বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

শুরু থেকে আছি এই ভালোবাসার ভুবনে

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কী? কী, কী কাজ করেছেন তারা? কেমন চলছে? ভবিষ্যতের পরিকল্পনা-সবই লিখেছেন খলিলুর রহমান ফয়সাল। তিনি এই ক্যাম্পাসের কৃষি অনুষদের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। ছবিগুলোও তার দেওয়া। ফয়সাল জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের উপ-পরিচালক

২০০৮ সালে আমি আমাদের সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। কৃষি অনুষদের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। ফলে জন্ম থেকে সিলেটের কৃষিখাতের প্রধান শিক্ষা ও গবেষণা মহাবিদ্যালয়টির বেড়ে উঠা আমার চোখের সামনে হচ্ছে। আমরা সিলেট শহরের একটি প্রান্তে। মোট ৫০ একর। উঁচু-নিচু পাহাড়ি ভুমি আছে। ঠিকানা-আলুরতল, টিলাগড়, সিলেট।
কোরো কিছু কিনতে, ভালো কোনো রেস্তোরায় নাস্তা করতে হলেও ছাত্র-শিক্ষক সবাইকে যেতে হত তখন, শহরের প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা বা আম্বরখানায়। যান বলতে সিলেট সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ আমলের পুরাতন একটি বাস। এই কলেজ থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়েছে। বেশিরভাগ সময় আমিও ছাত্র-শিক্ষকদের মতো রিকশায় যাতায়াত করতাম। শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় রিকশাওয়ালাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ে যেতে বললে, প্রথমদিকে তারা আমাদের পাশের বিখ্যাত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর করতেন। আমারও খুব আত্মসম্মানে লাগত। কারণ শাবিপ্রবি পুরোনো হলেও সিলেটে যে আরেকটা পাবলিক ও কৃষি শিক্ষা এবং গবেষণার বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, সেদিকে শহরবাসীর কী কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই?
তাই ভাবলাম, আমাদের ক্যাম্পাস নিয়ে লিখতে হবে খবরের কাগজে। এখন তো অনেকে লেখে, তাদের সমিতিও ভালো আছে। আমাদের সময় কিন্তু ছিল না। কত যে কষ্ট হয়েছে। কতজনকে তেল দিতে হয়েছে দফায়, দফায়। তবে ক্যাম্পাসের সিনিয়র জাফর, ফিরন, রাশেদ ভাই আমাকে খুব উৎসাহিত করেছেন। প্রথম আলোর লোকগবেষক, সাংবাদিক সুমনকুমার দাশের সঙ্গে কাজের সূত্রে পরিচয় হলো। তার সহযোগিতার কথা মনে থাকবে। আরেকটু সিনিয়র হবার পর আমি আমাদের সাংবাদিক সমিতির হাল ধরলাম। জুনিয়রদের ধরে, ধরে জোর করে লেখালেখির জগতে নিয়ে আসতাম ও সংগঠন করতাম। প্রথমদিকে ছোট্ট ক্যাম্পাসের বড় কোনো খবর থাকতো না কোথাও। অগ্রহায়ণের প্রথম দিন ‘নবান্ন উৎসব’, ‘পহেলা বৈশাখ’-এ মেয়েদের বেণী করে আসার ঘটনাও খবর হিসেবে পত্রিকায় পাঠিয়েছি। দৈনিক ইত্তেফাকে বহু বছর বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেছি। প্রথম দিকে অত ইন্টারনেট সুবিধাও ছিল না। সাদা কাগজে লিখে খবরগুলো পত্রিকা অফিসে দিয়ে আসার ঘটনাও আছে আমার।
‘সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিনোদন সংঘ’ ও ‘সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষ্ণচূড়া সাংস্কৃতিক সংঘ’-এরও আমি অন্যতম পরিশ্রমী কর্মী ছিলাম। এখনো তারা আমার সঙ্গে আছেন। নিজে কয়েকটি সংগঠন তৈরি করেছি। রেডিও অনুষ্ঠান ‘মৃত্তিকা’ ও বানান ভুলের ‘কাকতাড়ুয়া’ আছে। খবর তৈরির জন্য নিজেরাই রেডিও অনুষ্ঠানটি তৈরি শুরু করলাম। সিলেটসহ সারা বাংলাদেশে তারা খুব জনপ্রিয়।
