রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

আরব আমিরাতের মরুভূমিতে উৎপাদিত হচ্ছে কৃত্রিম হীরা

ছবি সংগৃহিত

দুবাই মাল্টি কমোডিটি সেন্টারের সিইও ও নির্বাহী চেয়ারম্যান আহমেদ বিন সুলায়েম বলেন, “আরব আমিরাতের একটি শীর্ষ হীরা ব্যবসার কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। এক্ষেত্রে তেলের ব্যবসার পাশাপাশি বৈচিত্র্য আনতে ল্যাবে-উত্পাদিত হীরা শিল্পে প্রসারিত করা অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।”

পৃথিবীর দুর্লভ ধাতুগুলোর মধ্যে অন্যতম হীরা। হাজারো বছর ধরে হীরার সন্ধানে মানুষ পৃথিবীর গভীরে খনন করেছে। এই খনন প্রক্রিয়ায় প্রকৃতি ও মানুষ উভয়ের ওপরই ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ছে।

হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ হীরার সন্ধানে পৃথিবীর গভীরে খনন করেছে। যার ফলশ্রুতিতে রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবসৃষ্ট গর্তের তৈরি হয়েছে। গভীরতার দিক থেকে যা ৬২৫ মিটার কিংবা ২,০৫০ ফুট।

হীরা খুঁজতে গিয়ে খনন প্রক্রিয়ায় প্রকৃতি ও মানুষ উভয়ের প্রতিই ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ছে। এই কাজটি একদিকে যেমন বিপজ্জনক; অন্যদিকে এটি বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করছে।

কিন্তু হীরার চাহিদা মেটাতে খননই একমাত্র সমাধান নয়। বরং পাশাপাশি ভিন্ন উপায়ও রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল জেম সোসাইটি তথ্যমতে, ১৯৫০-এর দশকে প্রথম ল্যাবে হীরা উৎপাদন করা হয়েছিল।

সময়ের সাথে সাথে ল্যাবে তৈরি হীরার প্রযুক্তিটি বিকাশ লাভ করেছে। বর্তমানে ল্যাবগুলি প্রায় ৮০ ভাগ সাশ্রয়ী মূল্যে ভালো মানের হীরা তৈরি করছে। এতে খনন কিংবা নেতিবাচক প্রভাবের মতো জটিলতা নেই।

কৃত্রিমভাবে হীরা উৎপাদনের সুবিধা হচ্ছে এটি যেকোনো অঞ্চলেই করা যেতে পারে। এমনকি মরুভূমির মতো জায়গায়ও তা করা সম্ভব।

সংযুক্ত আরব আমিরাত হীরা আমদানি ও রপ্তানিতে প্রথমসারির দেশগুলোর মধ্যে একটি। তবে আপাতত সেখানে হীরার কোনো প্রাকৃতিক খনি নেই। তাই দেশটির উদ্যোক্তা মোহাম্মদ সাবেগ শুধু হীরার ব্যবসাই নয়, বরং এটিকে উৎপাদন করার সম্ভাবনাও দেখেছেন।

তারই ধারাবাহিকতায় সাবেগ ২০২২ সালে দুবাই-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ২ডিওটি৪ ডায়মন্ডস প্রতিষ্ঠা করেন। এটিই আরব আমিরাতের প্রথম কোম্পানি যেটি ল্যাবে উৎপাদিত হীরা তৈরি, কাটা এবং পালিশের কাজ করে থাকে।

এ সম্পর্কে সাবেগ বলেন, "আমাদের ধারণা ছিল হীরাকে বরং ভোক্তাদের কাছে সহজলভ্য করা। এক্ষেত্রে সারা বিশ্ব থেকে হীরা নিয়ে আসার পরিবর্তে বরং স্থানীয়ভাবে তা উত্পাদন ও বিক্রি করা।"

