মরুর বুকে রবিবার এলেও হয়নি পাক-ভারত ফাইনাল!
ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ যেন আকাশের তারা। চাইলেই পাওয়া যায় না। দুই দেশের রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অথচ পাক-ভারত ম্যাচ নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে কী ব্যাপক উত্তেজনাই না তৈরি হয়।
ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তানের সাক্ষাৎ হয় এখন কালে-ভাদ্রে। আইসিসি অথবা এসিসির ইভেন্টই এখন একমাত্র ভরসা। আইসিসির ইভেন্টে খেলা নির্ভর করে গ্রুপিংয়ের উপর। কিন্তু এসিসির ইভেন্টে এই দুই দেশের খেলা যাতে হয়, সেভাবেই গ্রুপিং করা হয়ে থাকে। এসিসির এবারের এশিয়া কাপের সূচি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে করে দুই দেশের খেলা একবার, দুইবার নয়, তিন তিনবার দেখা হওয়ার কথা। কিন্তু ভারত ফাইনালে না উঠাতে তা আর হয়ে উঠেনি।
এশিয়া কাপে এসিসি পাক-ভারত দ্বৈরথ যাতে একাধিকবার হয়, সেজন্য দুই দেশকেই একই গ্রুপে রেখেছিল। এখানে তৃতীয় দল রাখা হয়ে আবার বাছাইপর্ব থেকে উঠে আসা দুর্বল দলটিকে। এতে করে ভারত-পাকিস্তান দুই দলেরই সুপার ফোরে উঠা নিয়ে শঙ্কা ছিল শূন্যের কোঠায়। তাই সুপার ফোরেও দেখা হয় আরেকবার। বাকি ছিল ফাইনাল। কিন্তু ফাইনালটা আবার গ্রুপ পর্বের মতো সহজ সমীকরণে ছিল না। অপর প্রুপ থেকে উঠে আসা দুইটি দল শ্রীলঙ্কা আর আফগানিস্তানও ছিল জোর দাবিদার। সেখানে শ্রীলঙ্কা পেয়ে যায় ফাইনালের ভিসা, সঙ্গে পাকিস্তান। যে কারণে এশিয়া কাপের পনেরতম আসরেও দেখা হলো না পাক-ভারত ফাইনাল। এ নিয়ে আয়োজক ও ক্রিকেট প্রেমীদের একটা আফসোস থেকেই গেল আগামীর পানে চেয়ে।
পাক-ভারত ফাইনাল নিয়ে আয়োজকদের শঙ্কা থাকলেও অপর দুইটি ম্যাচ নিয়ে কোনো রকম শঙ্কা ছিল না। যে কারণে দুই দলের খেলাটা সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রবিবারেই রাখা হয়েছিল। ফাইনাল খেলাও রবিবারে। রবিবারে রাখার কারণ মরুর বুকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে যাতে করে মাঠে দর্শকরা বেশি পরিমাণে আসতে পারেন। আবার যারা মাঠে আসবেন না, তারা যাতে টিভিতে বসে খেলা দেখতে পারেন সে বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছিল। ফাইনালের রবিবার এসেছে টিকই, কিন্তু হয়নি পাক-ভারত ফাইনাল।
দর্শক চাহিদার কথা বিবেচনা করা রবিবারে যাতে খেলা হয় সেজন্য আয়োজকরা দুই দেশের প্রথম খেলাতেই পরস্পরের বিপক্ষে মাঠে নামিয়ে দেন। এটি করা না হলে রবিবার আর পাওয়া যেত না। একই কাজ করা হয় সুপার ফোরেও। এখানেও ভারত-পাকিস্তান নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় পরস্পরের বিপক্ষে। তাই গত দুইট রবিবার মরুর বুকে অন্য রকম আবেগ আর অনুভূতি নিয়ে এসেছিল।
মাঠে ও টিভিতে ভারত-পাকিস্তান খেলা দেখার জন্য দর্শকদের আগে থেকেই প্রস্তুতি। রবিবারকে আগে থেকেই বরাদ্দ করা এই ম্যাচের জন্য। এ দিন রাখা হয়নি অন্য কোনো কাজ। সব আয়োজন ম্যাচকে ঘিরেই। মাঠতো পরিপূর্ণ ছিলই। টিভিতেও রেকর্ড পরিমাণ দর্শক খেলা দেখছেন বলে জানিয়েছে সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান ডিজনি স্টার। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গ্রুপ পর্বের ম্যাচ টিভিতে দেখেছেন ১৩৩ মিলিয়ন দর্শক। বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো বাদে এটি সর্বোচ্চ সংখ্যক দর্শকদের খেলা দেখা।
ফাইনালে যেতে না পরাার আফসোস থাকলেও গ্রুপ পর্ব আর সুপার ফোরের ম্যাচে দর্শকদের তৃপ্তি ছিল শতভাগ। দুইটি ম্যাচই ছিল টানটান উত্তেজনার। দুইটি ম্যাচেই ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে ৫ উইকেটে। দুইটি ম্যাচই গড়িয়েছিল শেষ ওভারে। গ্রুপ পর্বে ভারত ২ বল বাকি থাকতে জয়ী হয়। সুপার ফোরে পাকিস্তান জয়ী হয় ১ বল বাকি থাকতে।
এমপি/আরএ/