সেই সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এখন ১৬ বছরের কিশোর। সারা বাংলাদেশের দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা যেমন এখানে পড়তে আসে, এসেছে; তেমনি পাশ করে দক্ষ অনার্স, মাস্টার্স, পিএইচডি পাশ ছাত্র, ছাত্রী, গবেষক, শিক্ষকরা সারা বিশ্বে ও দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন। তাদের সিলেটের এই লালচে মাটির গুণমান অন্যান্য অঞ্চলের ভিন্ন। বৃহত্তর সিলেটে রয়েছে হাজার, হাজার একর অনাবাদি উঁচু-নিচু পাহাড়ী ভূমি। সেগুলোতে চায়ের চাষ হয়। বাংলাদেশে পরবাসী নারী শ্রমিকরা মানবেতরে কাজ করেন যুগের পর যুগ। আমাদের আছে ‘হাওড়, বাওড়, বিল নামের বিস্তীর্ণ জলাকেদ্রিকভূমি। অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও গর্বিত প্রতিটি জলাধার। সেগুলোর চাষী, নৌকার মাঝিরা খুব গরিব। কারো কারো ছেলে, মেয়ে পড়ে সিলেটের এই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, এমসি কলেজসহ গর্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। আমাদের আরো আছে জাদুকাটা নদী, বিছানাকান্দি, রাতারগুলের মতো প্রাকৃতিক বিষ্ময়। সুন্দর নদীগুলো। তাদের সবার অপার সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক সম্পদগুলোকে কাজ ও গবেষণা মাধ্যমে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আওতায় আনার জন্যই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ক্যাম্পাসগুলো।
এখন ৭টি অনুষদ ও ৪৭টি বিভাগের মাধ্যমে অত্যন্ত সাফল্যে কাজ করে যাচ্ছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ওয়েবসাইটে দেখলে চমকে যাবেন। ১৮ কোটি মানুষের দেশে কিন্তু একজনও এখন আর না খেয়ে থাকেন না। দাম যেমন-তেমন তবে আর দুর্ভিক্ষ হয় না। দেশী মাছ হারিয়ে যায়নি সিলেটে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও কাজের দৌলতে। হাইব্রিড মাছ পাওয়া যায় দেদার। মেহমান এলে সাধের পালা মুরগী উঠোন থেকে ধরে এনে জবাই করলেও ভাবনা নেই কোনো। আমাদের গবেষণায় দেশী মুরগি, হাঁসের কোনোদিন চলে যাবার সুযোগ নেই। আছে তাদের উন্নতির ক্রমবিকশিত গল্প। অল্প টাকায় বাজারে এখন পাওয়া যায় পোল্ট্রির মুরগি। যে ক্ষেতে আগে ১ টন ধান ফলন হত, এখন ফলছে ৫-৬ টন। তথ্যগুলো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রী ছাড়া আর কেউ ভালোভাবে জানেন না। সবই সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের কৃষি ও মাৎস্য বিজ্ঞানীদের ধারাবাহিক পরিশ্রমে। প্রতি বছর বহু কৃষি বিজ্ঞানী তৈরি করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিসিএস আছে। প্রথম শ্রেণীর মর্যাদায় আমাদের গ্র্যাজুয়েটদের সুখ ছড়িয়ে গিয়েছে কৃষক, মাঝি, জেলের জীবনে।
এবার বলি-‘সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা’য় হাওড়ের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছেন আমাদের গবেষক, ছাত্র-ছাত্রী ও অধ্যাপকরা। হাওড়, বাওড়, বিলগুলো বছরে ৭ থেকে ৮ মাস থৈ, থৈ পানিতে ভরা থাকে। শুধু বসতভিটার উঁচু জায়গাটুকুই দ্বীপের মত জেগে থাকে। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দৌলতে হাওড় জীবনে ফিরেছে সচ্ছলতা।
একসময় বোরো ফসলনির্ভর শীতকালের হাওড়, বাওড় ও বিলাঞ্চলগুলো মাঠের পর মাঠ হয়ে অনাবাদী পড়ে থাকত। ২০১৫ সাল থেকে সুনামগঞ্জের দেকারসহ হাওড়গুলোর প্রান্তিক, ভূমিহীন কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে। গবেষকদের সার্বিক তত্বাবধানে লাগসই-‘ধান’, ‘সবজি’, ‘মাছ’ চাষ, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগী, কবুতর পালনসহ নানাবিধ অর্থকরী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
