বলে জানান তিনি।

এসএন

Header Ad
Header Ad

২৭ রানের জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

ছবি: সংগৃহীত

জয় দিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু। এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ের সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। আর সেই সুযোগ শতভাগ কাজে লাগালো লিটন দাসের দল। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৭ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সেন্ট ভিনসেন্টে টস জিতে টাইগারদের ব্যাটিংয়ে পাঠান ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল। মেহেদী হাসান মিরাজ, জাকের আলির ছোট্ট ক্যামিওর সঙ্গে শেষ দিকে শামিম পাটোয়ারীর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।

মিরাজ ২৫ বলে ২৬ ও জাকের ২০ বলে ২১ রান করেন। এছাড়া ১৭ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন শামিম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে গুড়াকেশ মোতেই নেন ২টি উইকেট।

১৩০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৯ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্রান্ডন কিং বলে ৮ ও রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান আন্দ্রে ফ্লেচার। দুজনকেই আউট করেন তাসকিন।

এরপর ক্যারিবিয়ান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন মেহেদী। ১২ বলে ১৪ রান করে জনসন চার্লস ও ৮ বলে ৫ রান করে নিকোলাস পুরান আউট হন। দ্রুতই আরও জোড়া উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে যায় ক্যারিবিয়ানরা। পাওয়েল ৭ বলে ৬ ও রোমারিও শেফার্ড রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান।

 

Header Ad
Header Ad

ফোনে ‘আপা আপা’ বলা সেই জাহাঙ্গীরকে জামিন দেননি হাইকোর্ট

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির। ছবি: সংগৃহীত

গণঅভ্যুত্থানের চাপে পড়ে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার বেশ কিছু কথোপকথন ফাঁস হয়ে যায়, যা নিয়ে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ফাঁস হওয়া ফোনালাপগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ ফোনালাপ ভাইরাল হয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। ওই ফোনালাপে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবিরকে শেখ হাসিনাকে বারবার ‘আপা আপা’ বলে সম্বোধন করতে শোনা যায়।

সম্প্রতি জাহাঙ্গীর কবিরকে একটি মামলায় হাইকোর্টে জামিন চাওয়া হলে আদালত তা মঞ্জুর করেননি। এ ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছেন এই নেতা। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হেমায়েত উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ২০১৬ সালের এক চাঁদাবাজির মামলায় বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন। সেই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট আসেন জাহাঙ্গীর কবির। এ মামলায় তিনি ১ নম্বর আসামি।

জাহাঙ্গীর কবির বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত ১৪ আগস্ট ভোরে বরগুনায় নিজ বাসভবন আমতলার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর তার সঙ্গে ফোনে কথা বলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের দিন বরগুনা সদর থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান জানিয়েছিলেন, ঢাকা থেকে পুলিশের একটি টিম এসে তাকে গ্রেপ্তার করে। ধারণা করা হচ্ছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার পর বিশৃঙ্খলা ও ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাহাঙ্গীর কবিরের ফোনে কথোপকথন ভাইরাল হওয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় ৯ অক্টোবর আদালতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

১২ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তিন মিনিটের ফোনালাপে শেখ হাসিনা জাহাঙ্গীর কবীরকে বলেন, আপনারা শৃঙ্খলা মেনে দলীয় কার্যক্রম চালাবেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে যথাযথভাবে পালন করবেন। মো. জাহাঙ্গীর কবীর শেখ হাসিনাকে বলেন, আপা আপনি ঘাবড়াবেন না। (মনোবল হারাবেন না)। আপনি ঘাবড়ালে আমরা দুর্বল হয়ে যাই। আমরা শক্ত আছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি ঘাবড়াবো কেন। আমি ভয় পাইনি। আপনারা দেখছেন, আমাদের পুলিশ বাহিনীকে মেরে কীভাবে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমাদের কর্মীদের মেরেছে। বোরকা পরে মেরেছে। এ দেশটা রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে। আপনারা যেভাবে আছেন থাকেন।

এদিকে জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা রয়েছে। সেসব মামলায় তিনি বরগুনা জেলহাজতে রয়েছেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হেমায়েত উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, এ আসামি আইনের ৬০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর হাইকোর্টে জামিন চেয়েছিলেন। তা যথাযথ না হওয়ায় তাকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।

Header Ad
Header Ad

পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ে বাতিল হলো যেসব বিধান

হাইকোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

২০১১ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অন্তত ৫৪টি বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছিল। পরবর্তীতে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দুটি রিট আবেদন করা হয়।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওই রিটের ওপর জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করেছেন।

রায়ে গণভোট, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করে দেওয়া বিধান অবৈধ ও বাতিল করেন হাইকোর্ট। বাকি বিধানগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আগামী জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন আদালত। রায়ে আদালত বলেন, সংসদ আইন অনুসারে জনগণের মতামত নিয়ে বিধানগুলো সংশোধন, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করতে পারবে।

