‘অশনি’ ভাঙল তরমুজ চাষিদের স্বপ্ন
ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বরগুনায় ভারী বৃষ্টিতে তরমুজ ক্ষেতগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে তরমুজ। বাধ্য হয়ে পানির তলা থেকে তরমুজ তুলে ফেললেও সেগুলো পচে যাচ্ছে। ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা।
বুধবার (১১ মে) সকালে ও মঙ্গলবার (১০ মে) বিকালে সদর বরগুনার বালিয়াতলী ইউনিয়নের হেউলিবুনিয়া ও নিমতলা এলাকায় দেখা যায় এমনই চিত্র।
একই সঙ্গে দেখা যায়, একরের পর একর তরমুজ ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। তরমুজ চাষিরা ক্ষেত থেকে পানি সরাচ্ছেন। পাকা-আধাপাকা তরমুজ তুলতে রাস্তার পাশে স্তূপ করা হচ্ছে। তবে কোথাও কোনো পাইকারের দেখা মেলেনি।
বালিয়াতলী ইউনিয়নের তরমুজ চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, এবার দুই একর জমিতে তরমুজের আবাদ করেন তিনি। সার, ওষুধ, সেচ দিয়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে তার।
আনোয়ার বলেন, ক্ষেতজুড়ে যেভাবে ফল আসতে শুরু করেছিল তাতে আমার প্রায় পাঁচ লাখ টাকা লাভ হতো। তবে হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। দুদিন ধরে ক্ষেতের পানি সরানোর জন্য চেষ্টা করেও পারেননি। বাধ্য হয়ে পাকা-আধাপাকা তরমুজগুলো বিক্রির জন্য ক্ষেত থেকে তুলে ফেলেছি।
হেউলিবুনিয়া এলাকার তরমুজ চাষি মাসুদ মিয়া বলেন, তরমুজ গাছ বেশি পানি সহ্য করতে পারে না। তাই বৃষ্টির পানিতে ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় গাছগুলো মরে গেছে। এতে আমাদের কমপক্ষে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।
নিমতলার চাষি মো. জাফর জানান, বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়া ক্ষেত থেকে প্রায় চার শতাধিক তরমুজ তুলতে পেরেছেন তিনি। তবে পাইকার না থাকায় তা বেঁচতে পারছেন না।
জাফর বলেন, পাইকাররা পানিতে নিমজ্জিত তরমুজ কিনতে চাচ্ছেন না। এতে আড়াই লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়ে যাবে আমার।
এ বিষয়ে বরগুনা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. বদরুল আলম বলেন, মূলত তরমুজের মৌসুম শেষ। তবে কিছু চাষি অধিক লাভের আশায় সব তরমুজ একবারে না তুলে ধীরে ধীরে তুলে বাজারে বিক্রি করছিলেন। বৃষ্টির পানিতে তাদের খেত তলিয়ে নষ্ট হতে পারে। বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব।
এসএন