আবারও মোহামেডানকে হারিয়ে শীর্ষে আবাহনী
মিরপুরের উইকেটে ২৫৮ রান খুব বড় পূঁজি নয়। কিন্তু সেই রান তাড়া করতে নেমে যদি ১২ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে, তখন তা অতিক্রম করা কঠিনেই হয়ে উঠে। তারপরও শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে লড়াই করে দলের রানকে ২৫০ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছিল। আর এ কারণেই দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী-মোহামেডানের ম্যাচটি এক পেশে হয়নি।
কিছুটা উত্তেজনার পরশ ছড়িয়ে তবেই শেষ হয়েছে লড়াই। যে লড়াইয়ে ৮ রানে জয়ী হয়েছে আবাহনী। এই জয়ে আবাহনী ১২ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে। ১৩ পয়েন্ট পাঁচে থেকে লিগ শুরু করা মোহামেডানের পয়েন্ট ১৩ ই থাকল। প্রথম পর্বে টাান ৬ ম্যাচ জেতার পর মোহামেডান প্রথম হারল। ব্যাট হাতে ৬৩ রানের পাশাপাশি বল হাতে ৫১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন। লিগের প্রথম পর্বেও আবাহনীর কাছে হেরেছিল মোহামেডান
দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই জমিয়ে তুলেছিলেন মোহামেডানের উইকেটকিপার মাইদুল ইসলাম অঙ্কন। তার সঙ্গে তাল মিলিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। দুই জনের ব্যাট ভরে করে মোহামেডান ১২ রানে ৩ উইকেট হারানোর শোক ভুলে জেতার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।
২৫৮ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই অধিনায়ক ও ইনফর্ম ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস (১), সৌম্য সরকার ( ৮) ও লঙ্কান কামিন্দু মেন্ডিসের (১) উইকেট হারিয়েছিল। এ সময় মোহামেডানের বড় হারের শঙ্কায়ই ছিল। কিন্তু মাইদুল ইসলাম অঙ্কান চতুর্থ উইকেট জুটিতে আরিফ ইসলামকে (৩০) নিয়ে ৭৩ ও পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে (৫৪) নিয়ে ৮৭ রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান।
৮২ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে অঙ্কান ছুটে চলেন সেঞ্চুরির দিকে। তার এক একটি রান যেমন তাকে সেঞ্চুরির দিকে নিয়ে যাচ্ছিল, তেমনি দলের জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলছিল। কিন্তু সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে ১১৩ বলে ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ৮৮ রান করে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বলে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ধরা পড়ে বিাদয় নেওয়ার সময় দলের রান ছিল ৪১.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭২। জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৮৭ রানের। বল বাকি ৫১টি। তিনি আউট হওয়ান সময় মাহমুদউল্রাহর রান ছিল ৩৭।
কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ ৫৯ বলে পরপর ২ বাউন্ডারিতে হাফ সেঞ্চুরি করার পর আর বেশি দূর যেতে পারেননি। ৬৩ বলে ৫ চারে ৫৪ রান করে ষষ্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি আউট হয়ে যান সেই মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বলেই বোল্ড হয়ে। কিন্তু তিনি আউট হওয়ার পরও আরিফুল হক ১৪ বলে ৩ ছক্কায় ২৬ ও শুভাগত হোম ১৯ বলে ২১ রান করলে মোহামেডানের জয়ের ব্যবধান কমে আসে।
শেষ ৫ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ৪৫ রানের। ৪৬ নম্বার ওভারের প্রথম বলেই মোসাদ্দেককে ছক্কা মারার পরের বলেই আরিফুল আউট হয়ে গেলে আবার চাপে পড়ে যায় মোহামেডান। কিন্তু শুভাগত থাকাতে আবার লড়াই চালিয়ে যায। শেষ ২ ওভার তা নেমে আসে ২৪ রান। এ সময় উইকেটে শুভাগত ১৬ ও মুশফিক হাসান ০ রানে ব্যাট করছিলেন। কিন্তু ৪৯ নম্বার ওভারে মাত্র ৪ রান আসলে শেষ ওভারে গিয়ে প্রয়োজন পড়ে ২০ রানের। কিন্তু রান আসে ১১। ফলে মোহামেডান হেরে যায় ৮ রানে। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৫১ রানে ৪টি ও তানজিম হাসান সাকিব ৪৮ রানে নেন ৩ উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আবাহনী জাকের আলী অনীকের ৬৩ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ৬৩ রানের ইনিংসের সঙ্গে আফিফ হোসেন ধ্রুবর ৩৬ রানে ভর করে ৭ উইকেটে ২৫৮ রান করে।
এদিন আবাহনীর দুই ইনফর্ম ব্যাটসম্যান ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয় রান করতে পারেননি। দুই জনই আউট হয়ে যান শুরুতে। নাঈম ২ ও এনামুল হক ১১ রান করে আউট হন। মুশফিক হাসান ৩২ ও শুভাগত হোম ৪৭ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
এমপি/এমএমএ/