এ বিষয়ে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ আবেদনকারীর আইনজীবী ড. শরীফ ভুঁইয়া বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করার বিধান বাতিল হলো; সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ এবং সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি সংশোধন অযোগ্য সংক্রান্ত ৭ক এবং ৭খ বাতিল হলো, মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের বিধান নিয়ে হাইকোর্টের ক্ষমতা কমানো বিষয়ক ৪৪ (২) বাতিল করা হলো। এছাড়া ১৪২ অনুচ্ছেদে গণভোটের বিধান বাতিল করাকে বাতিল করা হয়েছে। ফলে সংবিধানের প্রস্তাবনা ও কিছু অনুচ্ছেদ সংশোধনে আজ রায়ে গণভোটের বিধান ফিরে আসছে।

তিনি বলেন, ৭ক এবং খ , ৪৪ (২) ও ১৪২ অনুচ্ছেদ বিষয় আজকের রায়ের ফলে বাস্তবায়িত হলো। তবে সংসদের মাধ্যমে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হলো— সেটার প্রতিবন্ধকতা আজকে পার হলাম। বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বে যে রায় (তত্ত্ববধায়ক অবৈধ) সেটার পুনর্বিবেচনা পরে হতে হবে ব্যবস্থাটা ফিরে আসার জন্য। সেটা জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে শুনানি হবে। যদি রিভিউ আমাদের পক্ষে আসে তাহলে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরবে।

যেসব বিষয় বাতিল করা হলো:

১. সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ সংক্রান্ত ৭ক অনুচ্ছেদে (১) বলা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোনো অসাংবিধানিক পন্থায়-

(ক) এ সংবিধান বা ইহার কোনো অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে; কিংবা (খ) এ সংবিধান বা ইহার কোনো বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে— এ কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ওই ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে।

(২) কোনো ব্যক্তি (১) দফায় বর্ণিত— (ক) কোনো কার্য করিতে সহযোগিতা বা উসকানি প্রদান করিলে; কিংবা (খ) কার্য অনুমোদন, মার্জনা, সমর্থন বা অনুসমর্থন করিলে— এইরূপ কার্যও একই অপরাধ হইবে।

(৩) এ অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধে দোষী ব্যক্তি প্রচলিত আইনে অন্যান্য অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।

সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি সংশোধন অযোগ্য সংক্রান্ত ৭ ‘খ’তে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথম ভাগের সব অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সব অনুচ্ছেদ, নবম-ক ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলি সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সব অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের ১৫০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলোর বিধানাবলি সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোনো পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হইবে।

২. মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ সংক্রান্ত ৪৪ (২) এ বলা হয়েছে, এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটাইয়া সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোন আদালতকে তাহার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ওই সকল বা উহার যে কোনো ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দান করিতে পারিবেন।

৩. তত্ত্বাবধায়ক সংক্রান্ত ৫৮ক অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত এবং ক পরিচ্ছেদ এ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত।

৪. সংবিধানের বিধান সংশোধনের ক্ষমতা সংক্রান্ত গণভোটের বিধান বাতিল সংক্রান্ত ১৪২ এর অনুচ্ছেদ। আদালত বলেছেন, গণভোট সংক্রান্ত ১২তম সংশোধনী এখানে বহাল হবে।

এর আগে ৪ ডিসেম্বর পৃথক রিটে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়।

২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

এছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়; সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়।

অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়। আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।

এই সংশোধনী বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। গত ১৯ আগস্ট হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।

পরে এ রুল সমর্থন করে সহায়তাকারী (ইন্টারভেনার) হিসেবে যুক্ত হন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণফোরাম, বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা। তাদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এছাড়া নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও রিট করেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

২৭ রানের জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের
ফোনে ‘আপা আপা’ বলা সেই জাহাঙ্গীরকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ে বাতিল হলো যেসব বিধান
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল জনগণের আরেক বিজয়: জামায়াত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ১০
অন্তর্বর্তী সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তর হতে পারে: অ্যাটর্নি জেনারেল
চীনে ১০ দিন পর্যন্ত ভিসা ছাড়াই অবস্থানের সুযোগ
১৫ বছর পর দেশে ফিরলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস আহমেদ
জনসমর্থনের কারণে বিএনপি অনেকের হিংসার কারণ: তারেক রহমান
পূর্বাচলের লেক থেকে অজ্ঞাত তরুণীর মরদেহ উদ্ধার
২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন: প্রেস সচিব
টাঙ্গাইলে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে অধ্যক্ষ বহিষ্কার
শেখ হাসিনার সেই পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয় ৬২৬ কোটি টাকা
আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় মিডিয়া: উপদেষ্টা নাহিদ
ডিবি হারুন ও তার স্ত্রী-ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুদকের ৩ মামলা
বিরামপুরে নূরানী কোরআন একাডেমির অভিভাবক সমাবেশ ও পুরস্কার বিতরণ
স্বাধীন রাষ্ট্রে গুম ও আয়নাঘরের অস্তিত্ব লজ্জাজনক: ধর্ম উপদেষ্টা
দোয়া করবেন ভাই, বোবা হয়ে আছি: পলক
নগদে ডিজিটাল জালিয়াতি, মিলছে না ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব