পারল না আবাহনী
পারল না আবাহনী। সেই মোহনবাগানের কাছে আবারও হেরে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে আর উঠতে পারল না। আজ কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে আবাহনী মোহনবাগানের কাছে ১-৩ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে। মোহনবাগানের হয়ে ডেভিড উইলিয়ামস হ্যাটট্রিক করেন। আবাহনীর হয়ে একমাত্র গোলটি করেন ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস। ২০১৭ সালেও একই ব্যবধানে হেরে আবাহনীকে বিদায় নিতে হয়েছিল। ম্যাচ জিতে মোহনবাগান নিজেদের মাঠে গুকোলাম কেরালা, স্পোর্টস ক্লাব ও বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে খেলবে ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচ। খেলা শুরু হবে ১৮ মে।
মোহনবাগানের ডেরায় আবাহনীকে বাঁধার প্রাচীর টপকাতে হলে জয়র বিকল্প ছিল না। কিন্তু তারা মাঠে নামার আগেই একটা ধাক্কা খেয়েছিলেন দলের মূল স্ট্রাইকার দোরিয়েলতনের ইনজুরি। সেখানে গোধের উপর বিষফোড়া হয়ে দেখা দেওয়া খেলা শুরুর ২৩ মিনিটে আহত হয়ে দলের অন্যতম সেনানি নাবীব নেওয়াজ জীবন মাঠ ছেড়ে চলে গেলে। এই শূন্য আবাহনীর ম্যাচে আর পূরণ করা সম্ভব হয়নি। দোরিয়েলতনের জায়গায় স্বাধীনতা সংঘ থেকে ধারে নেওয়া নেদো নেদো তুর্কোভিচ ও জীবনের পরিবর্তে সোহেল রানা নেমে অভাব দূর করতে পারেননি।
দুই দলেরই মূল ভরসা ছিলের বিদেশিরা। সে প্রমাণও তারা রেখেছেন চার গোলের সব কটি করে। আবাহনীর প্রথম দুইটি গোলই ছিল বলা যায় অনেকটা রক্ষণের ভুলে। গোল হজম করতেও খুব বেশি সময় লাগেনি আবাহনীর। ৬ মিনিটে প্রথম আক্রমণ থেকেই গোল পেয়ে যায় মোহনবাগান। বাম প্রান্ত থেকে লিস্টন কোলাসোর ক্রস থেকে আবহণীর রক্ষণভাগ ফাঁকি দিয়ে অনেকটা ফাঁকায় বল পেযে যান বক্সের ভেতরে ডেভিড উইলিয়ামস। তার পেছনে ছিলেন আবাহনীর বিদেশি রক্ষণভাগের খেলোয়াড় মিলাদ শেখ সোলেমানি। কিন্তু তিনি উইলিয়ামসের গোলের জন্য বাঁধা হয়ে উঠতে পারেননি। প্লেসিং শটে তিনি বল জালে জড়ান। দ্বিতীয় গোল মোহনবাগান পায় ৩০ মিনিটে। এবার ডান দিক থেকে ক্রস করেন প্রবীর দাস। যথারীতি আবাহনীর রক্ষণভাগকে ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় সুযোগ সন্ধান উইলিয়ামসের কাছে। এবার বাম পায়ের ভলি শটে তিনি গোলরক্ষক সোহেলকে পরাস্ত করেন। উইলিয়ামস যে হ্যাটট্রিক করেছেন খেলার ৮৫ মিনিটে, সেটিই তিনি করতে পারতেন ৩৬ মিনিটে। আবাহনীর গোলরক্ষক সোহেলকে একা পেয়েও তিনি গোল করতে পারেননি। তার গায়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। প্রথমার্ধে আবাহনী বলার মতো তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য আক্রমণ করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হলে আবাহনীর মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মোহনবাগানকে চেপে ধরে। এ সময় মোহানবাগানও কিছুটা রক্ষণাত্বক খেলছিল। ৫১ মিনিটে কলিনদ্রেসের নিচু ক্রস থেকে নেদোর ফ্লিক পোষ্টের বাইরে দিয়ে চলে যায। ৬০ মিনিটে আবাহনী পেয়ে যায় উজ্জীবনি শক্তি গোল। রাকিবের পাস থেকে বল ডান দিক দিয়ে সরে গিয়ে বক্সের বাইরে থেকে কোনকুনি শুটে নিশানা ভেদ করেন কলিনদ্রেস। এই গোল যেন আবাহনীর খেলোয়াড়দের আরো বেশি চাঙ্গা করে তুলে। ৬৪ মিনিটে কোলাসোর শট ফিস্ট করে সোহেল রক্ষা করে আবাহনীকে নতুন করে প্রাণ এনে দেন। এর ৩ মিনিট পর আবাহনীর হয়ে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন জুয়েল। নুরুল নাঈম ফয়সালের ক্রস বুক দিয়ে রিসিভ করে অনেকটা জায়গা পেয়েও বারের বাইরে দিয়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। এ রকম ব্যর্থতায় তিনি যেন নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। হতাশ হয়ে মুখ ডেকে ফেলেন। আবাহনীর অনেক খেলোয়াড় মাথায় হাত দেন। কোচও মারিও লেমোসও অবাক হয়ে যান এ রকম মিস দেকে। কিছুক্ষন পর আবাহনী আরেকটি সুযোগ নষ্ট করে। এ সময় গোলের জন্য মরিয়া আবাহনীর খেলোয়াড়রা সবাই উপরে উঠে আসেন। এই সুযোগে মোহানবাগান তৃতীয় গোল পেয়ে যায় অনেকটা ফাঁকা পোষ্ট পেয়ে। নিজেদের সীমনা থেকে মাঝমাঠ বরাবার একা থাকা উইলিয়ামস বল পেয়ে দুত গতিতে এগুতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক দেখে পোস্টছেড়ে বের হয়ে আসেন গোলরক্ষক সোহেল। বক্সের বাইরে তাকে কাটিয়ে উইলিয়ামস ফাকা পোষ্টে বল জালে ঠেলে এক সঙ্গে দুই আনন্দে মেতে উঠেন। একটি তার হ্যাটট্রিক অপরটি দলের জয় নিশ্চিত।
এমপি/এমএমএ/