২০১৮ সাল থেকে সিলেটের রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট ও গুরকচি নদীতে বিলুপ্ত ও অন্যান্য মাছ রক্ষায় সাফল্য এনে চলছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। জলমগ্ন রাতারগুল বনাঞ্চলে মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তুলে মৎস্যজীবীদের সম্পৃক্ত করায় দারুণ সাফল্য এসেছে। দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো এখন বেঁচে আছে বহাল তবিয়তে। জেলে, মাঝি ও তাদের পরিবারগুলোর জীবনমান উন্নয়নে টেকসই আয় ঘটেছে। এনজিওরা ইতোমধ্যে সেলাই মেশিন, ছাগল, ভেড়াসহ অন্যান্য সামগ্রী দিয়েছেন মৎস্যজীবী পরিবারগুলোতে।
আমাদের মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের জলজসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রক্ষায় প্রকল্প শুরু করেছে। নেতৃত্বে মাৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ও এখন ডিন ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ড। তার তত্বাবাবধানে সিলেটের সারি, গায়াইন নদী ও সংলগ্ন হাওড়, বাওড় ও বিলগুলোতে দেশীয় মাছগুলোর বংশবৃদ্ধির জন্য ধারাবাহিক গবেষণা কার্যক্রম চলছে।
আমাদের গবেষণার অংশ রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট ও গুরকচি নদীর প্রায় ৩ একর মাছের অভয়াশ্রম স্থাপন করা হয়েছে। অভয়াশ্রম তৈরিতে ‘চিতল’, ‘ঘোড়া’, ‘খারি’, ‘নানিদ’ ইত্যাদি হারিয়ে যাওয়া মাছগুলো মিলছে। দেশের মাছের মড়ক রোধে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বায়োফিল্ম’ নামের নতুন ভ্যাক্সিন আবিস্কার করা হয়েছে। মৎস্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ-আল-মামুন ভ্যাক্সিনটি আবিষ্কার করেছেন বলে আমরা অত্যন্ত গর্ব বোধ করি।
মাছ নিয়ে আরো কটি গবেষণা আছে আমাদের। ‘ডিএনএ বারকোডিং’-এর জেনেটিকস পদ্ধতিতে একই প্রজাতির মাছ সনাক্ত ও উৎপাদন বৃদ্ধি, পাশাপাশি চাষাবাদ পদ্ধতির কার্যক্রম চলছে। আমূল পরিবর্তন আনা এই গবেষণা মৎস্যজীববিদ্যা ও কৌলিতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরীনের নেতৃত্বে সম্পন্নও হয়েছে।
‘সয়াগ্রোথ বোস্টার’ নামের মাছের পরিপূরক প্রোটিনের পেটেন্ট লাভ করেছেন মাৎস্যচাষ বিভাগের অ্যাপক ড. মোহাম্মদ এনামুল কবির। মৎস্য, ডেইরি ও পোল্ট্রি শিল্প সম্পদে প্রোটিনের পরিপূরক হয়ে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছি আমরা। স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামুদ্রিক কুয়াশা বা সি-ফগের অবস্থান ও পূর্বানুমান এবং এর স্থানান্তর প্রক্রিয়া নির্ণয়ের করার মাধ্যমে সামুদ্রিক দূর্ঘটনা রোধের কৌশল আবিষ্কার করেছেন জলজসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ হারুন-আল-রশীদ। তিনিও প্রযুক্তির পেটেন্ট লাভ করেছেন। বাংলাদেশে প্রথমবারের মত স্বয়ংক্রিয় সেচ যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন একদল গবেষক। ফলে পানির অপচয় রোধের পাশাপাশি সময়মত ফলবে সোনার ফসল। আধুনিক কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থাকে সহজ করে আবাদি জমিতে সঠিক মাত্রায় আর্দ্রতা বজায় রাখা সম্ভব হয় নতুন এই সেচ যন্ত্রে। মাটির আর্দ্রতা এবং পানির উচ্চতা সহজে নির্ণয় করেও মাঠে সেচ দেয়া যায় বলে জানিয়েছেন তারা। কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন এবং কৃষিশক্তি ও যন্ত্র বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন, সহকারী অধ্যাপক মোঃ জানিবুল আলম সোয়েব তাদের বিভাগের দুই গবেষক ছাত্র-রাইসুল ইসলাম রাব্বী ও মো. নুরুল আজমীরকে নিয়ে প্রটো-টাইপ ডিভাইসটি তৈরি করে ফেলেছেন।