ডায়মন্ড তৈরি

কৃত্রিমভাবে ডায়মন্ড তৈরি বিষয়টিও বেশ জটিল। এ সম্পর্কে সাবেগ বলেন, "প্রাকৃতিক ডায়মণ্ডের সাথে এর মূল পার্থক্য হচ্ছে আমরা চাপ, তাপ ও গ্যাস নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকি। কিন্তু খনির হীরায় তার প্রয়োজন হয় না। বরং তা প্রাকৃতিকভাবেই হয়ে থাকে।"

সাবেগ জানান, একটি ডায়মন্ড উৎপাদন করতে আরেকটি ডায়মন্ডের দরকার হয়। সেটা ল্যাবে উৎপাদিত কিংবা প্রাকৃতিক একটা হলেই চলে। এটিকে বলা হয়ে থাকে সীড; যা সাধারণত প্রায় ০.৩ থেকে ০.৬ মিলিমিটার পুরু হয়ে থাকে।

সীডটিকে মূলত একটি চুল্লির ভেতরে রাখা হয়। পরবর্তীতে এটিকে হাইড্রোজেন, মিথেন, অক্সিজেন ও আর্গনের মতো গ্যাসের সংস্পর্শে আনা হয়। এটিকে ১৮০ টর পর্যন্ত চাপ দেওয়া হয়; যা মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় চাপের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। একইসাথে ১ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয়। এইভাবে ধীরে ধীরে পাতলা স্লাইসে কার্বন জমা হয়। এরপর এটি আয়তনে যেন আরও বাড়ে সেটির জন্য অপেক্ষা করা হয়।

সাবেগ বলেন, "বিভিন্ন প্যারামিটারের ওপর ভিত্তি করে ডায়মন্ডের উৎপাদনের সময় ঠিক করা হয়। এক্ষেত্রে উৎপাদনে গতি যত কম হবে মান তত বৃদ্ধি পাবে।"

২ডিওটি৪ কোম্পানিটি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ০.০১ মিলিমিটার গতিতে হীরা উৎপাদন করে। অর্থাৎ প্রতি ২৪ ঘণ্টায় খণ্ডটি দুটি কাগজের শিটের পুরুত্বের সমপরিমাণ দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়।

এক্ষেত্রে হীরাটির উচ্চতা কমপক্ষে পাঁচ মিলিমিটার হয়ে গেলে টুকরোটিকে 'ব্লক' বলা হয়। তখন তিনটি কাজ করা যেতে পারে। এক, এটিকে সীড তৈরির জন্য আরও কাটা যেতে পারে; যা থেকে চুল্লিতে আরও হীরা উৎপাদন করা যাবে।

দুই, চাহিদার উপর ভিত্তি করে রত্নটি কেটে পালিশ করা যেতে পারে। এটি তখন হয় জুয়েলার্স ও ডিজাইনারদের কাছে বিক্রি করা যেতে পারে। তিন, ডায়মন্ডটিকে ঘরে ডিজাইন করা একটি গহনার টুকরোয় পরিণত করা যেতে পারে।

হীরা শিল্পের বিশ্লেষক ও পরামর্শদাতা মার্কিনি পল জিমনিস্কির মতে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারত ল্যাবে তৈরি হীরা উৎপাদনে সবচেয়ে আধিপত্য বিস্তার করছে। এক্ষেত্রে চীন ও ভারত বিশ্বব্যাপী হীরা উৎপাদনের দুই-তৃতীয়াংশ বাজার দখল করে রেখেছে।

গহনা ছাড়াও ল্যাবে উৎপাদিত হীরা একাধিক শিল্পে ব্যবহার করা হয়। বিশেষত কংক্রিট ও মার্বেলের মতো ঘন উপাদানগুলিকে কেটে সরঞ্জাম তৈরির ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয়।

জিমিনিস্কি বলেন, "চীনের কয়েক দশক ধরেই শিল্পে বস্তু থেকে কিছু ঘষে তুলে ফেলতে কৃত্রিম হীরা উৎপাদন করা হয়। পাশাপাশি গয়নায় ব্যবহারের জন্যও দেশটিতে কৃত্রিম হীরা উৎপাদনের পরিকাঠামো আছে।"

