দ্বিতীয় টেস্টে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় মুমিনুলের
২০২২ বাংলাদেশের জন্য সাফল্যোর ঢালি উপচে পড়ছে। আবার এর বিপরীতও আছে। বছরের শুরুতে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জিতে শুরু উপচে পড়া সাফল্য। যা ছিল নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম কোনো জয়। সেই সাফল্য চুইংগামের মতো টেনে নিয়ে আসা হয় দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে। এখানে প্রথমে ওয়ানডে ম্যাচ জয়, পরে সিরিজ জয়। দুইটিই ছিল নিউ জিল্যান্ডের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম সাফল্য। ওয়ানডে সিরিজে এই সাফল্য বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের টেস্ট সিরিজ জেতার ব্যাপারেও অনেক বেশি আত্সবিশ্বাসী করে তুলে।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে খেলতে নামার আগে এ রকম ভাবনা এবারই প্রথম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অন্তরে লালন করতে দেখা যায়। অতীতে সেখানে বিদ্যমান থাকতো হারের ভাবনা। এবারের ভাবনা বাস্তবায়নের পথে বাংলাদেশ চতুর্থ দিন পর্যন্ত বলা যায় অনেকটা লাইনে ছিল। কিন্তু পঞ্চম দিন এক ফুতে সব ধুলিসাৎ হয়ে যায়। কোথায় ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ২৬৩ রান করার স্বপ্ন, সেখানে মাত্র ৫৫ মিনিটে ১৩ ওভারে ইনিংস খতম। ভান্ডারে জমা মাত্র ৫৩ রান। যা আর্বা বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন । কিন্তু ডারবানে আবার সর্বনিম্ন। বাংলাদেশের হার ২২০ রানে। বাংলাদেশকে এভাবে ধসিয়ে দিয়েছেন দুই স্পিনার মহারাজ ও হার্মার। মহারাজ ৭টি ও হার্মার ৩টি উইকেট নেন। এমন লজ্জ্বাজনক হারের জন্য কাপ্তান মুমিনুল ব্যাটসম্যানদের উপরই দায় চাপালেন।
খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘স্পিনের বিপক্ষে খেলে আমরা অভ্যস্ত। ডারবানে তৃতীয়-চতুর্থ দিনের পর স্পিন ধরে এটা আমরা জানতাম। কিন্তু আমরা ব্যাট হাতে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। অনেক বাজে শট আমরা খলেছি। কিন্তু প্রথম ইনিংসে আমরা আর্বা ভালোই খেলেছিলাম।’
মুমিনুল জানান তাদের লক্ষ্য ছিল দিনের শেষ সেশন পর্যন্ত ব্যাট করা। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে ৫০-৬০ রান বেশি দিয়ে ফেলেছি। আমরা শেষ সেশন পযন্ত ব্যাট করতে চেয়েছিলাম। বলের গুনাগুন বিচার করে খেলতে চেষ্টা করছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা আগেরদিন ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলি, যা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডারবান টেস্টের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে আবার ঘুরে দাঁড়াতে চান মুমিনুল।
তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে আরেকটি টেস্ট ম্যাচ আছে। আমাদের শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। নতুনদের নিজেদের সামার্থ্য ভালোভাবে প্রমাণ দিতে হবে। সুযোগ আসলে তা কাজে লাগাতে হবে।’
ডারবান টেস্টে আম্পায়ারিং নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুমিনুল। দুই ফিল্ডি আম্পায়ারের অনেক ভুল সিদ্ধান্তের বলি হতে হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। চতুর্থ দিন শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলতে আসা টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও নিরপেক্ষা আম্পায়ারের দাবি তুলেছিলেন। সাকিব আল হাসান আমেরিকা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও একই দাবি করেছেন। এবার সংবাদ সম্মেলনে একই কথা বলেছেন মুমিনুলও।
তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ আম্পায়ারিং আবার ফিরিয়ে আনা উচিত। আমার মনে হয়, আইসিসির উচিত, এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা। কোভিডের আগে যেমন ছিল তেমন। কোভিডের কারণে মাঝে হয়নি। এখন তো কোভিড নিয়ন্ত্রণে আছে। শুধু এই সিরিজে নয়, অনেক সিরিজেই এমন ভুল আম্পায়ারিং হয়েছে।’
এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের বাজেভাবে গালাগালির শিকারও হয়েছেন বলে মুমিনুল অভিযোগ করেন। যা আম্পায়াররা এড়িয়ে গেছেনও বলেও তার দাবি।
তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট মাঠে স্লেজিং সব সময় হয়। স্লেজিং হবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু স্লেজিং যখন অ্যাবিউসের (গালাগালি) পর্যায়ে চলে যায়, এটা খুব খারাপ। আমার মনে হয়েছে, মাঝেমধ্যে ওরা অ্যাবিউস (গালাগালি) করছিল খুব বাজেভাবে। যেটা আম্পায়ার ওইভাবে খেয়াল করেননি।’
এসএম/এমএমএ/