আরো নতুন জীবনের পথেও পা বাড়িয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ভেটেরিনারি, এনিমেল অ্যান্ড বায়োমেডিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের মোট ৬টি বিভাগে ৬টি আধুনিক গবেষণাগার স্থাপন হয়েছে। আরো ২টি ল্যাবরেটরি উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিল। হয়ে গিয়েছে। কৃষি অনুষদেও কটি গবেষণাগার হয়েছে। ক সপ্তাহ আগে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদে মাছের রোগ নির্নয়ের জন্য অত্যাধুনিক গবেষণাগার চালু হয়েছে। নাম ‘ফিশ ডিজিজ, ডায়াগনোসিস অ্যান্ড ফার্মাকোলজি ল্যাব’। অ্যালপার ডগার (এডি) নামের বৈশ্বিক ওয়েবসাইটভিত্তিক ইনডেক্সের ওয়েবসাইটে ১২টি বিষয়ে বিশ্বসেরা গবেষকদের নাম প্রকাশিত হয়েছে। আমাদের ২৩ জন গবেষক সেই তালিকায় আছেন।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্হি:ক্যাম্পাস চালু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ফেঞ্চুগঞ্জ-তামাবিল বাইপাস সড়কের পাশে এফআইভিডিবির খাদিম নগরে মোট ১২.৩ একর জায়গা সরকার দান করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে। নতুন জায়গাপ্রাপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কাজের সুযোগ বিরাট সৃষ্টি হয়েছে। এই ক্যাম্পাস যাত্রা করেছিল যার টিলা ও জঙ্গলবেষ্টিত বেশিরভাগ ভূমিতে।
আর সবার মতো বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ মতিয়ার রহমান হাওলাদারের অনেক অবদান রয়েছে। তিনি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্বে এখানেই সরকারী ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষক ছিলেন। প্রথম কোনো একই কলেজের শিক্ষক ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিলেন। ক্যাম্পাস নিয়ে স্যারের আবেগও তাই বেশি। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বাণীতে তিনি বলেছেন, ‘বছর ঘুরে আবারও আমাদের মাঝে শুভদিনটি ফিরে এলো। কৃষিশিক্ষার জ্ঞানতীর্থ হয়ে ওঠা এবং কৃষি ও গ্রামীণ কৃষিনিভর অর্থনীতির টেকসই উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের সব মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকে অনেক কাজ করে চলেছে। শিক্ষা ও গবেষণায় আধুনিক কৌশল ও দক্ষতা প্রয়োগের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, মেধা এবং মননে অনন্য করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশের উত্তর-পূর্ব কোণের এই পূণ্যভূমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।'
বতমান উপাচার্য ২০ বছরের মহাপরিকল্পনা করেছেন। কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। তিনি বলেছেন, “সকলের সহযোগিতা পেলে আমরা সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ হিসেবে গড়ে উঠব। ” স্যার জানিয়েছেন, সকলের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় আরো অনেক গতিশীল হয়েছে।
আমি যখন ছাত্র ছিলাম, প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে খুব হৈ হুল্লুর করতাম, নানা অনুষ্ঠান করতাম। প্রিয় এই ক্যাম্পাসে যখন বন্ধুরা দল বেঁধে যায় শিক্ষার্থী হিসেবে, আমার জীবনের সোনালী সময়গুলোকে মনে পড়ে। নতুনদের মুখের হাসিতে নিজের যৌবনের চেহারা খুঁজে পাই। একখন্ড সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমার আবেগের কোনো শেষ নেই। টিলাঘেরা এই সবুজ গালিচা আমার পূণ্যভূমি।

ওএস।

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত