প্রাইম ব্যাংককে হারিয়ে শিরোপার লড়াইয়ে শেখ জামাল
প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের শিরোপা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও আবাহনী লিমিটেডের মাঝে। সুপার লিগের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে বিকেএসপিতে আবাহনীর খেলা শেষ হয়ে যায় অনেক আগেই।
যেখানে তারা ১০ ওভার ও ৪ উইকেট হাতে রেখেই জয় পায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে। কিন্তু তখনও শেষ হয়নি মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ও প্রাইম ব্যাংকের খেলাটি। জয়ের সম্ভাবনা দুই দলেরই সমান সমান।
শিরোপা লড়াইয়ে টিতে থাকতে হলে শেখ জামালের জয়ের বিকল্প নেই। হেরে গেলে আবাহনীর শিরোপা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত শেখ জামাল ১৩ রানে ম্যাচ জিতে শিরোপা লড়েইয়ে নিজেদের শামিল রাখে। ১৪ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২৪। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান দুইয়ে। সমান ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে আবাহনী।
শেখ জামালের ৬ উইকেটে করা ২৭৬ রানের জবাব দিত নেমে প্রাইম ব্যাংকের রান ছিল এক পর্যায়ে ৫ উইকেটে ৪০ ওভারে ১৯১। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ১০ ওভারে তাদের করতে হবে ৮৬ রান। ১০ রানে জাকির হাসান (৪) ও অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনের (০) উইকেটে হারানোর পর শাহাদাত হোসেন দিপু ও প্রান্তিক নওরোজ নাবিল তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৩৬ রান যোগ করে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান। ১ রানের ব্যবধানে দুই জনেই আউট হয়ে গেলে প্রাইম ব্যাংক সেই সুবিধা হারায়।
প্রথমে আউট হন শাহদাত ৭৯ বল খেলে ১ ছক্কা ও ৪ চারে ৬৬ রান করে সাইফের বলে শফিকুল ইসলামের হাতে ধার পড়ে। নাবিলকেও আউট করেন সাইফ। উইকেটের পেছনে তার ক্যাচ ধরেন নুরুল হাসান সোহান। ৯০ বলে ১ ছক্কা ও ৭ চারে ৭৫ রান করেন তিনি। নাবিলের আউট ছিল স্পোর্টস ম্যান স্পিরিট।
শেখ জামালের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি। আউট না দেওয়াতে বোলার সাইফ মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন। কিন্তু ব্যাট বল লেগে যে উইকেটের পেছনে নুরুল হাসানের হাতে জমা পড়েছে তা ঠিকই ঠের পেয়েছিলেন নাবিল। তাইতো তিনি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করে নিজেই ক্রিজ ছেড়ে বের হয়ে আসেন। তার এ রকম মানসিকতার জন্য প্রাইম ব্যাংকের খেলোয়াড়রা তাকে গিয়ে অভিবাদন জানান।
দুই সেট ব্যাটসম্যান এক রানের ব্যবধান ফিরে যাওয়ার পর প্রাইম ব্যাংকের চাপ আরও ঘনীভূত হয় নাসিরও দ্রুত ফিরে গেলে। তিনি করেন ৮ রান। এই অবস্থায় আল আমিন ও কাপালি হাল ধরে দলকে আবার খেলায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে করেন। কিন্তু এ সময় আঘাত হানেন শফিকুল। তিনি টানা তিন উইকেট তুলে নেন। যেখানে ছিল আল আমিন ও অলক কাপালির উইকেট ছাড়াও কাসিফ ভাট্টির উইকেট।
আল আমিন ও কাপালির জুটতে ২৬ রান আসার পর কাপালি একটি করে চার ও ছক্কা মেরে ১৮ রান করে আউট হন। আল আমিন আউট হন ৪১ বলে এক ছক্কা ও তিন চারে ৩৬ রান করে। দুই জনই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নুরুল হাসান সোহানের হাতে। এই দুই জনের মাঝে আউট হন কাসিফ ভাট্টি ১০ রান করে। তার ক্যাচ ধরেন পারভেজ রাসুল। এরপর প্রাইম ব্যাংকের হার এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়। শফিকুল ৪৪ রানে নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন পারভেজ রাসুল ও সাইফ হাসান।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শেখ জামাল ওপেনার সাইফ হাসানের ৮৩, অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের ৫৩ রানের সঙ্গে ফজল মাহমুদ রাব্বির ৩৬, তাইবুর রহমানের ৩০, সৈকত আলীর ২৯ ও জিয়াউর রহমানের অপরাজিত ২৭ রানে ভর করে ৬ উইকেটে ২৭৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল। সাইফের ১০২ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি ছক্কা ও ৩টি চার। নুরুল হাসান সোহান ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৪৫ বলে করেন ৫৩ রান। কাসিফ ভাট্টি ২৩ রানে নেন ৩ উইকেট। ম্যাচ সেরা হন সাইফ হাসান।
এমপি/এমএমএ/