অনির্দিষ্টকালের জন্য খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে আগামীকাল বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হল ও একাডেমিক কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
এর আগে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হলো।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্র রাজনীতিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কুয়েট রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। ঘটনার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা, তবে ছাত্রদল পাল্টা দায়ী করেছে ছাত্রশিবির ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে।
এরপর শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। শিক্ষার্থীরা উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগের দাবিতে তাদের বর্জনের ঘোষণা দেন এবং উপাচার্যের বাসভবনেও তালা লাগিয়ে দেন।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—
১. কুয়েটে সকল ধরনের রাজনীতি বন্ধ করা
২. উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ
৩. সংঘর্ষে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত ও ছাত্রত্ব বাতিল
৪. আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা
৫. প্রশাসনের ক্ষমাপ্রার্থনা
৬. ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বেশ কিছু দাবি মেনে নেয়। এর মধ্যে রয়েছে কুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা, সংঘর্ষে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার, বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মামলা, আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ।
এরই মধ্যে স্থানীয় থানায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই মামলায় বিএনপি ও ছাত্রদলের ৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।