কৃষিমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীর সুস্পষ্ট বক্তব্য
'নাজিরশাইল ও মিনিকেট নামে কোন চাল নেই'
দেশের বাজারে নাজিরশাইল বা মিনিকেট বলতে কোন চাল নেই। নাজিরশাইল ও মিনিকেট নামে যেসব চাল বিক্রি করা হচ্ছে তা ভিন্ন জাতের চাল। ২৮ বা ২৯ জাতের। সরকারের কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এবং খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার শুক্রবার (১১ মার্চ) এটা সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ৩৬ তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন (এপিআরসি) শেষে নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে কৃষি মন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রী এসব কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক মোটা চালের দাম নিয়ে বলেন, 'আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই মোটা চালের দাম ওইভাবে বাড়েনি যেভাবে মিডিয়ায় এসেছে। আমি কক্সবাজার, বরগুনা এবং নিজের এলাকাতে দেখেছি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২/৪৩ টাকা কেজি দরে।'
এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানিও (বিএটিসি) এখন চাল মার্কেটিং করছে। স্কয়ার আর এসিআই তো করছেই। এরা সবাই এখন চাল ব্যবসায় এসেছে, খাদ্যপণ্যের ব্যবসায় এসেছে। এটা খারাপ না, ইতিবাচক। আমরা এটাকে উৎসাহিত করব। আমরা চাই বাংলাদেশের অ্যাগ্রো প্রসেসটা ডেভলপ করুক।
তিনি বলেন, বিএটিসি'র চালের প্যাকেট দেখলে ভেতরে কি আছে সেটা না দেখেই আপনার কিনতে ইচ্ছে হবে। তারা ৮২ টাকা করে প্রতি কেজি মিনিকেট এবং ৭০/৭২ টাকা করে নাজিরশাইল বিক্রি করছে। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, নাজিরশাইল বলতে কোন চাল নেই। কিন্তু বিএটিসি প্যাকেটের গায়ে নাজিরশাইল লিখে বিক্রি করছে। ২৮ নম্বর চালকে তারা নাজিরশাইল বলে বিক্রি করছে। অন্যান্য অনেক কোম্পানিও এভাবে চাল বিক্রি করছে।
নাজিরশাইলের নামে যে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে-সেটি বন্ধের উপায় কী ঢাকাপ্রকাশ-এর এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাজারে নাজিরশাইল বা মিনিকেট বলতে কোন চাল নেই। চালের প্রকৃত নাম দিতে হবে। এখানে খাদ্যমন্ত্রী উপস্থিত আছেন আমি তাকে অনুরোধ করবো প্যাকেটের গায়ে যেন চালের নাম লিখে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে যেন খাদ্যমন্ত্রী উদ্যোগ নেন।
এ সময় পাশে বসা খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারও কৃষি মন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন, নাজিরশাইল বা মিনিকেট বলতে কোন চাল নেই। ২৮/২৯ কে নাজিরশাইল বলে চালানো হয়। তিনি বলেন এ বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিটও হয়েছিল। আমরা তার জবাব দিয়েছি এবং বলেছি নাজিরশাইল বা মিনিকেট বলতে কোন চাল নেই।
ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে চালের প্যাকেটে নাজিরশাইল বা মিনিকেট ব্র্যান্ড লিখলেও প্যাকেটে কোন জাতের চাল আছে, সেই জাতের নাম লিখতে হবে। এই নির্দেশনার বিষয়টি আমরা ভোক্তা অধিকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি যে, প্যাকেটের গায়ে চালের জাতের নাম লেখা না থাকলে সেটিকে অবৈধ বলে ধরে নেওয়া হবে এবং ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
এসময় খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, আমরা বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কে চিঠি দিয়ে বলেছি আপনারা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করুন এই মর্মে যে, নাজিরশাইল বা মিনিকেট নামে ব্রি উদ্ভাবিত কোন ধান এখন নেই। বাজারে এই নামে যেসব চাল পাওয়া যায় সেটা আসলে ভিন্ন জাতের চাল।
/এএস