তিনে থেকেই বিশ্বকাপে খেলবে বাংলাদেশ
একটা সময় ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলা ছিল বাংলাদেশের জন্য দূর আকাশের চাঁদ। বিশ্বকাপের বাছাই খেলে খেলেই বাংলাদেশ বছরের পর বছর পার করে দিয়েছে। অপেক্ষার প্রহর কাটাতে কাটাতে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায় ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে। পরের বছরই বাংলাদেশ আইসিসির পূর্ণ সদস্য পদ পেলে বিশ্বকাপ খেলা আর দূর আকাশের চাঁদ হয়ে থাকেনি। হাতের মুঠোয় চলে আসে। এরপর থেকে বাংলাদেশ আর কোনো বিশ্বকাপ মিস করেনি।
এদিকে যখনই বিশ্বকাপের নতুন আসর আসে, তখনই আইসিসি বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করে। এবার নতুন নিয়মে বাংলাদেশ আইসিসি সুপার লিগ খেলে পয়েন্ট টেবিলের তিনে থেকে যোগ্যতা অর্জন করেছে। ২৪ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট ১৫৫। ১৫টি জিতে ৮টিতে হেরেছে। ১টি ম্যাচ হয় পরিত্যক্ত। বাংলাদেশের সমান পয়েন্ট ইংল্যান্ডেরও। কিন্তু নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় তারা দুইয়ে। সমান ম্যাচে ১৭৫ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে নিউ জিল্যান্ড।
বাংলাদেশের পেছনে পড়ে খেলতে আসবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া (ষষ্ঠ), দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত (স্বাগতিক ও চতুর্থ), একবারের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানসহ (পঞ্চম) দক্ষিণ আফ্রিকার (অষ্টম) মতো দল। সরাসরি সুযোগ পাওয়া অপর দল হলো আফগানিস্তান (সপ্তম)। এদিকে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন উইন্ডিজ ও একবারের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে কোয়ালিফায়ার খেলে।
একসময় যেখানে আইসিসিরি পূর্ণ সদস্য দেশগুলো সরাসরি খেলার সুযোগ পেত। সেখানে তারা দাড়ি টেনে দেয় ২০১৯ সালে। একই আসরে তারা ১৪ দল থেকে কমিয়ে ১০ দলে নিয়ে আসে। যেখানে নিয়ম করে আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ের সেরা সাত দল ও স্বাগতিক দেশ সরাসরি খেলার সুযোগ লাভ করবে। বাকি দুই দেশকে সহেযোগী দেশের সঙ্গে কোয়ালিফায়ার খেলে তারপর যোগ্যতা অর্জন করতে হয়েছে। সেখানে কিন্তু জিম্বাবুয়ে ও আয়াল্যান্ড বাদ পড়ে যায়।
এবার আইসিসি আবার র্যাঙ্কিং পদ্ধতিতে বাদ দিয়ে সুপার লিগের আয়োজন করে আইসিসির পূর্ণ ১২ সদস্যের সঙ্গে আইসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসা নেদারল্যান্ডসকে নিয়ে। যেখানে নিয়ম ছিল প্রতিটি দেশ চারটি হোম ও চারটি অ্যাওয়ে সিরিজ খেলবে। ম্যাচের সংখ্যা হবে ২৪টি। কিন্তু ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান নানা কারণে ২৪টি করে ম্যাচ খেলতে পারেনি। ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ খেলে ২১টি করে। অস্ট্রেলিয়া ১৮টি ও আফগানিস্তান ১৫টি ম্যাচ খেলে।
২০২০ সালের ৩০ জুলাই সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড সিরিজ দিয়ে শুরু হয়েছিল এই আসর। আর শেষ হয় বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড সিরিজ দিয়ে চেমসফোর্ডে। মূল আসর শুরু হবে অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে।
তিনে থেকে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যাবে। এটি এক বড় অর্জন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে নেট রান রেটে ইংল্যান্ডকে ছাড়িয়ে যেতে পারলে উঠে আসত দুইয়ে। তখন সেটি হতো আরও বড় অর্জন। তারপরও তিনে থেকে খেলা অনেক বড় প্রাপ্তি। মনোবল থাকে চাঙা। আবার ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ এমনিতেই খেলে ভালো।
এমপি/এসজি