কে-টু জয় করে দেশে ফিরেছেন ওয়াসফিয়া
বাংলাদেশের একমাত্র সেভেন সামিট জয়ী পর্বতারোহী ওয়াসফিয়া নাজরীন।
প্রথম বাংলাদেশি ও নারী হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং বিপদসংকুল পর্বতশৃঙ্গ-‘কে-টু’ জয় করে মাতৃভূমিতে ফিরেছেন।
নেপালের কাঠমান্ডু থেকে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে আজ, ১৭ আগস্ট, দেশে ফিরেছেন ৩৯ বছর বয়সী পর্বতারোহী।
১৯৫৪ সালের পর পৃথিবীর অন্যতম দুর্গম ও ভয়ঙ্কর পর্বতশৃঙ্গ কে-টু -তে আরোহণ করা ৪০ নারী পর্বতারোহীর তিনি অন্যতম। এই পর্বত পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, পাকিস্তানের উচ্চতম। তিনি কে-টু বিজয়ী প্রথম বাঙালি, বাংলাদেশি ও নারী।
ওয়াসফিয়া প্রথম বাঙালি, প্রথম বাংলাদেশি-তিনি সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় করলেন।
তার এই অভিযানসহ অনেক অভিযানের স্পন্সর হিসেবে পাশে ছিলো রেনাটা।
দেশে পৌঁছানোর পর, রাজধানীর শেরাটন ঢাকায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই মাসব্যাপী ‘কারাকোরাম’ অভিযানের রোমাঞ্চকর ভ্রমণ নিয়ে বলেন ওয়াসফিয়া।
তিনি জানিয়েছেন, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কে-টু’তে ট্রেকিং ও পর্বতারোহণের অনুমতি পেয়েছিলেন।
এরপর বাংলাদেশের একমাত্র সেভেন সামিট করা, নারী পর্বতারোহী ওয়াসফিয়া নাজনীন বলেছেন “বাংলাদেশ যখন ৪০ -এ পা দিয়েছে, তখন আমি সেভেন সামিটে যাত্রা শুরু করি। এই ১০ বছরে বিশ্বের উচ্চতম পর্বতগুলো একে, একে জয় করেছি। মাতৃভূমির ৫০ বছর বা সুবর্ণজয়ন্তীতে আমি চেয়েছিলাম, ‘কে-টু’ জয় করতে। এজন্য কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে তৈরি করেছি। ডেথ-জোন (অক্সিজেনের প্রবল স্বল্পতায় উচ্চতম ও দুর্গম পর্বতের যে অংশগুলোতে আরোহণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ) পাড়ি দিতে অনেক দক্ষ ও পেশাদার পর্বতারোহী গাইডের সাহায্য প্রয়োজন হয়। দলবদ্ধভাবেও পাড়ি দিতে হয়। এই পর্বত জয়ের জন্য আমি আমার দলের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আমার দলে যারা ছিলেন, তাদের বেশকজনকে এই মূহূর্তে বিশ্বের সেরা পর্বতারোহী হিসেবে মনে করা হয়। যারা আমার মঙ্গল কামনা করেছেন, আমার ওপর যারা ভরসা করেছেন-তাদের সবাইকে ধন্যবাদ।”
ওয়াসফিয়া আরো বলেছেন, “কে-টু’ আমার আরোহণ করা সবচেয়ে দুর্গম পর্বত। সেখানে বেশ কয়েকবার পাথরে আঘাত পেয়েছি আবার কিছু ক্ষেত্রে ভাগ্য আমাদের সহায়তা করেছে। স্থানীয়ভাবে ‘ছোগোরি’ বা ‘পর্বতের রাজা’ হিসেবে পরিচিত, এই পর্বত পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে। প্রতি পদক্ষেপে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। একবারেই কে-টু জয় করে ফেরত আসতে পেরেছেন এমন অল্প কজন পর্বতারোহীর মধ্যে আমি আছি। এমন অনেক বিশ্ববিখ্যাত পর্বতারোহীও রয়েছেন, যারা বছরের পর বছর চেষ্টা করেও কে-টু জয় করতে পারেননি।”
ওয়াসফিয়া নাজনীন এরপর বলেছেন, ‘আমি কে-টু অভিযানের স্পন্সর রেনাটা লিমিটেডকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা আমার ও মিশনের ওপর ভরসা রেখেছেন। আমাকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছেন।”
লেখা ও ছবি : এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটি।
ওএফএস।