স্বরূপে মোস্তাফিজ, জয় পেল দিল্লি
মোস্তাফিজের বলে বোল্ড হওয়ার পর চেয়ে চেয়ে দেখছেন জনি বেয়ারস্টো
এক ম্যাচ পর আবার স্বরূপে আবির্ভূত হয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার রক্তচক্ষু বোলিংয়ের সঙ্গে সতীর্থদের আস্ফালনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে পাঞ্জাব কিংস ইলেভেন। পুরো ২০ ওভারে অলআউট হয়ে সংগ্রহ করেছে মাত্র ১১৫ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে দিল্লি ক্যাপিটালস ডেভিড ওয়ার্নার ও পৃথ্বি শ’র মারমুখি ব্যাটিংয়ে মাত্র ১০.৩ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের নাগাল পেয়ে যায়।
ওয়ার্নার ৩০ বলে ৬০ রান করে অপরাজিত থাকেন। তার ৪৬ রানই এসেছে ১০ চার ও ১ ছক্কা থেকে। পৃথ্বি করেন ২০ বলে ৪১ । ম্যাচ সেরা হয়েছেন কুলদ্বীপ যাদব। ৬ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দিল্লি আছে ৬ নম্বারে। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পাঞ্জাবের অবস্থান সপ্তম।
এবারের আইপিএলে মোস্তাফিজ দিল্লির হয়ে খেলা শুরু করেন এক ম্যাচ পর। প্রথম তিন ম্যাচেই তিনি আগুন ঝরানো বোলিং করেন। তার বল খেতে রীতিমতো হিমশিম খেয়েছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা। মোস্তাফিজের ইকোনমি ছিল তিন ম্যাচেই ছয়ের নিচে। প্রথম ম্যাচে তিনি ৩ উইকেট পেলেও পরের ২ ম্যাচে থাকেন উইকেট শূন্য। গত ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষেও তার ক্ষুরধার বোলিং অব্যাহত ছিল। প্রথম ৩ ওভারে রান দিয়েছিলেন মাত্র ২০। কিন্তু শেষ ওভারে গিয়ে দিনেশ কার্তিকের রুদ্রমূর্তির সামনে পড়ে বেসামাল হয়ে পড়েন। এক ওভারেই রান দিয়েছিলেন ৪, ৪, ৪, ৬, ৬, ৪ করে ২৮ রান। ফলে তার ইকোনমি প্রথম ৩ ওভারে যেখানে ইকোনমি ছিল ৬.৬৬ করে, ৪ ওভার শেষে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ১২ করে।
আজ আবার মুস্তাফিজ খেলতে নামেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে। এই ম্যাচে রিশাভ পন্থ মোস্তাফিজকে দিয়ে তার বোলিং পরিকল্পনায় বেশ পরিবর্তন আনেন। আগের ম্যাচগুলোতে যেখানে মোস্তাফিজকে দিয়ে আক্রমণের সূচনা করা হতো, এই ম্যাচে তাকে আক্রমণে নিয়ে আসা হয় চতুর্থ বোলার হিসেবে। কৃপন বোলিংয়ের পাশাপাশি উইকটেও পান একটি, ক্যাচও ধরেন একটি। আর ২৪ বলের মাঝে ১৪ বলেই ব্যাটসম্যানরা কোনো রান নিতে পারেননি। চারটি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা হজম করেন তিনি।
ম্যাচে মোস্তাফিজ পঞ্চম, নবম, সতেরতম ও শেষ ওভার করেন। তার প্রথম ওভার ছিল ভালো-মন্দের মিশ্রনে মেশানো। এই ওভারে তিনি উইকেটও পান, আবার দুইটি বাউন্ডারিও হজম করে রান দেন ১১। প্রথম বল ডট দেওয়ার পর দ্বিতীয় বল দেন ২ রান। এরপর তৃতীয় বলে মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে বোল্ড করেন। শেষ ২ বলে তিনি দুইটি বাউন্ডারি হজম করেন বেয়ারস্টোর হাতে। পরে বেয়ারস্টোকে আউট করার ক্ষেত্রে রাখেন ভূমিকা। খলিল আহমেদের বলে ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ ধরেন ফিজ। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম চার বলে ছিল দুটি ডট আর দুটি সিঙ্গেল রান। পঞ্চম বলে জিতেশ শর্মা বাউন্ডারি মারার পর শেষ বল আবার ডট দেন। তৃতীয় ওভারে রান দেন ৭, যেখানে ছিল আবার একটি ছক্কা। প্রথম তিন বল ডট দেওয়ার পর রাহুল চাহার চতুর্থ বলে ডিপ স্কায়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মারেন। পরের দুই বল থেকে আসে এক রান। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে তিনি আর্শদ্বীপ সিংহের হাতে শুধুমাত্র একটি বাউন্ডারি হজম করেন। চারটি বল ছিল ডট। আর শেষ বলে আর্শদ্বীপ সিং রান আউট হন।
এদিন অবশ্য মোস্তাফিজের ইকোনমি ছিল ৭.০০ করে। কিন্তু ইনিংসে তার চেয়ে কম ইকোনমি ছিল আরো ৩ জনের। অক্ষর প্যাটেল ৪ ওভারে মাত্র ১০ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। ইকোনমি ছিল ২.৫০। ললিত যাদব ২ ওভারে ১১ রান দিয়ে ৫.৫ ইকোনমিতে ২ উইকেট নেন। খলিল আহমেদ ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। তার ইকোনমি ছিল ৫.২৫ করে।
এমপি/এসএ/