অমিত-তৌহিদের সেঞ্চুরি
জয় দেখছে মধ্যাঞ্চল
বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের তৃতীয় দিনে এসেও দুইটি ভেন্যুর দৃশপটে পরিবর্তন আসেনি। যথারীতি মিরপুরে বোলারদের দাপট অব্যাহত, চট্টগ্রামে অব্যাহত ব্যাটারদের দাপট। এর ফলে মিরপুরে ম্যাচের নিস্পত্তি হতে চলেছে। চট্টগ্রামের ম্যাচের গন্তব্য ড্র।
মিরপুরে বোলারদের দাপটে তৃতীয় দিনে উইকেট পড়েছে দুই দলের মিলে ১২টি। যেখানে জয়ের পথে আছে মধ্যাঞ্চল। চট্টগ্রামে ব্যাটসম্যানদের দাপটে উইকেট পড়েছে মাত্র একটি। সেঞ্চুরি হয়েছে দুইটি। তৌহিদ হৃদয় ১৫৯ রানে আছেন অপরাজিত। আউট হওয়া একমাত্র ব্যাটসম্যান অমিত হাসান করেন ১৩১ রান।
মিরপুরে পূর্বাঞ্চল বোলারদের দাপটে প্রথম ইনিংসে লিড পেয়েছিল ১৮ রানের। আগের দিনের রানের সঙ্গে মাত্র ৪ রান যোগ করে তাদের শেষ ব্যাটসম্যান রবিউল(২৬) আউট হলে ইনিংস শেষ হয় ২২৭ রানে। কিন্তু এই সুখ তাদের টিকেনি দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। মাত্র ১৮০ রানে অলআউট হয়ে তারা হারকে তরান্বিত করে তুলে। এক পর্যায়ে ৫১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে তারা ছিল মহাবিপদে। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করার জন্য ত্রাতা হয়ে উঠেন প্রিতম কুমার ও নাঈম হাসান। এই দুই ব্যাটসম্যান সপ্তম উইকেট জুটিতে হাল ধরে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সফলও হন তারা। জুটিতে আসে ১০৩ রান। কিন্তু তারপরও ইনিংস দুইশ পার হয়নি। আর এই না হওয়ার কারণ স্পিনার হাসান মুরাদ। তিনি এই দুজনসহ শেষ চার ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন।
হাফ সেঞ্চুরি করার পরপরই প্রিতম কুমার ৫৪ রানে ফিরে যাওয়ার পর দলীয় একই (১৫৪) রানে ফিরে যান তানভীর ইসলাম। ৬৮ রান করে নাঈম হাসান স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন জাকের আলীর হাতে। এরপর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন আসাদুজ্জামান পিয়াল। হাসান মুরাদ ৩৭ রানে ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন আবু হায়দার রনি ও মৃতুঞ্জয় চৌধুরী।
প্রথম ইনিংসের ১৮ রানের লিড নিয়ে ১৯৮ রানে এগিয়ে থাকে পূর্বাঞ্চল। ছোট টার্গেট। জয় নাগালের কাছেই। আবার উইকেট যেমন বোলারদের হয়ে কথা বলছে তাতে করে এই ছোট্টা টার্গেট কঠিন হওয়া অস্বাভাবিক না। শুরুতেই দলীয় ২৫ ও ব্যক্তিগত ১২ রানে প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মিজানুর ফিরে গিয়ে সেই শঙ্কাকে আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু তা গ্রহণ করতে রাজি ছিলেন না প্রথম ম্যাচের দুই সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ মিঠুন ও সৌম্য সরকার। দুজনে আর কোনো উইকেটের পতন হতে না দিয়ে দিন পার করে দেন ৭৫ রান যোগ করে। দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৮৭। জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন আরো ১১২ রানের। মিঠুন ৪২ ও সৌম্য ৩৩ রান নিয়ে আজ (২১ ডিসেম্বর) আবার ব্যাট করতে নামবেন।
চট্টগ্রামের উইকেট ছিল ব্যাটসম্যানদের জন্য অভয়ারন্য আর বোলারদের জন্য ভীবিষীকাময়। আগের দুই দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান দক্ষিণাঞ্চলের অমিত হাসান ও তৌহিদ হৃদয় দলের রানকে ৩১২ পর্যন্ত নিয়ে যান। জুটিতে তারা যোগ করেন ২৫৮ রান। ৩৭৩ বলে ১৩১ রান করে তিনি আউট হন শরিফউল্লাহর বলে। সেঞ্চুরি করেন ২৯১ বলে। বাউন্ডারি ছিল ১২টি। ১১ চার ও ২ ছয়ে ১৭৬ বলে সেঞ্চুরি করেন তৌহিদ হৃদয়। ১৫৯ রানে অপরাজিত তৌহিদ মোট ২৮৬ বলে খেলেছেন। তিন ছক্কার সঙ্গে আছে তার ১৩ চার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল বনাম ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল:
পূর্বাঞ্চল: ২৪৫ ও ১৮০/১০, ওভার ( নাঈম হাসান ৬৮, প্রিতম কুমার ৫৪, আশরাফুল ১৬, নাদিফ চৌধুরী ১০, হাসান মুরাদ ৪/৩৭, আবু হায়দার রনি ২/২৬,মৃতুঞ্জয় চৌধুরী ২/৩৯,)।
মধ্যাঞ্চল: ২২৭/১০, (আগের দিনের ২২৩/৯) ওভার ৮৯.৩ ( ( জাকের আলী ৯২, তাইবুর ৭৬, রবিউল হক ২৬. আসাদুজ্জামান পিয়াল ৩/৪৯, তানভীর ইসলাম ২/৪২, এনামুল হক ২/৫৩, নাঈম হাসান ২/৭০) ও ৮৮৭/১, ওভার ২৩ ( মোহাম্মদ মিঠুন ৪২* সৌম্য সরকা ৩৩* মিজানুর ১২, এনামুল ১/৩৮)
বিসিবি উত্তরাঞ্চল বনাম বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল
উত্তরাঞ্চল: ৩৮৫/১০।
দক্ষিণাঞ্চল: ৩৫০/৩, (আগের দিনের ১১২/২) ওভার ১২৯ ( তৌহিদ হৃদয় ১৫৯*, অমিত হাসান ১৩১,এনামুল হক ৩৫, শফিকুল ইসলাম ১/৫১, নোমান চৌধুরী ১/৫৮, শরিফউল্লাহ ১/১০১)।
এমপি/এসআইএইচ