জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ
প্রথম ইনিংসে সাকিব আল হাসান অনেক পরে বোলিং শুরু করায় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে সাকিব আর সেই সমালোচনা করার সুযোগ দেননি। আক্রমণের সূচনাই করেন তিনি। প্রথম ওভারেই পেয়ে যান সাফল্য। তার সঙ্গে তাল মেলান তাইজুল ইসলাম। ব্যস দুই প্রান্ত থেকে দুইজনের আঘাতে আয়ারল্যান্ডের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। আগামীকাল (৫ এপ্রিল) তৃতীয় দিনই খেলা শেষ হওয়ার অবস্থা।
১৫৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৭। ইনিংস হার এড়াতে হলে এখনো তাদের করতে হবে ১২৮ রান। পিটার মুর ১০ ও হ্যারি টেক্টর ৮ রানে ব্যাট করছেন। প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনও উইকেট পড়েছে ১২টি। বাংলাদেশের ৮টি, আয়ারল্যান্ডের ৪টি।
মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরুতে ছিল বাংলাদেশ চাপে। সেখানে দিন শেষ করেছে জয়ের সুবাস নিয়ে। চিত্রনাট্য পরিবর্তনের এমন রূপকার ছিলেন ব্যাট হাতে মুশফিকুর রহিমের ১২৬, সাকিবের ৮৭, মিরাজের ৫৫, লিটনের ৪৩ রানের সঙ্গে শেষ বিকালে বল হাতে সাকিব ও তাইজুলের ঘূর্ণি। দুইজনই ২টি করে উইকেট ভাগাভাগি করে নেন।
বাংলাদেশকে অলআউট করাটাই যেন আয়ারল্যান্ডের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। চা বিরতির ঘণ্টাখানিকের মাঝে বাংলাদেশকে অলআউট করে নিজেরা ব্যাট করতে নেমে অকূল সাগরে হাবুডুবু খেতে থাকে।
মিরপুরের পিচ তাদের কাছে হয়ে উঠে উত্তাল সাগর। যেখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার কোনো উপায় ছিল না। মাথা তুলতে গেলেই সাগরে ঢেউ যেমন এসে আছড়ে পড়ে, তেমনি আয়ারল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা ক্রিজে দাড়ানোর চেষ্টা করলে বাংলাদেশের স্পিনাররা আঘাত হেনেছে। এই আঘাত হানার কাজটি করেছেন শুধুই সাকিব আর তাইজুল।
পেসবান্ধব উইকেট দেখে খেলতে নেমে সেখানে দুই দলই ভ্যাবাচেকা খায় উইকেটের রূপ বদল হওয়া দেখে। প্রথম দিন স্পিনাররা ফায়দা পেয়েছিলেন বেশি। ১২ উইকেটের ৮টিই নিয়েছিলেন দুই দলের স্পিনাররা। আজ দ্বিতীয় দিন স্পিনারদের প্রাধান্য ছিল আরও বেশি। বাংলাদেশের ইনিংসের ১০টির ৮টিই যায় স্পিনারদের পকেটে। ৬টি নেন ম্যাকব্রিন, ২টি বেন হোয়াইট। শেষ ৫টিই ছিল স্পিনারদের।
স্পিনারদের এমন দাপট দেখে আয়ারল্যান্ডের ইনিংসের শুরুতে বাংলাদেশ দলও স্পিন আক্রমণ শুরু করে। এবার অধিনায়ক সাকিব নিজেই বল হাতে তুলে নেন। প্রথম ইনিংসে তিনি ৬৫তম ওভারে প্রথম বল হাতে তুলে নিয়ে বোলিং করেছিলেন মাত্র ৩ ওভার। এবার আর কাউকে সেরকম কোনো সুযোগ না দিয়ে নিজেই আক্রমণ শুরু করেন। আর এতেই ছটফট শুরু করেন আইরিশরা। প্রথম ওভারে তিনি ফিরিয়ে দেন জেমস ম্যাকালামকে এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে ফেলে। কোনো রান করতে পারেননি তিনি। এরপর তাইজুল পরপর দুই ওভারে আউট করেন মারি কামিন্স (১) ও অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নিকে (৩)। কামিন্সকে এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে ফেলে এবং বালবার্নিকে বোল্ড করে। এরপর সাকিবও আঘাত হানেন কার্টিস ক্যাম্ফারাকে (১) উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। নিজেকে বাঁচাতে রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার। দলের রান তখন ৪ উইকেটে ১৩।
এসময় বল যেভাবে উইকেটে ঘুরছে তাতে করে আইরিশদের আরও উইকেট পড়ার শঙ্কা ছিল। কিন্তু সেই শঙ্কা দূর করে পরে আর কোনো উইকেট পড়তে দেননি হ্যারি টেক্টর ৮ ও পিটার মুরে ১০ রানে অপরাজিত থেকে। দুইজনে ১০.৩ ওভার খেলে পার করে দেন। রান যোগ করেন ১৪।
অধিনায়ক সাকিব ১৭ ওভারের মাঝে তিনিসহ স্পিনাররাই করেন ১৬ ওভার। সাকিব ৭ ওভারে ১১ ও তাইজুল ১১ ওভারে ৭ রান দিয়ে নেন ২টি করে উইকেট। মিরাজ ২ ওভার বোলিং করে কোনো রান দেননি। এ ছাড়া পেসার এবাদত করেন ১ ওভার। রান দেন ৪।
এমপি/এসজি