ফলোঅনে বাংলাদেশ ‘এ’ দল
যে উইকেটে উইন্ডিজ ‘এ’ দলের ব্যাটসম্যানরা রানের দেখা পেয়েছেন। একে একে সেঞ্চুরি মিস করেছেন চার চারজন ব্যাটসম্যান। তারা রান পাওয়ার কারণে তাদের অলআউট করা সম্ভব হয়নি বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বোলারদের। সে উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পড়েছেন রান দুর্ভিক্ষে। ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে তারা ফলোঅনে পড়েছে।
তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে ৬৭.৪ ওভারে অলআউট হয়ে ২৬৪ রানে। ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে করেছে ২ ওভার খেলে বিনা উইকেটে ৫ রান। সাদমান ৫ ও জাকির ০ রান নিয়ে চতুর্থ ও শেষ দিন ব্যাট করতে নামবেন। উইন্ডিজ ‘এ’ দল তাদের প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে ১৯৮ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। বাংলাদেশ ‘এ’ দল এখনো পিছিয়ে আছে ১৫৮ রানে।
প্রথম দুই দিনের মতো তৃতীয় দিনের খেলায়ও বৃষ্টি বিঘ্নিত ছিল। খেলা শুরু হয় সকাল ১১ টায়। সারা দিনে খেলা হয়েছে ৭৩.১ ওভার।
বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে একমাত্র রান করেছেন ওয়ান ডাউনে নামা সাইফ হাসান। তিনিও উইন্ডিজের চার চারজন ব্যাটসম্যানের মতো সেঞ্চুরি মিস করেন। আবার সাইফই সেঞ্চুরির সবচেয়ে কাছাকাছি যেতে পেরেছিলেন। আউট হন ৯৫ রানে। এ ছাড়া জাকের আলী অপরাজিত ৬৪, আফিফ হোসেন ধ্রুব ৪৫, জাকির হাসান ৩০ রান করেন।
সিলেট বিভাগীয় আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নামার পর জায়ের অ্যান্তনির মারাত্মক বোলিংয়ে বিপদে পড়ে। শুরুতেই হারায় ওপেনার সাদমান ইসলামকে ব্যক্তিগত ২ ও দলগত ২১ রানে। জাকির ও সাইফ দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪০ রান যোগ করার পর জাকির ৩০ রান করে আউট হলে ভাঙে জুটি। এই ২ উইকেট পাননি অ্যান্তনি। তিনি মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন। শুরু করেন মাহমুদুল হাসান জয়কে দিয়ে শেষ করেন রিপন মন্ডলকে দিয়ে।
মাহমুদুল হাসান জয় উইকেটে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মাত্র ২ রান করে তিনি আউট হন। দলের রান তখন ৩ উইকেটে ১৬৮। এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে সাইফ ও অধিনায়ক আফিফ হোসেন ধ্রুব মিলে ১০১ রান যোগ করে দলকে চাঙা করে তুলেন। আফিফ অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করে ৪১ বলে ২ ছক্কা ও ৭ চারে ৪৫ রান করে রেইফারের বলে ইয়ান্নিক রেইফারের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন। এই জুটি দলকে মজবুত অবস্থানে এনে দেন। কিন্তু জুটি ভাঙার পর আবার ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। এই বিপর্যয় শুরু হয় সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে সাইফ আউট হওয়ার পর। উইন্ডিজের ইনিংসে কোনো ব্যাটসম্যানই নব্বইয়ের ঘরে যেতে পারেননি। কিন্তু সাইফ যেতে পেরেছিলেন। মারমুখী ব্যাটিং করে সাইফ ৭১ বলে ২ ছক্কা ও ১৪ চারে ৯৫ (হাফ সেঞ্চুরি করেন ৩৯ বলে) রান করে অ্যান্তনির বলে তারই হাতে ধরা পড়ে বিদায় হওয়ার পর দ্রুতই বিদায় নেন একে একে নাঈম হাসান ৪ ও রিশাদ হোসেন ২ রান করে। যেখানে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের রান ছিল ৪ উইকেটে ১৬৯, সেখানে রান দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৯৭।
দল তখন মহাবিপদে। এমন অবস্থায় জাকের আলী একাই হাল ধরে দলকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। রেজাউর রহমান রাজাকে নিয়ে তিনি অষ্টম উইকেট জুটিতে ৪১ রান যোগ করেন। রেজাউর ১১ রান করে আউট হন। এরপর বাকি ২ উইকেট নিয়ে যে ২৬ রান যোগ হয়, সেখানে রিপন মন্ডল ও মুশফিক হাসানের কোনো অবদান ছিল না। দুইজনেই কোনো রান করতে পারেননি। জাকের আলী শেষ পর্যন্ত ১২৩ বলে ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৬৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। তিনি অ্যান্তনির বলে বাউন্ডারি মেরে ১১০ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। অ্যান্তনি ৬০ রানে নেন ৫ উইকেট। রেইফার ৪৪ ও জর্ডান ৫৩ রানে নেন ২টি করে উইকেট।
বাংলাদেশ ব্যাট করতে নামার আগে উইন্ডিজ আগের দিনের ৬ উইকেটে ৪১৭ রান নিয়ে খেলতে নেমে আরও ১ উইকেট হারিয়ে ১০ রান যোগ করেই ৭ উইকেটে ৪২৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাদের ইনিংসে ছিল ৫টি হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু একজনও সেঞ্চুরি করতে পারেননি।
প্রথম ২ দিন তিনজন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর অধিনায়ক জসুয়া ডি সিলভার সম্ভাবনা ছিল সেঞ্চুরি করার। ৭৩ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন সেঞ্চুরি করতে। মাত্র ৪ রান যোগ করে তিনি আউট হওয়ার পরপরই সফরকারীরা ইনিংন ঘোষণা করে। জসুয়া ডি সিলভা ১২৭ বলে ১ ছক্কা ও ৫ চারে ৭৭ রান করে নাঈম হাসানের বলে সাইফ হাসানের হাতে ধরা পড়ে আউট হন। অপরপ্রান্তে তখন ৪৭ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামা কেভিন সিনক্লিয়রি ৫৩ রানে অপরাজিত।
বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে মুশফিক হাসান ৫৪ রানে ৩টি, নাঈম হাসান ১১৬ রানে ২টি উইকেট নেন। এ ছাড়া সাইফ হাসান ১৮ ও রিপন মন্ডল ৬৬ রানে নেন ১টি করে উইকেট।
এমপি/এসজি