আবাহনীর সামনে উড়ে গেল বারিধারা
বসুন্ধরা-শেখ জামালের ২০ মিনিটে ৬ গোলের ম্যাচ ড্র
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস ও রানার্সআপ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের লড়াই। হাড্ডাহাড্ডি হওয়ারই কথা। তাই বলে এমন হাড্ডাহাড্ডি! ব্যাকরণ ঘেটে এর চেয়ে আরও ভালো শব্দ ব্যবহার করা যায় দুই দলের খেলায়। ৭০ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র। এরপর সেই খেলা শেষ হয়েছে ৩-৩ গোলে। ২০ মিনিটে ছয় গোল। এ থেকেই সহজেই অনুমান করা যায় ম্যাচটিতে কী পরিমাণ উত্তেজনার পারদ ছিল। বসুন্ধরা কিংস নিজেদের মাঠে বলা যায় শেষ পর্যন্ত ১ পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পেরেছে এটাই তাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। বিপরীতে শেখ জামালের মন্দ ভাগ্য প্রথমে এক গোলে দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পর খেলায় সমতা আসে। এরপর দুই গোল দিয়ে এগিয়ে যায়। তখন খেলা শেষ হতে বাকি মাত্র ৫ মিনিট। এ রকম অবস্থায় শেখ জামালের জয়ের পক্ষে বাজি ধরার লোকের অভাব হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দারুণভাবে এলিটা কিংসলে; দুইটি ও ভ্রানিয়াস এবং শেখ জামালের পক্ষে ভালিজনভ ওতাবেক, সুলাইমান সিল্লাহ ও সলোমন কিং গোল করেন। আগের ম্যাচে বসুন্ধরা ড্র করেছিল আবাহনী লিমিটেডের সঙ্গে। এই খেলা দিয়ে দুই দলই প্রথম লেগের খেলা শেষ করেছে। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থা এক ও দুই। ১১ ম্যাচে বসুন্ধরার ২৬, শেখ জামালের ২১ পয়েন্ট। ২২ পয়েন্ট নিয়ে তিন থেকে দুইয়ে উঠে এসেছে আবাহনী লিমিটেড। এই রাউন্ডে তারা সিলেটে নিজেদের ভেন্যুতে ৫-২ গোলে হারিয়েছে উত্তরা বারিধারাকে। ৮ পয়েন্ট নিয়ে বারিধারার অবস্থান আটে।
যে খেলায় ২০ মিনিটে হয়েছে ছয় গোল, সেই খেলার প্রথমার্ধ কিন্তু মেলানোই যাবে না ম্যাচের সঙ্গে। প্রথমার্ধ ছিল উত্তাপহীন, ম্যাড়ম্যাড়ে। এমন কি গোল হওয়ার আগ পর্যন্তও ছিল নিরান্দ। কিন্তু গোল হওয়ার পরই সব উত্তেজনার ঢালি নিয়ে হাজির হয় ম্যাচে। ৭১ মিনিটে ওতাবেক একক প্রচেস্টায় গোল করে শেখ জামালকে এগিয়ে নেন। তবে এগিয়ে যাওয়ার মেয়াদ ছিল খুবই ক্ষনস্থায়ী। ৭৬ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে বাঁ পায়ের দারুন শটে গোল করে সমতা আনেন ভ্রানিয়েস। শুরু হয় উত্তেজনার ঢেউ। ৮৩ মিনিটে বসুন্ধরার গোলরক্ষক জিকোর বলে গোল করে শেখ জামাল আবার এগিয়ে যায়। ফয়সালের দূর্বল শট জিকো গ্লাভসে নিতে ব্যর্থ হলে, সেই বল পেয়ে যান সুলাইমান সিল্লাহ। সুযোগকে কাজে লাগাতে ভুল করেননি (২-১)। দুই মিনিট পর আবার শেখ জামালের গোল। এবার গোলদাতা সলোমান কিং। তার তীব্র শট গিয়ে আশ্রয় নেয় বসুন্ধরার জালে। এ সময় শেখ জামালের জয় এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়। কিন্তু প্রথম ম্যাচে নবাগত স্বাধীনতা সংঘের কাছে হারের পর হার ভুলতে বসা বসুন্ধরা নিজেদের মাঠে হারতে রাজি ছিল না। ত্রাতা হয়ে হাজির হন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া নাইজেরিয়ান এলিটা কিংসলে। ৮৯ মিনিটে মাহবুবুর রহমানের সুফিলের ক্রস থেকে হেড করে গোল করে এলিটা ব্যবধান কমান। এরপর ৬ মিনিট অতিরিক্ত খেলা দেখালে বসুন্ধরা সামনে ম্যাচ ড্র করার একটি সুযোগ চলে আসে। ৬ মিনিট পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করতে হয়নি। ইনজুরির টাইমের প্রথম মিনিটেই ইব্রাহিমের ক্রস থেকে এলিটা আবারো হেডে গোল করে খেলায় সমতা আনেন।
এদিকে সিলেটে আবাহনী নিজেদের ভেন্যুতে উত্তরা বারিধারাকে উড়িয়ে দেয় ৫-২ গোলে। খেলার প্রথম মিনিটেই ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেসের গোলে আবাহনী এগিয়ে যাওয়ার পর ৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন নাবিব নেওয়াজ জীবন। ১৫ মিনিটে উত্তরা বারিধারার হয়ে একটি গোল পরিশোধ করেন পাপন। ২৪ মিনিটে আবু সাইদ গোল করে আবাহনীকে ৩-১ গোলে এগিয়ে নেন। ৩৫ মিনিটে কলিন্দ্রেস নিজের দ্বিতীয় ও দলের চতুর্থ গোল করেন। প্রথমার্ধে আবাহনী ৪-১ গোলে এগিয়ে ছিল। ৬২ মিনিটে রাফায়েল আবহনীর হয়ে পঞ্চম গোল করার পর ৬৮ মিনিটে আরিফ গোল করে ব্যবধান কমান (৫-২)। ম্যাচে বারিধারার আজাদকে লালকার্ড দেখানো হয়।
এমপি/এএস