টাঙ্গাইলে ক্ষুদে শিশুদের পুতুল নাচে মুগ্ধ দর্শক

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
পুতুল নাচ গ্রাম-বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য নাচ। গানের তালে তালে ও বাদ্যযন্ত্রে সুরের মূর্ছনায় পুতুলের নৃত্য হয়। এটি গ্রামীণ জনপদে শিশু-কিশোর ও সর্বস্তরের মানুষের বিনোদনের মাধ্যম এবং পুতুল নাচ শিশুদের কাছে এক অন্যরকম উৎসবের মতো। এই পুতুল নাচ কালের আবর্তে আর আধুনিক সাংস্কৃতির আগ্রাসনে এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। মাঝে মধ্যে পহেলা বৈশাখ আর হাতেগোনা দু-একটি উৎসব ছাড়া পুতুল নাচ প্রদর্শিত হয় না।
সম্প্রতি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের গোপালপুর সূতি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জাতীয় শিক্ষা পদক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে ক্ষুদে শিশুরা পুতুলের আদলে অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করে। এতে পৌর শহরের সূতি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী অংশ নেন। শিশুরা পায়ের আঙুলের সঙ্গে হাতে সুতো বেঁধে, মাথায় ঘুমটা দিয়ে ও গায়ে বাঙালিয়ানা পোশাক পরিধান করে গানের তালে তালে নাচ প্রদর্শন করে।

এই মনোমুগ্ধকর পুতুলের আদলে নাচ উপস্থিত অতিথি ও অভিভাবকদের মুগ্ধ করে এবং তাদের মন জয় করে এই মানব পুতুল নাচ। সেই নাচের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা দেখে সুধীজনরা প্রশংসা করছেন। অনেকেই বলছেন পুতুলের আদলে শিশুদের এই নাচ নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পুতুল নাচের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। নাচের ভিডিওটি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সাবিনা তার ফেসবুকে শেয়ার করেন।
নৃত্য অংশ নেয়া তোহা, সূচী, হাবিবা, মীম, আরাধ্যা ও জীম বলেন- এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক আগে থেকে প্র্যাক্টিস শুরু করি। আমাদের স্কুলের সাবিনা ম্যাডামের সহযোগিতায় এই পুতুল নাচটি আমরা সুন্দরভাবে পুতুলের আদলে নাচতে পেরেছি। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তুহিন হোসেন, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম, রোকনুজ্জামান, সহকারী ইন্সট্রাক্টর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সূতি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সাবিনা আক্তার কলি বলেন- পুতুল নাচটা আমাদের গ্রাম-বাংলার এক প্রাচীন ঐতিহ্য। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন এই পুতুল নাচ আমাদের বিনোদনের প্রধান মাধ্যম ছিল। আমরা যখন মেলায় যেতাম তখন এই পুতুল নাচ না দেখলে আমাদের মেলা দেখা সার্থক হতো না। এই ঐতিহ্যগুলো এখন আর গ্রাম-বাংলায় নেই। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে এই পুতুল নাচ উপস্থাপন করি।
তিনি আরও বলেন- পুতুল নাচটি বাংলার বুকে আবার ফিরিয়ে দিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মফিজুর রহমান জিন্নাহ স্যারের নির্দেশে আমাদের বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পুতুল নাচের উদ্যোগ নেই। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সহযোগিতা করে। এতে আমরা ফিরে পাই আমাদের হারিয়ে যাওয়া সাংস্কৃতি সম্পদকে। আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো যে পিছিয়ে নেই তা এই শিশু শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করে দিল।