অন্যদিকে ভারত হীরা কাটা ও পালিশ করার ক্ষেত্রে বেশ সাফল্য দেখিয়ে চলছে। এমনকি বৈশ্বিক বাজার দখল করতে দেশটি ল্যাবে উৎপাদিত ডায়মন্ড প্রযুক্তিও ব্যবহার করছে। গত বছর দেশটির এই শিল্পে কর সংক্রান্ত সংস্কার হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম হীরা শিল্পকে আরও প্রসারিত করতে অতিরিক্ত তহবিলের আহ্বান জানিয়েছে।

দুবাই মাল্টি কমোডিটি সেন্টারের সিইও ও নির্বাহী চেয়ারম্যান আহমেদ বিন সুলায়েম বলেন, "আরব আমিরাতের একটি শীর্ষ হীরা ব্যবসার কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। এক্ষেত্রে তেলের ব্যবসার পাশাপাশি বৈচিত্র্য আনতে ল্যাবে-উত্পাদিত হীরা শিল্প প্রসারিত করা অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।"

বিন সুলায়েম বলেন, "ল্যাবে উৎপাদিত ডায়মন্ড প্রযুক্তি ও বাণিজ্যের সাথে সংযোগের প্রতীক। এটির বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা এই রূপান্তরের যুগে দুবাইকে একটি অগ্রগামী শক্তি হিসাবে দেখতে উচ্ছ্বসিত।"

বিল সুলায়েম আরও বলেন, "ষাট বছর আগে কাউকে ল্যাবে উৎপাদিত হীরার কথা বললে তারা আপনার দিকে ফিরেও তাকাতেন না। কিন্তু বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম খনির সাথে যুক্ত নৈতিক ও পরিবেশগত সমস্যাগুলির বিষয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। অন্যদিকে বিলাসবহুল পণ্যের ক্রয়ক্ষমতার দিকে মানুষ ক্রমেই আকৃষ্ট হচ্ছে। তাই এই শিল্পকে মানিয়ে নিতে হবে।"

তবে জিমনিস্কির মতে, ল্যাবে উৎপাদিত ডায়মন্ড শিল্পে নিজেদের অবস্থান তৈরি করা আরব আমিরাতের জন্য খুব একটা সহজ হবে না। কেননা দেশটিকে এক্ষেত্রে ভারত ও চীনের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে।"

উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যান্য কোম্পানি ২ডিওটি৪ এর দেখানো পথই অনুসরণ করছে। যার মধ্যে এইচআরএ গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ইভিকিউএ ডায়মন্ডস অন্যতম; যা এইচআরএ গ্রুপের একটি অংশ। কোম্পানিটি মাত্র কয়েক মাস আগে আমিরাতে নিজেদের ল্যাব স্থাপন করেছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় ব্র্যান্ড ইটিকা ও ইয়াইনি শুধু ল্যাবে তৈরি ডায়মন্ড ব্যবহার করে তাদের ডিজাইন বাজারজাত করছে।

বিন সুলায়েম বলেন, "ল্যাবে উৎপাদিত হীরা শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি যে, হীরা বিক্রি করে আপনার সময় নষ্ট করবেন না। বরং চূড়ান্ত শিল্পের দিকে মনোনিবেশ করুন।"

তবে সাবেগের জন্য আশার বিষয় হল, ২ডিওটি৪ এমন একটি দেশে ল্যাবে তৈরি হীরা উৎপাদনের যাত্রা শুরু করেছে যেটি বর্তমানে বিশ্বের অন্য যেকোনো স্থানের চেয়ে বেশি হীরা আমদানি করে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, "এখন আমাদের উচিত হবে শিল্পটিতে একটি মান নির্ধারণ করা।"

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি