টেস্ট ক্রিকেটে এখনো অনাগ্রহ মোস্তাফিজের
কে কোন ফরম্যাটে খেলবেন তা বিসিবি ক্রিকেটারেদর ব্যক্তিগত ইচ্ছের উপরই ছেড়ে দিয়েছে। সেই আলোকেই এখন ক্রিকেটারদের কেন্দ্রিয় চুক্তিতে রাখা হয়ে থাকে। ২০২২ সালের নতুন চুক্তিতে তাই মাত্র ৫ জন ক্রিকেটারকে তিন ফরম্যাটেই চুক্তিতে রাখা হয়েছে। যে সাকিব আল হাসনের টেস্ট ক্রিকেটে খেলা নিয়ে বিশাল সংশয় ছিল, সেই সাকিবই নিজ থেকে টেস্ট খেলার আগ্রহ দেখিয়েছেন। যে কারণে তিনিও আছেন টেস্টসহ বাকি দুই ফরম্যাটেই। সাকিবেরে মতোই তিন ফরম্যাটে থাকতে পারতেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমানও। কিন্তু তিনি নিজ থেকে টেস্ট খেলার ব্যাপারে নিজের অনীহার কথা জানিয়েছেন। যে কারণে তাকে রাখা হয়নি টেস্ট ক্রিকেটের চুক্তিতে। মোস্তাফিজ আছেন বাকি ফরম্যাটের চুক্তিতে। কিন্তু সেই মোস্তাফিজকে এখন আবার টেস্ট ক্রিকেটে ফিরিয়ে আনার কথা ভাবছে বিসিবি। তাদের এ রকম ভাবনা পরিস্থিতি বাধ্য করেছে। কারণ আগামী মে মাসের ১৫ তারিখ থেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শুরু হবে দুই টেস্টের সিরিজ। অথচ পেস বোলিং আক্রমণই নেই। একে একে তিন অপরিহার্য ক্রিকটোরই ইনজুরিতে।
তাসকিন ও শরিফুল দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই। নতুন করে যুক্ত হয়েছেন মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয়ের নায়ক এবাদত হোসেন। তিনি ইনজুরিতে পড়েছেন বৃহস্পতিবার প্রিমিয়ার বিভাগহ ক্রিকেটের সুপার লিগের ম্যাচে। তাসকিন-শরিফুলকেতো পাওয়া যাবেই না, পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে এবাদতকেও না পাওয়ার। সে ক্ষেত্রে পেস বোলিং আক্রমণে আছেন শুধু সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও আবু জায়েদ রাহী। দক্ষিণ আফ্রিকা খালেদ দ্বিতীয় টেস্ট খেলেছিলেন তাসকিনের ইনজুরিতে। রাহী কোন টেস্ট খেলার সুযোগ পাননি। তাই এই দুই পেসার দিয়েতো আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভরসা করা যায় না। যে কারণে মোস্তাফিজের কথা ভাবতে হচ্ছে বিসিবিকে। মোস্তাফিজ বর্তমানে আইপিএল খেলছেন দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে। সেখানে তিনি দারুণ ফর্মে আছেন। ৫ ম্যাচ খেলে একটিমাত্র ওভার ছাড়া তার বাকি ওভারের বলগুলো খেলতে ব্যাটসম্যানরা রীতিমতো নাকানি-চুবানি খাচ্ছেন। উইকেট পেয়েছেন ৪টি। মোস্তাফিজকে যে টেস্ট ক্রিকেটে ফিরিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে, তা জানতে পেরেছেন তিনি নিজেও। সেই আলোকে তিনি আবারো নতুন করে জানিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটে তার অনাগ্রহের কথা। বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে আইসিসি ওয়েবসাইট উল্লেখ করেছে, ‘বিসিবি যদি আমার টেস্ট ক্রিকেটে খেলা নিয়ে জানতে চায় আমি আমার অবস্থান জানিয়ে দেবো। আমি দেখেছি সিনিয়র ভাইয়েরা (কে কোন ফরম্যাটে খেলবেন সে বিষয়ে) বিসিবি সভাপতির সঙ্গে কথা বলে থাকেন। সভাপতির সঙ্গে আমিও কথা বলব। যদিও তিনি আমার ব্যাপারটা ভালো করেই জানেন। এ ব্যাপারে আমাকে কখনো জোর করেনি বিসিবি এবং বর্তমান আমি লাল বলের চুক্তিতেও নেই।’
মোস্তাফিজ সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০২১ সালে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এরপর তিনি একে একে মিস করেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি এবং পাকিস্তান, নিউজল্যিান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুইটি করে টেস্ট ম্যাচ।
মোস্তাফিজের টেস্ট ক্রিকেটে না খেলার কারণ নিজেকে ফিট রেখে দীর্ঘদিন দেশেল হয়ে সার্ভিস দেয়া। তিনি বলেন, ‘আমার জন্য সুস্থ থাকাটা গুরুত্ত্বপূর্ণ। আমি যদি লম্বা সময় বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিতে চাই, তাহলে আমার ফিট থাকা জরুরি। ফিট থাকতে হলে আমাতে তিন সংস্করণের মধ্যে বেছে বেছে খেলতে হবে এবং এটাই সেরা উপায় বলে মনে করি। যে সব সংস্করণে আমার সাফল্য বেশি আমি সে সব সংস্করণ বেছে নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘রেকর্ড ঘাটলে দেখা যায় আমার সাফল্য বেশি ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতে। যে কারণে আমি এই দুই সংস্করণে বেশি মনোযোগ দিয়েছি। এটা শুধু আমি না, বিশ্বের অনেক ক্রিকেটারই ক্যারিয়ার লম্বা করতে সংস্করণ বেছে খেলছে।’ মোস্তাফিজ বলেন, ‘একজন নির্দিষ্ট কোনো ক্রিকেটারের উপর নির্ভর করে কোনো দলও হয় না।’
এমপি