লিপু-টিকোলোর পর বিজয়
অমিত সম্ভাবনা নিয়ে জাতীয়ে দলে প্রবশে করেছিলেন এনামুল হক বিজয়। জুটি বেঁধেছিলেন তামিম ইকবালের সঙ্গে; কিন্তু নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে পারেননি। ফলে বাদ পড়ে যান। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করে আবার ফিরে আসেন জাতীয় দলে। কিন্তু আবারও অবস্থান নড়বড়ে করে ফেলেন। ফলাফল আবারো বাদ। সেই এনামুল হক বিজয় আজ ঘরোয়া লিষ্ট ‘এ’ ক্রিকেট বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন।
এক আসরে হাজার রান–শুধুই প্রমাণ করে তিনি আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। আজকে এই মাইলফলক ম্পর্শ করতে গিয়ে বিজয় পেয়েছিলেন তার জাতীয় দলের ওপেনিং পার্টনার তামিম ইকাবল খানকে। দুই জনেই হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরি। তামিম ইকবাল লিগে প্রথম সেঞ্চুরি করলেও বিজয়ের এটি ছিল তৃতীয় সেঞ্চুরি। দুই জনেই অপরাজিত থাকেন। ফলে তাদের দল রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে জয় পায় ১০ উইকেটে। এনামুল হক বিজয় ১১২ ও তামিম ইকবাল ১০৯ রানে অপরাজিত থাকেন।
হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতে বিজয়ের প্রয়োজন ছিল ৭০ রানের। সেই রান করার পর পরই তিনি ব্যাট উঁচিয়ে ধরেন। সঙ্গি তামিম ইকবাল এসেও তাকে বাহবা দেন। প্রতিপক্ষের ক্রিকেটারও অভিনন্দন জানান। পরে সেঞ্চুরি হওয়ার পর বিজয় আরেকবার ব্যাট উঁচিয়ে ধরেন। এক ম্যাচে এক সেঞ্চুরি করার পথে তিনি দুইবার ব্যাট উঁচিয়ে ধরেন।
এবারের লিগের শুরু থেকেই এনামুল হক বিজয় ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। সুপার লিগের আগে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় স্থানে। তার রান ছিল ৭২৮। তার উপরে ছিলেন নাঈম ইসলাম। কিন্তু সুপার লিগে এসে নাঈম ইসলাম নিজের ফর্ম আর ধরে রাখতে পারেননি। কিন্তু বিজয় ঠিকই তার ফর্ম ধরে রাখেন। এক ম্যাচ আগেই তিনি সাইফ হাসানের করা ৮১৪ রান টপকে যান। সাইফের রান ছিল লিষ্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ। এনামুল হক সে স্থানে চল যাওয়ার পর তার সামনে সুযোগ চলে আসে হাজার রান স্পর্শ করার। সেই মাইলফলক তিনি স্পর্শ করেন ১৪তম ম্যাচে। নিজের এই রান তার বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ আছে। এখনো একটি ম্যাচ তিনি খেলবেন ২৮ এপ্রিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে।
এনামুল হক বিজয় লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই মাইলফলক র্স্পশ করলেও প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে কিন্তু তিনি প্রথম নন। তার আগে আরো দুই ব্যাটসম্যান এই মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। প্রথমে হাজার রান র্স্পশ করেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। তিনি আবাহনীর হয়ে ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে ১০০৮ রান করেছিলেন ১৯ ম্যাচের ১৮ ইনিংসে খেলে। তিনি পেছনে ফেলেছিলেন মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর করা ৭০৯ রান। নান্নু এই রান করেছিলেন ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে। লিপুর রেকর্ড গড়া মৌসুমে তার নেতৃত্বেই আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
এনামুল হক বিজয়ের এখানে রয়ে গেছে আক্ষেপ। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘টিমকে চ্যাম্পিয়ন করব, এটা চিন্তা করেছিলাম। এটা হয়নি। এটার জন্য খারাপ লাগছে। চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে আরও ভালো লাগত। এরকম কোনো লক্ষ্য ছিল না যে, এক হাজার রান করব।’
গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর রেকর্ড কিন্তু এনামুল হক বিজয় ভাঙ্গার আগেই ভেঙেছিলেন মোহামেডানের হয়ে খেলতে আসা কেনিয়ার স্টিভ টিকোলো। তিনি ২০০১ সালে করেছিলেন ১২২২ রান।
এমপি/এসএ/