১৭ দিন বন্যার্তদের রান্না করা খাবার দিয়েছে ‘প্রজেক্ট অক্সিজেন’
লেখা ও ছবি : ইফতেখার আহমেদ ফাগুন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
সিলেট জেলার গুলাবগঞ্জ বা গোলাপগঞ্জ উপজেলার শিশু ছাত্র, ছাত্রীদের জন্য আছে একটি সরকারী স্কুল। নাম ‘ফুলশাইন্দ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়’। বিদ্যালয়ে টানা ১৭ দিন ছাত্র, ছাত্রী ও তরুণ-তরুণীদের সামাজিক স্বেচ্ছাসেবা কর্ম ‘প্রজেক্ট অক্সিজেন’র মাধ্যমে তারা বন্যার্তদের তিন বেলাই রান্না করা খাবার বিলিয়েছেন। খবরটি জানিয়েছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সাবেক সভাপতি ইফতেখার আহমেদ ফাগুন।
তিনি আরো জানিয়েছেন, তারা হলে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে, ছাত্র, ছাত্রীদের বাড়িতে, আশ্রয়কেন্দ্রের সামনে ও ভেতরে রান্না করে নানা মানুষের দানে পাওয়া খাদ্য উকরণের মাধ্যমে রান্না করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন বন্যার্তরা বলে লিখেছেন ফাগুন।
প্রজেক্ট অক্সিজেনের পর সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চা শ্রমিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রী, এমসি কলেজ, সরকারী মহিলা কলেজ ইত্যাদি বিভিন্ন নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী ছাত্র, ছাত্রীরা তাদের তোলা চাঁদার টাকায় ‘বাড়িফেরা’ নামের আরেকটি প্রকল্প সম্পন্ন করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন ফাগুন।
এজন্য আজ একটি অনুষ্ঠানেরও অয়োজন করেছেন তারা।
প্রতিটি বন্যার্ত পরিবারকে নতুন জীবন শুরু করতে নগদ সাহায্য ও খাদ্য সামগ্রী ইদ উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি বস্তায় ইদ কাটানোর জন্য গুছিয়ে তারা খাবার দিয়েছেন। তাদের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এই আয়োজনে তারা দাওয়াত করে এনেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ছাত্রবান্ধব বদরুল ইসলাম শোয়েবকে। উচ্চপদস্থ এই কর্মকর্তা তাদের ছাত্র, ছাত্রীদের মহৎ কার্যক্রমে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। তাকে ‘দাওয়াত দেওয়াতে খুব ভালো লাগছে’ বলে উল্লেখ করেছেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “প্রজেক্ট অক্সিজেন টিম বানভাসি মানুষের কল্যাণে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসহায়দের বাড়ি, বাড়ি গিয়ে যে কাজগুলো করেছে, খুবই প্রশংসনীয় হয়েছে। সরকার, বেসরকারী অনেক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান বন্যার্তদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন-আমরা দেখেছি ও জানতে পেরেছি।”
প্রজেক্ট অক্সিজেনের উদ্যোক্তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সিলেটী দেলোয়ার হোসেন আনসারকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন তিনি। তার চিন্তা-ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গির খুব প্রশংসা করেছেন বদরুল ইসলাম শোয়েব সবার সামনে। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বলেছেন, ‘তার টিমের বানভাসী মানুষকে সাহায্য করার অনন্য উদ্যোগগুলো আমাদের সিলেটের সবখানে খুব প্রশংসা কুড়িয়েছে ও সবাইকে উৎসাহিত করেছে। তিনি একজন অন্যরকমের মানুষ। তারা সবাই খুব ভালো।’
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার পক্ষ থেকে সহযোগিতা করবেন ও মানব কল্যাণমুখী কাজগুলো অব্যাহত রাখতে প্রজেক্ট অক্সিজেনের কর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
ঢাকাপ্রকাশ ২৪.কমের সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি উল্লেখ আরো করেছেন, ‘বাড়িফেরা কার্যক্রমের আলোচনা সভায় সভাপতি ছিলেন সিলেটের গোপালগঞ্জ উপজেলার রাজনীতিবিদ আবদুল্লাহ আল মামুন। আশপাশ থেকে বিভিন্ন উপজেলার বিখ্যাত স্থানীয় রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, উদ্যোক্তা ও শিক্ষাবিদরা অংশগ্রহণ করেছেন। প্রকল্পের কর্মী ছাত্র, ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। বানভাসিরাও। তাদের সামনে বক্তৃতা দিয়েছেন এমাদ উদ্দিন, আহমদ মিলাদ শাহরিয়ার, দেলোয়ার হোসেন, শাহান আহমদ, জাহেদ আহমদ, সাইরুল ইসলাম, মাসুম আহমদ, রাজনীতিবিদ গোলাম কিবরিয়া, সমাজসেবক ইকবাল হোসেন, চিত্রশিল্পী মাহবুবুর রহমান রাজু, ডা, জুনেদ আহমদ, কাউসার ব্রাদার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান অজি মোহাম্মদ কাউসার এবং লক্ষণাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খলকুর রহমান।’
ওএস।