যেখানে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড দুই দলই অতিথি!
দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ মানেই এক পক্ষ অতিথি, আরেক পক্ষ আয়োজক। স্বাগতিক হিসেবে অতিথিদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা আয়োজকরাই দেখাশোনা করে থাকে। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের এবারের সিরিজে দুই পক্ষই অনেকটা অতিথির মতোই।
বাংলাদেশতো অতিথি ঠিক আছে। কিন্তু আয়ারল্যান্ডও অনেকটা অতিথির মতোই। কারণ তাদের ঘরে ম্যাচে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পেতে নির্বিঘ্নে ম্যাচ আয়োজনের লক্ষ্য থেকে খেলা নিয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডে। কিন্তু সেখানে গিয়েও নিস্তার নেই বৃষ্টির হাত থেকে। বৃষ্টির খেলা চলছেই।
এই বৃষ্টির কারণেই বাংলাদেশ আজ মঙ্গলবার (৯ মে) প্রথম ম্যাচ মাঠে নামার আগে ভালোভাবে অনুশীলন করতে পেরেছে শুধুমাত্র ম্যাচের আগের দিন সোমবার (৮ মে)। তার আগের দিন করতে পারেনি অনুশীলন। তারও আগে ৫ মে ভেস্তে গেছে একমাত্র অনুশীলন ম্যাচও। গত ১ মে ইংল্যান্ড গিয়েও বাংলাদেশ দল তাই নির্বিঘ্নে অনুশীলন করতে পারেনি। বলা যায় ইংল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাংলাদেশ দল আগে যাওয়ার সুবিধা কাজেই লাগাতে পারেনি।
আজ চেমসফোর্ডে প্রথম ওয়ানডে যদিও বৃষ্টিতে ভেসেও যায় করার কিছু থাকবে না। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে অবশ্য সে রকম সম্ভাবনাই আছে।
এতো গেল বৃষ্টি নিয়ে সমস্যা। প্রকৃতির এই সমস্যার উপর কারো নেই কোনো হাত। কিন্তু জাগতিক যে সব সমস্যা আছে, যা চাইলেই দূর করা সম্ভব, সে রকম অনেক সমস্যাও বাংলাদেশ দল এবার পড়েছে। এই সব সমস্যা আয়োজক হিসেবে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডই সমাধান করার কথা। কিন্তু তারাও যে পরবাসী! ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের(ইসিবি) সঙ্গে চুক্তি করেই তারা এই সিরিজ আয়োজন করতে যাচ্ছে। যে কারণে ইংল্যান্ডের অনেক নামি-দামী ক্রিকেট স্টেডিয়াম থাকার পরও ম্যাচ আয়োজনের ভেন্যু দেওয়া হয়েছে চেমসফোর্ড। যেখানে ১৯৯৯ সালের পর আর কোনো আর্ন্তজাতিক ম্যাচই অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৯৮৩ সালে প্রথম ম্যাচ হওয়ার পর আজকের ম্যাচের আগ পর্যন্ত খেলা হয়েছে মাত্র তিনটি। এই তিনটির মাঝে আবার বাংলাদেশও ম্যাচ খেলেছে একটি ১৯৯৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এটি কাউন্টি ক্রিকেটে অ্যাসেক্সের মাঠ।
প্রকৃতির উপর যেমন কারও হাত নেই, তেমনি ইসিবির সিদ্ধান্তের বাইরে আইরিশ ক্রিকেট বোর্ডেরও হয়ত করার কিছু নেই! ১ মে বাংলাদেশ চেমসফোর্ডে গিয়ে ঘাঁটি গাড়লেও খেলার ভেন্যুতে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে ম্যাচের আগের দিন। তার আগে তারা পরিদর্শনেরও জন্যও মাঠে যেতে পারেনি। কিন্তু শুধু মাঠ সমস্যাই নয়। বাংলাদেশ দল যে কয়দিন অনুশীলনের জন্য হোটেল থেকে বের হয়েছে, সেখানে হোটেল থেকে মাঠের দূরত্ব ছিল ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটারের মত। প্রায় ঘণ্টাখানেক করে সময় লেগে যেত যেতে-আসতে। অনুশীলন শেষে হোটেলে ফেরার পথে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বাসেই ঘুমিয়ে পড়তেন বলে দলের সঙ্গে থাকা বিসিবির পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন।
কোনো দেশ যখন সফরে যায়, তখন আয়োজকদের পক্ষ থেকে মাঠ ও হোটেলের দূরত্ব যাতে কম থাকে এই বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়ে থাকে। কিন্তু এবার তা ছিল উপেক্ষিত। আবার যে হোটেল বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা থেকেছেন, তা ছিল শহর থেকে বাইরে। ফলে খাবারের সমস্যাও পড়েছেন তামিমরা। কারণ বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা যেখানেই যান না কেন বিদেশি খাবারের সঙ্গে খুব একটা পরিচিত না থাকাতে এ জাতীয় খাবার তারা টানা খুব বেশি দিন খেতে পারেন না। ফলে তারা পছন্দের হোটেল খুঁজে বের করে থাকেন। কিন্তু সিটি সেন্টারের বাইরে হোটেল থাকাতে খেলোয়াড়রা এবার সেই সেই খোঁজখুঁজির কাজটি করতে পারেননি। সিটি সেন্টারের আশে-পাশে হোটেল থাকলে খেলোয়াড়রা দলবেঁধে খেতে যেতেন। পছন্দের হোটেল খুঁজে বের করতেন। এবার তাদের খেতে যেতে হচ্ছে গাড়িতে করে। ফলে খাবার সমস্যাও ভুগছেন ক্রিকেটাররা।
এ রকম সমস্যা মোকাবিলা করে বাংলাদেশ দল আজ প্রথম ওয়ানডে খেলতে মাঠে নামবে।
এমপি/আরএ/