নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মানেই অস্ট্রেলিয়ার শিরোপা
মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেন অলিখিত চুক্তি হয়েছে যে এই আসর মানেই অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল খেলা আর শিরোপা জেতা। এবার নিয়ে সপ্তম আসর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এই আসরেরর ফাইনাল। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে ফাইনাল। যেখানে অজিদের প্রতিপক্ষ স্বাগিতিক দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকা যেখানে প্রথমবার ফাইনাল খেলছে, সেখানে অজিদের ষষ্ঠ ফাইনাল এবং এই টানা। শুধুমাত্র ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম আসরে তারা ফাইনাল খেলতে পারেনি। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে মাত্র ৮৪ রানে অলআউট করে ইংল্যান্ড সেই রান অতিক্রম করেছিল ১৭ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে।
প্রথম আসর পর পরবর্তী সবগুলো ফাইনালের এক পাশ অস্ট্রেলিয়া নিজেদের অলিখিত সম্পত্তি বানিয়ে ফেলে। অপরপ্রান্তে প্রতিপক্ষ পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু নিজেদের প্রান্তে কোনো পরিবর্তন আনতে দেয়নি।
প্রথম আসরের পর গত পাঁচ আসরে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ পরিবর্তন হয়েছে তিনবার। ইংল্যান্ড খেলেছে তিনবার ফাইনাল। অপর দুইবার ফাইনাল খেলেছে উইন্ডিজ ও ভারত।
ফাইোলে যেমন দুই প্রতিপক্ষের এক পক্ষ অজিরা নিজেদের করে নিয়েছিল, তেমনি শিরোপাও। ফাইনালে উঠা প্রতিপক্ষের মাঝে এখানে একমাত্র উইন্ডিজই তাদের হারিয়ে শিরোপা জিততে পেরেছিল। ২০১৬ সালে ভারতের কলকাতায় অনুষ্ঠিত আসরের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার করা ৫ উইকেটে ১৪৮ রান উইন্ডিজ অতিক্রম করেছিল ১৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে। ব্যাস ওই পর্যন্তই।
প্রথম আসরের ফাইনালে উঠতে না পারা অজিরা প্রথম ফাইনাল খেলে পরের আসরেই। ২০১০সালে উইন্ডিজের ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত ফাইনালে তারা টানটান উত্তেজনার ফাইনালে ৩ রানে হারায় নিউজিল্যান্ডকে। আগে ব্যাট করে অজিরা করেছিল ৮ উইেকেটে মাত্র ১০৬ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে কিউইরা যেতে পেরেছিল ৬ উইকেটে ১০৩ রান পর্যন্ত। পরপর দুইটি আসরে উঠেও নিউজিল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। এরপর তারা আর ফাইনাল খেলতে পারেনি।
২০১২ সালে তৃতীয় আসর বসেছিল শ্রীলঙ্কাতে। কলম্বোতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিল ইংল্যান্ডকে। এবারও অস্ট্রেলিয়া প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়েছিল। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর জয়ী হয়েছিল মাত্র ৪ রানে। আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৪২ রান করে। সেই রানের পেছনে তার তাড়া করে ইংলিশরা করেছিল ৯ উইকেটে ১৩৮ রান।
২০১৪ সালে স্বাগতিক হয়েছিল বাংলাদেশ। ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকার মিরপুরে। প্রতিপক্ষ সেই ইংল্যান্ডই। এবার আরা তারা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। হার মানে ৬ উইকেটে। আগে ব্যাট করে ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে ১০৫ রান করেছিল। অস্ট্রেলিয়া লক্ষ্যে পৌঁছেছিল মাত্র ১৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে।
২০১৬ সালে ভারতের কলকাতায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে উইন্ডজের কাছে ৮ উইকেটে হারের পর অস্ট্রেলিয়া ২০১৮ সালে উইন্ডিজের অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে অজিদের প্রতিপক্ষ ছিল তৃতীয়বারের মত ইংল্যান্ড। এবারও ফাইনালে ইংল্যান্ড বিনা প্রতিরোধে হার মানে ৮ উইকেটে। ইংল্যান্ডকে মাত্র ১০৫ রানে অলআউট করে অস্ট্রেলিয়া রান পাড়ি দেয় ১৫.১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে।
২০২০ সালে নিজেদের মাঠে আসর বসে অজিদের। মেলবোর্নের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ পবির্তন হয়। ভারত প্রথমবারের মতো খেলে ফাইনাল। কিন্তু সেখানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ভারতকে ধরাশায়ী করে ৮৫ রানের বিশাল ব্যবধানে। অস্ট্রেলিয়ার করা ৪ উইকেটে ১৮৪ রানের জবাব দিতে নেমে ভারত শতরানও করতে পারেনি। ১৯.১ ওভারে ৯৯ রান করে তারা অলআউট হয়ে যায়।
এবার দেখার বিষয় অস্ট্রেলিয়ার সেই চলার পথে কাঁটা বিছাতে পারে কি না স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা!
এমপি/এমএমএ/