বার্সেলোনার কাটা ঘায়ে নূনের ছিটা!
গত পরশু জার্মান ক্লাব আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল হেরেছে বার্সেলোনা। ফ্রাঙ্কফুর্টের মাঠ থেকে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে আসা বার্সেলোনা নিজেদের মাঠে হেরেছে ৩-২ গোলে। হারের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে হিসেবে যুক্ত হয়েছে বার্সেলোনার নিজগৃহে পরবাসী হয়ে যাওয়া।
নিয়ম অনুযায়ী, একটি ক্লাবকে ন্যূনতম ৫ শতাংশ টিকিট প্রতিপক্ষের জন্য রাখতে হয়। বার্সেলোনাও সে নিয়ম মেনে ফ্রাঙ্কফুর্টের দর্শকদের জন্য ৫ হাজার টিকিট রেখেছিল। কিন্তু ম্যাচ শুরু হওয়ার পর দেখা গেল ৫ হাজার নয়, জার্মানি থেকে অন্তত ৩০ হাজার দর্শক এসেছেন ক্যাম্প ন্যুতে। অর্থাৎ মাঠের মোট আসনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক!
ফলে যা হওয়ার, তা-ই হয়েছে। ঘরের মাঠেই দুয়ো হজম করতে হয়েছে বুসকেতস-পেদ্রিদের। যার প্রভাব পড়েছে মাঠের পারফরম্যান্সেও।
কিন্তু এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না! কীভাবে হলো? বার্সেলোনার কোচ থেকে শুরু করে সভাপতি—সবাই ক্ষুব্ধ এ নিয়ে। এমন পরিস্থিতি যেন সামনে আর না হয়, সে জন্য সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা এর মধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন, ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টে টিকিট বিক্রির নীতিমালাই বদলে ফেলবেন এবার!
বার্সেলোনার ওয়েবসাইটেই এই ঘোষণা দিয়েছেন ‘লজ্জিত’ লাপোর্তা, ‘আমাদের অনেক খারাপ লাগছে, ব্যাপারটা অনেক লজ্জাজনক ছিল। মাঠের যা চিত্র দেখেছি, তা দেখে আমার আরও লজ্জা লেগেছে। এমন তো হওয়ার কথা ছিল না!’
তবে লাপোর্তা এটা মানতে রাজি নন যে বার্সেলোনাই ৩০ হাজার ফ্রাঙ্কফুর্ট সমর্থককে টিকিট বিক্রি করেছে, ‘টিকিটগুলো যে ফ্রাঙ্কফুর্ট সমর্থকদের হাতে গেল, এটার জন্য ক্লাব দায়ী নয়। এ ঘটনার দায় আমরা নেব না। তবে এমন কিছু আমরা আর কখনো হতে দেব না। এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি যেন আর না হয়, এ জন্য আমরা ব্যবস্থা নেব। আর এই নতুন নীতিমালা যেকোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচের সময় প্রয়োগ করা হবে।’
আন্তর্জাতিক ম্যাচ, মানে তো ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টই! তা সেখানে কী ব্যবস্থা নেবেন লাপোর্তা? ‘এমন একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেখানে কোনো টিকিট হাতবদল করা যাবে না। আমরা এমন পদক্ষেপ নিতে চাইনি। কারণ, এমন করলে আমাদের সমর্থকদেরই কষ্ট। কিন্তু ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে যা হলো, তারপর আমাদের আর কোনো উপায় নেই’—বার্সা সভাপতির উত্তর।
লাপোর্তা দাবি করেছেন, ক্লাব সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে যাতে কোনোভাবেই বাড়তি টিকিট প্রতিপক্ষ সমর্থকদের হাতে না যায়। জার্মান ওয়েবসাইটের আইপি ঠিকানা ব্লক করা থেকে শুরু করে জার্মান ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড দিয়ে টিকিট কেনার রাস্তা বন্ধ করা—অনেক কিছুই করেছে বার্সা। কিন্তু কিছুতেই কোনো লাভ হয়নি।
লাপোর্তার ব্যাখ্যা, ‘আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি যে ৩৪ হাজার ৪৪০ টিকিট ফ্রাঙ্কফুর্টের সমর্থকদের হাতে গিয়েছে, সেগুলো জার্মানির বাইরে বিক্রি করা যেত না। আমাদের ক্লাব জার্মানির ভক্তদের কাছে টিকিট বিক্রি করেনি। যারা টিকিট কিনেছে তারাই ওই জার্মান ভক্তদের কাছে টিকিট বিক্রি করেছে আবার।’
টিটি/