নেত্রকোনায় রঙিন ফুলকপির চাষ
নেত্রকোনা জেলার বারহাট্রায় বিষমুক্ত শাকসবজি উৎপাদনে মডেল কৃষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস। তিনি কোনো প্রকার কীটনাশক ছাড়াই শাকসবজি উৎপাদন করছেন।
মডেল এ সবজি চাষি সন্তোষ বিশ্বাস বারহাট্টা উপজেলার সদর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা।
এবার তিনি বেগুনি ও হলুদ রঙের ফুলকপি চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন। অধিক লাভের কারণে প্রতিবেশী কৃষকদের মাঝেও ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
কৃষিবিদ দিলীপ সেন জানান, বেগুনি ও হলুদ রঙের ফুলকপিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ক্যান্সারের সেল বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। ফলে রঙিন ফুলকপির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বাজারে, যার মূল্যও দ্বিগুণ। নিয়মিত ফুলকপি খাদ্যে রক্তচাপ কমে, হজমশক্তি বাড়ায়, প্রদাহ কমায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মডেল কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস জানান, প্রায় ২৫ শতাংশ জায়গায় শশা, ডাটা, লাউ, ঢেঁড়শ, ফুলকপি, বেগুন, মরিচ, টমেটো, শিম, ক্যাপসিকাম, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপিসহ মৌসুমি শাকসবজি নিয়মিত চাষ করেন। সেই সঙ্গে রঙিন ফুলকপিও চাষ করেন কিন্তু রঙিন ফুলকপি ও অন্যান্য ফুলকপি উৎপাদন খরচ একই। তবে রঙিন হওয়ায় এ ফুলকপির দাম দ্বিগুণ। তিনি বারহাট্টা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ২০০ বীজ এনে রোপণ করেছিলেন, কোনো ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য সবজির পাশাপাশি পরীক্ষামূলক ২ শতাংশ জমিতে ২০০ ফুলকপির বীজ রোপণ করে প্রায় ২০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেন। এ ছাড়াও ফুলকপি জমির ভেতরে ও পাশে কচু, লালশাক, বেগুন, টমেটো রোপণ করা হয়েছে। নতুন এ সবজি অন্যান্য সবজির তুলনায় অধিক মূল্য।
বারহাট্টার বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রভাষক রিপন গুণ বলেন, এ ধরনের বাহারি রঙের রঙিন সবজি আমার মনে হয় বারহাট্টায় এবারেই প্রথম চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উচ্ছাস পাল জানান, সন্তোস বিশ্বাস নতুন কোনো ফসলের খবর পেলেই তিনি সেটা চাষ করেন। সেই ধারাবাহিকতায় এ উপজেলায় প্রথম বেগুনি ও হলুদ ফুলকপি চাষ করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাকিবুল হাসান জানান, রঙিন ধরনের শাকসবজির প্রতি কৃষক সন্তোষ বিশ্বাসের আগ্রহ অনেক বেশি। সেজন্য তিনি বেগুনি ও হলুদ ফুলকপি প্রথম করলেও অধিক লাভবান হয়েছেন। আমরা চাই সব কৃষকের মাঝে তথ্য-প্রযুক্তির নতুনত্ব পৌঁছে দিতে। সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।
নেত্রকোনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিয়া বলেন, ইউরোপিয়ান জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক তথ্য যে, ফুলকপির জুস স্তন ক্যান্সারের সেল বৃদ্ধি কমায়। বয়ঃসন্ধির সময় নিয়মিত ফুলকপির রস খাওয়ায় স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ৭২ শতাংশ কমে যায়। এটি প্রস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধেও বেশ কার্যকরী।
এসএন