শ্রমিক সংকটে দিশেহারা সিরাজগঞ্জের কৃষক
বৈরি আবহাওয়া, শ্রমিক সংকট ও ধান কাটা-মাড়াই নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন সিরাজগঞ্জের কৃষকেরা। মাঠভরা পাকা ধান পড়ে রয়েছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ধান ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা। তার উপর আবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আতঙ্ক ও চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে কৃষকদের।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও টানা বৃষ্টির কারণে পাকা ও আধাপাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। কিছু নিচু এলাকায় পাকা ধান রয়েছে পানির নিচে। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে সময়মতো ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। শেষ পর্যন্ত মাঠের ধান সুষ্ঠুভাবে ঘরে তুলতে পারবে কি না তা নিয়েও তাদের মনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সিরাজগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলায় ১ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে।
প্রতিটি মাঠ পাকা ধানের সোনালী রঙে রঙিন হয়ে রয়েছে। অন্যান্য বছরে বিভিন্ন অঞ্চলের শ্রমিক এসে ধান কাটতেন। ফলে যথাসময়েই কৃষকরা তাদের পাকা ধান গোলায় তুলতে পারতেন। এবারে বাইরের শ্রমিক সংখ্যা খুবই কম। ফলে এলাকায় তীব্রতর হয়ে উঠেছে শ্রমিক সংকট। আর এ সুযোগে স্থানীয় শ্রমিকরা তাদের মজুরিও বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকগুণ।
কৃষক লেলিন আহমেদ বলেন, ঈদুল ফিতরের দিন মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ করেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। সঙ্গে ছিল হালকা বাতাস। সকাল ১১টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে পাকা ধানের জমিতে পানি জমে যায়। পানিতে নুয়ে পড়ে পাকা ধান। এখন পুরোদমে কাটা-মাড়াই শুরু হলেও পর্যাপ্ত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে নুয়ে পড়া ধান কাটতে শ্রমিকেরা আকাশচুম্বী দাম হাঁকছে। আবাদের খরচ তো দূরের কথা, ধান বিক্রি করেও শ্রমিকের টাকা উঠবে না।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার আহসান শহীদ সরকার বলেন, এ বছর জেলার প্রতিটি মাঠে ইরি-বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। সব জায়গায় একসঙ্গে ধান পাকায় শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে শ্রমিক সংকট দূর হবে। সুষ্ঠুভাবে ধান কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলতে পারলে এবং ন্যায্য মূল্য পেলে কৃষকেরা লাভবান হবে।
এসএন