‘ক্রিকেটারদের টানা ১০ দিন খেলার মানসিকতা নেই’
টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ২২ বছর হয়ে গেছে বাংলাদেশের। কিন্তু এখনো হাটি হাটি পা পা করে এগুচ্ছে। নেই দৃশ্যমান কোনো উন্নতি। ঝড়েরমাঝে কুড়িয়ে পাওয়া আমের মতো মাঝে মাঝে আসে এক একটি জয়। তাই নিয়ে আহলাদে আটখানা থাকেন সবাই। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়।
চলতি বছরের শুরুতেই জানুয়ারি মাসে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে দেওয়ার পর সে কি উল্লাস। যেন বিশ্ব জয়ের শামিল। এক টেস্ট জিতেই নিউ জিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বপ্নের বীজও বুনন করা হয়ে যায়। তা ছিল শুধুই কল্পনায় আঁকা ছবি। বাস্তবে ছিল অশ্ব ডিম্ব। কারণ পরের টেস্টেই বাংলাদেশ ফিরে যায় নিজেদের চেনা জায়গায়। যেখানে শুধুই হার। বাজেভাবে হার। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টেও বাংলাদেশের একই পরিণতি হয়েছিল। দাঁড়াতেই পারেনি। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। সেখনে প্রথমে ওয়ানডে (এই একটি ফরম্যাটে বাংলাদেশ দল সত্যিকার অর্থে উন্নতি করেছে) সিরিজ জিতে নেয়। এই সাহসে বলীয়ান হয়ে, পেছনে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জেতার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও টেস্ট সিরিজ জেতার দু:সাহসিক স্বপ্ন দেখে। কিন্তু বাস্তব ছিল বড়ই নির্মম। দুই টেস্টেই বাংলাদেশ হেরেছে। দুই টেস্টেরই দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ শতরানের নিচে অলআউট হয়ে লজ্জার হারকে সঙ্গী করেছিল।
এবার ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজ। ১৫ মে সেই সিরিজ শুরু হওয়ার আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দলের কোচিং স্টাফদের সঙ্গে বসেছিলেন দলের এ রকম পরিণতির কারণ জানতে। যেখানে কোচিং স্টাফরা জানিয়েছেন টানা ১০ দিন (পর পর দুই টেস্ট) খেলার মানসিকতা গড়ে উঠেনি ক্রিকেটারদের মধ্যে।
রবিবার তিনি রাজধানীর একটি হোটেলে কোচিং স্টাফদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘একটা জিনিস ওরা (কোচিং স্টাফ) মনে করে আসলে ১০ দিন খেলার মাইন্ডসেটটাই নেই। টানা ১০ দিন যে খেলতে হবে এই মাইন্ডসেটটা অনেক খেলোয়াড়ের নেই। এটা একটা মাইন্ডসেটের ব্যাপার। এটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘অনেক আলাপ-আলোচনা হয়েছে একটা জিনিস কোচিং স্টাফদের কাছ থেকে মনে হলো যে, ওরা আমাকে উদাহরণ দিচ্ছিল শেষ ৪-৫ টা টেস্ট ম্যাচের। এমনকি পাকিস্তানের সঙ্গে খেললাম প্রথম টেস্টটা মোটামুটি প্র্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি। দ্বিতীয় টেস্টে গিয়ে একেবারে ধরাশয়ী। বাইরের খেলাগুলোর কথা বললো। এমনকি নিউ জিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এমন আরও কয়েকটা খেলার কথা নিয়ে এলো। প্রথম টেস্টটা আমরা মোটামুটি ভালোই খেলি। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে গিয়ে মনে হয় আমরা একেবারেই পারছি না।’
বিসিবি সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো, ব্যাটিং কোচ জিমি সিডন্স, অ্যালান ডোনাল্ড, রঙ্গণা হেরাথ, অধিনায়ক মুমিনুল হক, বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, পরিচালক মাহবুব আনাম, ডা. ইসমাইল হায়দার মল্লিক, প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
এমপি/আরএ/