শেখ জামাল নতুন চ্যাম্পিয়ন
বিকেএসপিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে মাত্র ৯৭ রানে অলআউট করে ১৯৬ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জিতে মিরপুরে আবাহনীর বিপক্ষে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ম্যাচের দিকে নজর রাখছিল।
ম্যাচে তখন শেখ জামালের নাজুক অবস্থা। আবাহনীর ৬ উইকেটে করা ২২৯ রানের জবাব দিতে নেমে ৭৮ রানে ৫ উইকেটে হারিয়ে পরাজয়ের প্রহর গুনছিল। এরকম অবস্থায় ম্যাচ জেতা কঠিন। আর ম্যাচ জিততে পারলেই তারা চ্যাম্পিয়ন হবে।
অপরদিকে শেখ জামালের এ রকম দুরবস্থা দেখে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ক্রিকেটাররা মনে মনে শিরোপার জন্য শেষ রাউন্ডের অপেক্ষায় করছিলেন। কিন্তু সরল অংকের যোগফলর মতো তাদের যোগফলে মিলেনি। নিশ্চিত হারা ম্যাচ নুরুল হাসান সোহানের দায়িত্বশীল অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংসে শেখ জামালের শিবিরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উপলক্ষ এনে দেয়।
তানজিম আহসান সাদের বলে সোহান লং অফ দিয়ে বাউন্ডারি মেরে নিজে যেমন হাত মুষ্টিবদ্ধ করে শূন্যে ছুড়ে মারেন, তেমনি সতীর্থরা ডাগআউট থেকে একশ মিটার স্প্রিন্টের মতো মাঠের দিকে ছুটতে শুরু করেন। তারপর শুরু হয় বাধনহারা উল্লাস। প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের নতুন চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল। উল্লাসের মাত্রা তাই ছিল যেন একটু বেশিই। এক ম্যাচ হাতে রেখেই তারা শিরোপা নিজেদের করে নেয়। বৃথা যায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ক্রিকেটারদের শিরোপা জেতার শেষ রাউন্ডের লড়াইয়ের অপেক্ষার। ১৪ ম্যাচে শেখ জামালের পয়েন্ট ২৪। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের পয়েন্ট ২০। তারা হয়েছে রানার্সআপ। এই দুই দল ২৮ এপ্রিল পরস্পরের বিপক্ষে মুখোমুখি হবে।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বির চেয়ে ৪ পয়েন্ট বেশি থেকে সুপার লিগ শুরু করার পর শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব প্রথম ম্যাচ জিতে বেশ ভালোভাবেই এগুচ্ছিল। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে গিয়ে রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে হারের কিনারায় পড়ে গিয়েছিল। পরে এই নুরুল হাসান সোহানই অপরাজিত ১৩২ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ী করেছিলেন। তৃতীয় ম্যাচে গিয়ে প্রাইম ব্যাংকের কাছে হেরে আবার শিরোপা জেতার অপেক্ষা বাড়িয়ে দিয়েছিল।
আজও অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হওয়ার দিকেই ছুটছিল। কিন্তু নুরুল হাসান সোহান তা হতে দেননি। ৭৮ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর প্রথমে পারভেজ রাসুলের সঙ্গে ষষ্ট উইকটে জুটিতে ৭২ ও সপ্তম উইকেট জুটিতে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৮২ রানের জুটি দলকে ৩ ওভার ও ৪ উইকেট অবশিষ্ট রেখেই জয় এনে উৎসবে রাঙিয়ে অপেক্ষার মৃত্যু ঘটায়। নুরুল হাসান সোহান ৮১ বলে ২ ছক্কা ও ৮ চারে ৮১ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ সেরা পুরস্কার জিতে নেন। আবাহনীর সাইফউদ্দিন ৩৬ রানে নেন ২ উইকেট।
মিরপুরে এর আগে টস জিতে ব্যা্ট করতে নামা আবহনীর ব্যাটসম্যানদের বোতলবন্দি করে ফেলের শিরোপা জেতার রঙিন স্বপ্নে বিভোর শেখ জামালের বোলাররা। ৩৫ রানে আবাহনীর দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও লিটন দাসের সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্তকে সাজঘরে পাঠিয়ে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন।
পরে তৌহিদ হৃদয় ৭৫ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলে অবস্থার কিছুটা সামাল দেন। দলীয় ১৫৪ রানে ষষ্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি আউট হওয়ার পর সপ্তম উইকেট জুটিতে জাকের আলী ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১১ ওভারে অবিচ্ছন্ন ৭৫ রান করলে আবাহনীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ২২৯। জিয়াউর রহমান ৩৬ রানে নেন ২ উইকেট।
এমপি/আরএ/এমএমএ/